শিক্ষার্থী সংখ্যায় শীর্ষ ১০ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

  © টিডিসি ফটো

বর্তমানে দেশে অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ১০৫টি। এর মধ্যে ৯০টির বেশি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন রয়েছে। বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা এসব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী সংখ্যা সাড়ে তিন লাখের বেশি। মোট শিক্ষার্থীর এক তৃতীয়াংশই পড়ছে শিক্ষার্থী সংখ্যায় এগিয়ে থাকা ১০ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। 

জানা যায়, ২০১৮ সালে দেশে উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে ৯১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ওই বছর এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৬১ হাজার ৭৯২ জন। এর মধ্যে শিক্ষার্থী সংখ্যার শীর্ষ ১০ বিশ্ববিদ্যালয়েই ছিল ১ লাখ ২৭ হাজার ৯৯৫। এ হিসাবে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যার ৩৫ শতাংশই ছিল ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ের। 

দেশের উচ্চশিক্ষা বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য  উঠে এসেছে। ২০১৮ সালের তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে তদারক প্রতিষ্ঠানটি। দেশের স্বায়ত্তশাসিত, সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

ইউজিসির ৪৫তম বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন ও ভর্তিকৃত শিক্ষার্থী ও মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা পৃথকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ সালে শিক্ষার্থী সংখ্যায় সবচেয়ে এগিয়ে ছিল ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। ২০১৮ সালে ড্যাফোডিলের সর্বমোট শিক্ষার্থী ছিল ২১ হাজার ৭৮১। 

মান সম্মত শিক্ষা এবং কম টিউশন ফির কারণে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বলে মনে করে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। এ প্রসঙ্গে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি বলেন, আমাদের অধিকাংশ ডিপার্টমেন্ট অনেক ভাল। গ্র্যাজুয়েটদের চাকরি পাওয়ার হার অনেক বেশি। তাই শিক্ষার্থীদের ভর্তির প্রবল আগ্রহ রয়েছে। আমাদের স্থায়ী ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। মধ্যবিত্ত পরিবারের কথা চিন্তা করে আমরা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের বৃত্তি দিয়ে থাকি। যার ফলে আমাদের এখানে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এছাড়া স্থায়ী ক্যাম্পাসে যারা ভর্তি হয় তাদেরকে আমরা ২০ শতাংশ ছাড়ে ভর্তি করাই। এসব কারণেই আমাদের এখানে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হচ্ছে। 

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ছিল ২০ হাজার ১৯৭ জন, যা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। গুণগত শিক্ষার কারণেই নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সব মহলে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নর্থ সাউথ র‌্যাংকিংয়ে অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কেও ছাড়িয়ে গেছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশে ও এশিয়ায় ভালো অবস্থানে রয়েছে। এগুলো সম্ভব হয়েছে গুণগত শিক্ষা ও গবেষণার কারণে। 

তৃতীয় অবস্থানে থাকা ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১২ হাজার ৪৩৮ জন। চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী সংখ্যা ১২ হাজার। 

পঞ্চম অবস্থানে থাকা আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) শিক্ষার্থী সংখ্যা ১১ হাজার ৭৮৬ জন। শিক্ষার্থীর সংখ্যায় জাতীয়ভাবে এগিয়ে থাকার বিষয়টিকে উৎসাহব্যঞ্জক বলে মনে করেন আইআইইউসি উপাচার্য অধ্যাপক কে. এম গোলাম মহিউদ্দীন। তিনি বলেন, আমাদের এখানে শিক্ষার্থীরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুভূতি পায়। আমাদের বিশাল খেলার মাঠ, লাইব্রেরি অনেক বড়। এ ছাড়া আমরা শিক্ষার্থীদের মান সম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করি বলেই আমাদের এখানে অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। আমরা ছেলে-মেয়েদের আলাদা ক্যাম্পাসের ব্যবস্থা করেছি। এটি অভিভাবকদের আকর্ষণ করে। আমাদের এখানে শিক্ষার্থীদের ফিও অনেক কম এ কারণে আমাদের এখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি।

এর বাইরে শিক্ষার্থী সংখ্যার দিক থেকে ষষ্ঠ অবস্থানে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (এআইইউবি) (১১৩৬২), সপ্তম অবস্থানে ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলোজি চিটাগং (ইউএসটিসি) (১০৫৮২), অষ্টম অবস্থানে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি (৯৫৭৬), নবম অবস্থানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি (৯৪৯৮) ও দশম অবস্থানে উত্তরা ইউনিভার্সিটি (৮৭৭৫)।

সার্বিক বিষয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, এক সময় বাংলাদেশ থেকে প্রচুর শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যেত। এখন দেশে বেশকিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। সাড়ে ৩ লাখের বেশি শিক্ষার্থী এসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার মান উন্নয়ন করতে পারলে এ সংখ্যা বাড়বে।


সর্বশেষ সংবাদ