অতিরিক্ত মদ পান করানোর পর ধর্ষণেই মৃত্যু হয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর

ছাত্রীর মৃত্যুর জন্য ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে
ছাত্রীর মৃত্যুর জন্য ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে   © ফাইল ছবি

গত বছরের ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা যান ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) এর ছাত্রী ফারাহ মাধুরী। অভিযোগপত্রে বলা হচ্ছে, অতিরিক্ত মদ পান করানোর কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। এরপর ধর্ষণ করা হয়। অতিরিক্ত মদপান ও ধর্ষণের কারণে মারা যায় ওই ছাত্রী।

ওই ছাত্রীর মৃত্যুর জন্য ছয়জনকে অভিযুক্ত করে সম্প্রতি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ। আসামিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, ধর্ষণে সহায়তা ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

অভিযোগপত্রভুক্ত ছয় আসামি হলেন মর্তুজা রায়হান চৌধুরী, নুহাত আলম তাফসীর, ফারজানা জামান ওরফে নেহা, শাফায়েত জামিল, রিয়াজ উদ্দিন ও নুরুল আমিন। এদের মধ্যে রিয়াজ ও নুরুল কারাগারে আছেন। বাকিরা জামিনে।

গত বছরের ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে ফারাহ মাধুরী মারা যান। এ ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ মর্তুজাসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করে।

অভিযোগপত্রের তথ্য বলছে, ভুক্তভোগী ছাত্রী, মামলার প্রধান আসামি মর্তুজা রায়হান চৌধুরী ও নুহাত আলম তাফসীর সহপাঠী ছিলেন। এছাড়া আরাফাত (ক্ষতিকর মদ পানে মারা যান) ও ভুক্তভোগী ছাত্রী ইংলিশ মিডিয়ামে একসময় সহপাঠী ছিলেন। নিহত ছাত্রী ও আসামিরা একে অপরের পরিচিত ছিলেন এবং একসঙ্গে চলাফেরা করতেন। গত বছরের ২৮ জানুয়ারি ভুক্তভোগী ছাত্রী ও মর্তুজা মিরপুর থেকে স্কুটারে করে মুঠোফোনের চার্জার কেনার জন্য প্রথমে মোতালেব প্লাজায় আসেন। পরে স্কুটারটি আরাফাতের বাসায় রাখা হয়।

পরে তাঁরা উবারের গাড়িতে করে উত্তরার একটি রেস্তোরাঁয় আসেন। আগে থেকে ওই রেস্টুরেন্টে অবস্থান করেন আসামি ফারজানা জামান ও শাফায়েত জামিল। আরাফাতের নির্দেশনা অনুযায়ী, রিয়াজ ও নুরুল আমিন মদ সরবরাহ করেন।

রেস্টুরেন্টে খাবার খাওয়ার পর মর্তুজা, ফারজানা জামান, শাফায়েত, রিয়াজ ও নিহত শিক্ষার্থী একের পর এক মদ পান করতে থাকেন। অতিরিক্ত মদ পানের কারণে ভুক্তভোগী ছাত্রী অস্বস্তি বোধ করেন। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১২টায় ভুক্তভোগী ছাত্রী মোহাম্মদপুরে নুহাত আলমের বাসায় আসেন। পরে ওই ছাত্রী ও মর্তুজা একটি কক্ষে অবস্থান করেন। তখন মর্তুজা ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। ওই ছাত্রী একাধিকবার বমি করেন। পরে আরও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ভুক্তভোগী ছাত্রীকে অতিরিক্ত মদ পান করানোয় তিনি মারা যান। আসামি নুহাত আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আসামি মর্তুজা ও ভুক্তভোগী ছাত্রীকে বিবাহবহির্ভূত অনৈতিক সম্পর্কের সুযোগ করে দেন। এছাড়া ফারজানা জামান ও শাফায়েত জামিলের বিরুদ্ধে ক্ষতিকর অতিরিক্ত মদ পান করানোর অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়। সেদিন ক্ষতিকর ওই মদ সরবরাহ করেছিলেন আসামি রিয়াজ উদ্দিন ও নুরুল আমিন।


সর্বশেষ সংবাদ