এটিইও নিয়োগের সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, প্রাথমিকের সব শিক্ষকদের আবেদনের সুযোগ

  © প্রতীকী ছবি

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে ১৫৯ জন সহকারী উপজেলা/থানা শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিইও) পদের সংশোধিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে সরকারী কর্ম কমিশন (পিএসসি)। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) পিএসসির ওয়েবসাইটে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

সংশোধিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়া নতুন শিক্ষকসহ যোকোনো শিক্ষক এটিও পদে আবেদন করতে পারবেন। তবে প্রার্থীকে স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হবে এবং বয়স ৪৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। আগামী ১ জুলাই থেকে অনলাইনে আবেদন শুরু হয়ে চলবে ২৫ জুলাই পর্যন্ত।

সংশোধিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখুন এখানে

সূত্র জানায়, এটিইও পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি ২০২৩ সালের ২৬ জুন প্রকাশ করে পিএসসি। বিজ্ঞপ্তিতে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষক (অনূর্ধ্ব ৪৫ বছর) এটিইও পদে আবেদন করতে পারবেন বলে জানানো হয়। তবে বিজ্ঞপ্তির নিচে আবেদন নির্দেশিকায় বলা হয়- ‘এ পদে আবেদনের জন্য প্রাথমিকের শিক্ষকের কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে’।

পরবর্তীতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিল, নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরাও এটিইও পদে আবেদন করতে পারবেন। গত বছরের ১৭ জুলাই মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে পিএসসিকে চিঠি পাঠানো হয়।  মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আব্দুল মালেক ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেন।

বিজ্ঞপ্তির নির্দেশাবলী দেখুন এখানে

পিএসসিতে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছিল, ‘প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেটেড অফিসার ও নন-গেজেটেড কর্মচারীদের নিয়োগ বিধিমালা ১৯৮৫ (সংশোধিত ১৯৯৪), বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের ২০১৫ ও ২০১৮ সালের একই পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সরকারি চাকরি নিয়োগের শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ (বিশেষ বিধান) বিধিমালা, ২০০৩ যাচাই করে পিএসসির প্রকাশিত এটিইও পদে নিয়োগ যোগ্যতার শর্ত সংক্রান্ত জটিলতা অবসান ও বিজ্ঞপ্তি সংশোধনের প্রয়োজন হলে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠির প্রেক্ষিতে, আবেদন নির্দেশিকা থেকে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকার বাধ্যবাধকতা তুলে দেয় পিএসসি। ফলে বিভাগীয় কোটায় পূরণযোগ্য ১৫৯ পদে এটিইও নিয়োগে গত বছরের ১ জুলাই থেকে অনলাইনে যে আবেদন শুরু হয়েছিল তাতে নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরাও আবেদন করার সুযোগ পেয়েছিল। তখন ওই বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত এ পদে আবেদন প্রক্রিয়া চলার কথা ছিল।

কিন্তু আবেদন চলাকালে ২৪ জুলাই আবারও নিয়মে পরিবর্তন আনে পিএসসি। আবেদনের শর্তে কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতার ঘর যুক্ত করা হয়। এতে ফের জটিলতায় পড়েন নতুন শিক্ষকরা। শেষ পর্যন্ত এটিও পদে আবেদন প্রক্রিয়া স্থগিত করে পিএসসি। তবে উচ্চপর্যায়ের মতামতের প্রেক্ষিতে সেই জটিলতা কাটলেও নতুন করে দুটি মামলা হওয়ায় ফের জটিলতা তৈরি হয়েছিল। তখন মামলা দুটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আবেদনগ্রহণ শুরু হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, গত ৫ জুন সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে আলাপকালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ জানিয়ছিলেন, প্রাথমিকের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার (এটিইও) নিয়োগের একটি মামলার স্থিতাবস্থা আছে। এই অবস্থা থেকে মামলার বিষয়ে আদালতের স্থগিতাদেশ কিংবা নিষ্পত্তির আদেশ পেলে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা যাবে।

তিনি আরও বলেছিলেন, এটিও নিয়োগ নিয়ে চারটি মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশনা পাওয়া গেছে। একটি মামলায় স্ট্যাটাসকো (স্থিতাবস্থা) রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি, দ্রুত এই মামলার বিষয়ে আদালদের নির্দেশনা নিয়ে আসার। নির্দেশনা পেলে দ্রুত নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা যাবে।

জানা গেছে, এটিইও নিয়োগের ক্ষেত্রে দুই বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়া নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল। এ বিষয়ে আদালতে রিট করা হয়। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী দুই বছরের অভিজ্ঞতার ঘর তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সভাও করে সাংবিধানিক সংস্থাটি।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়া নতুন শিক্ষকরা এটিও পদে আবেদন করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে এক দফা জটিলতার নিরসন হলেও পরবর্তীতে ফের জটিলতা তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এ বিষয়ে উচ্চপর্যায় থেকে মতামত পাওয়ায় এটিও পদে নিয়োগ নিয়ে আলোচনা করতে সভা ডাকা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ