ইউজিসির ৪৬তম বার্ষিক প্রতিবেদন

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা কমেছে

শিক্ষার্থী
শিক্ষার্থী  © ফাইল ফটো

দেশে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। বিষয়টিকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। শিক্ষার গুনগত মান বৃদ্ধি করতে না পারলে এই সংখ্যা আরও কমার আশঙ্কা করেছেন তারা। এর ফলে বিদেশে গিয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের হার বৃদ্ধি পাবে বলে অভিমত তাদের।

ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা ১০৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯ সালে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩ লাখ ৪৯ হাজার ১৬০ জন। যা ২০১৮ সালের তুলনায় ৩.৪৯ শতাংশ কম। ২০১৮ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৬১ হাজার ৭৯২ জন। অথচ সেই বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ১০৩টি। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়লেও শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা কমেছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গেুলোতে শিক্ষার্থী সংখ্যা কমার বিষয়টিকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন ইউজিসি সদস্য (বেসরকারি) বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী সংখ্যা হ্রাস পাওয়া মানে বিদেশে গিয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের হার বৃদ্ধি পাওয়া। বিষয়টি আমাদের জন্য নেতিবাচক।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমাদের যে ১০৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, এর বেশিরভাগেরই শিক্ষার গুনগত মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ফলে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী ধরে রাখতে পারে না। তবে আমাদের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু ভালো করছে। তাদের শিক্ষার্থী পেতে তেমন একটা অসুবিধা হয় না। আমরা যত্রতত্র বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে শুধু সংখ্যা বাড়ানোর বিপক্ষে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন শিক্ষার গুণগত মান বজায় রেখে পাঠদান করে সেজন্য আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবো।

ইউজিসির ৪৬তম বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ক্রমাগতভাবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ২০১৬ সালে হঠাৎ করেই শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পায়। ২০১৭ সালে আবারও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। যা ২০১৮ সালেও তা অব্যাহত ছিল। তবে ২০১৯ সালে এসে সেটি আবারও কমে যায়।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শিক্ষার্থী সংখ্যায় সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে বান্দরবন বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ৭৮ জন। এর পরের অবস্থানে রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটি। এখানে শিক্ষার্থী রয়েছে ১২২ জন। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে টাইমস ইউনিভার্সিটি। বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭০ জন। আর চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সান্সে এন্ড টেকনোলজি। এখানে শিক্ষার্থী রয়েছে ২৪২ জন।

প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শিক্ষার্থী সংখ্যায় সবচেয়ে এগিয়ে ছিল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২০ হাজার ৫৯৬ জন। এর পরের অবস্থানে রয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২০ হাজার ৩৮ জন। শিক্ষার্থী সংখ্যায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৩ হাজার ১৫০ জন। চতুর্থ স্থানে রয়েছে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের শিক্ষার্থী সংখ্যা ১২ হাজার ৪৭২ জন।


সর্বশেষ সংবাদ