হাবিপ্রবিতে সুযোগ পেলেও বড় ভাইয়ের ইচ্ছায় ইবিতে ভর্তি হন ফুলপরী

ভুক্তভোগী ছাত্রী ফুলপরী খাতুন
ভুক্তভোগী ছাত্রী ফুলপরী খাতুন  © সংগৃহীত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগী ছাত্রী ফুলপরী খাতুন হাজী দানেশ এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তার বড় ভাই হযরত আলীর পরামর্শে ইবিতে ভর্তি হয়ন। পরে ভর্তির ১০ দিনের মাথায় নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে ক্যাম্পাস ছাড়েন তিনি।

ফুলপরী মাধ্যমিকে পড়ার সময় মেধাক্রমে সব সময় এক বা দুইয়ের মধ্যে থেকেছেন। এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। তার ভর্তি পরীক্ষায় হাজী দানেশ এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু পরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ হওয়ায় বড় ভাইয়ের ইচ্ছায় সেখানে ভর্তি হন।

ফুলপরীর বড় ভাই হযরত আলী গত বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর করেছেন। এখনো চাকরি পাননি, তাই বাড়িতেই থাকেন। বড় বোন হোসনেয়ারা খাতুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতিতে পড়ছেন। থাকেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে। ছোট ভাই ওমর আলী স্থানীয় শিবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে।

আরও পড়ুন: প্রশাসনের ডাকে ক্যাম্পাসে আসছেন অভিযুক্তরা, থাকবেন ভুক্তভোগীও

পড়াশোনার জীবনের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ফুলপরীর বড় ভাই হযরত আলী। তিনি বলেন, ভ্যানচালক বাবা ঈদে সবাইকে নতুন জামা কিনে দিতে পারেননি। তাতে কষ্ট হতো, কিন্তু ছোট ভাইবোনদের নিয়ে সততার সঙ্গে জীবন গড়বেন, এমন লক্ষ্য নিয়েই এগিয়েছেন।

গত রবিবার রাতে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ডেকে রাত ১১টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত নবীন ফুলপরীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেন শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরার ও তার সহযোগীরা। নির্যাতনের পরের দিন ভয়ে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যান ভুক্তভোগী ফুলপরী।

এদিকে, এ ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগী তাবাসসুমের বক্তব্য শুনতে ক্যাম্পাসে ডেকেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ঘটনার তদন্তে অভিযুক্তদের বক্তব্য শুনবে তদন্ত কমিটি। এ জন্য ওই অভিযুক্তকে ক্যাম্পাসে ডাকা হয়। অভিযুক্তদের সঙ্গে থাকবেন ভুক্তভোগী ছাত্রী ফুলপরী খাতুনও। সোমবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাবেন তারা।


সর্বশেষ সংবাদ