বিসিএসের প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের খোঁজ যেভাবে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৪, ১১:২১ AM , আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৪, ১১:৩১ AM
বিসিএসসহ ৩০টি সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে সরকারী কর্মকমিশন-পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এদের মধ্যে পিএসসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও আছেন। আর এ কাজ করে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন প্রত্যেকেই।
প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের খোঁজ যেভাবে
৫ জুলাই শুক্রবার রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলীর নিয়োগ পরীক্ষায় নজরদারি বাড়ায় সিআইডি। চক্রটির অন্যতম সদস্য পিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিনি জিজ্ঞাসাবাদে জানান, পিএসসির উপপরিচালক মো. আবু জাফরের মাধ্যমে ২ কোটি টাকার বিনিময়ে শুক্রবার ওই প্রশ্নপত্র ফাঁসের চুক্তি করেন তাঁরা। চুক্তি অনুযায়ী প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন। হোয়াটসঅ্যাপে তাঁরা প্রশ্ন দেন। গত ৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও ফাঁস করেন তাঁরা। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেন। তাঁর এই তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান শুরু করে সিআইডি।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা বলেন, ১৭ জনের মধ্যে ৬ জনই পিএসসির কর্মকর্তা-কর্মচারী। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের আলামত, ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন পিএসসির উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান ও অফিস সহায়ক (ডিসপাস) সাজেদুল ইসলাম।
এছাড়াও রয়েছেন সাবেক সেনাসদস্য নোমান সিদ্দিকী, ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের রাজনীতি করা এবং বর্তমানে মিরপুরের ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন ও সায়েম হোসেন ও বেকার যুবক লিটন সরকার।
পিএসএসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন গণমাধ্যমকে বলেন, পিএসসিকে বিতর্কিত করা হলে চাকরিপ্রার্থীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই সবার উচিত পিএসসিকে বিতর্কিত না করা।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ অস্বীকার পিএসসির
এদিকে পিএসসি প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। গতকাল রাতে পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত রেলওয়ের নন-ক্যাডার ‘উপসহকারী প্রকৌশলী’ পদের নিয়োগ পরীক্ষাসহ গত ১২ বছরে বিসিএস এবং অন্যান্য নন-ক্যাডার পরীক্ষা সম্পর্কে কোনো মহল থেকেই কখনো কোনো অভিযোগ ওঠেনি। এতেই প্রমাণিত, ওই সব পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। কাজেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে নতুন করে অভিযোগ তোলার কোনো সুযোগ নেই।
পিএসসির পরীক্ষা গ্রহণের পদ্ধতির বর্ণনা দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যথাসময়ে অভিযোগ না হওয়া সত্ত্বেও ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস বা প্রতারণা কিংবা অন্য কোনো অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত প্রমাণ হলে কমিশন জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।