ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সমাবর্তনে ডিগ্রি পেলেন ২ হাজার ৮৮৫ গ্র্যাজুয়েট
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২৩ PM

দেশের অন্যতম বেসরকারি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ২৪তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল) বেলা ১১টায় রাজধানীর আফতাবনগর খেলার মাঠে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠের মধ্যে দিয়ে সমাবর্তন শুরু করা হয়। সমাবর্তন উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামস রহমান।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ২ হাজার ৮৮৫ শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। এছাড়া অনন্য মেধাবী ৬ জন গ্র্যাজুয়েটকে স্বর্ণপদক দেয়া হয়।
উপস্থিত গ্র্যাজুয়েটদের অভিবাদন জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে আমরা যুগসন্ধিক্ষণে উপনীত হয়েছি। জাতি হিসেবে আমরা অধিকার বিবর্জিত প্রজা থেকে আবার নতুন করে অধিকারসমৃদ্ধ নাগরিক হয়েছি। এই নতুন ইতিহাস রচিত হয়েছে তরুণ শক্তির বলিষ্ঠ নেতৃত্বে। তেমনই এক তরুণপ্রাণসমৃদ্ধ প্রাঙ্গণে এসে আজ আমি গৌরবান্বিত।’ এ সময় তিনি পরিবার, সমাজ ও দেশের কল্যাণে শিক্ষার্থীদের কাজ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এপেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজ থেকে ২৫ বা ৩০ বছরের পরের বাংলাদেশ কেমন হবে তা নির্ভর করছে তোমাদের ওপর। জুলাই অভ্যুত্থানে তোমরা যে বৈষমায়ীন দেশের কথা বলেছ, সেই কমিটমেন্ট ধরে রেখে একটি সামা ও ন্যাভিত্তিক সমাজ গড়ার নেতৃত্ব দিবে। একইসাথে গ্রাজুয়েটদের তিনি চাকরির বদলে উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। চীনের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, বড় প্রতিষ্ঠান করতে হবে এমন নয় ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান গড়েও দেশের জিডিপিতে বড় অবদান রাখা যায়।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, পৃথিবীব্যাপী পারস্পরিক বব্যধান এবং স্বন্দ বাড়ছে। সহমর্মিতা নিয়ে মানুষের সহাবস্থান এখন কল্পনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় ও বৈশ্বিক এই অস্থিরতা দূর করে শান্তির পৃথিবী গড়ার দায়িত্ব তরুণদের নিতে হবে বলে ইউজিসি চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, দেশের সম্পদ যথাযথভাবে ব্যবহার করে পণ্য ও সেবা তৈরিতে মনোনিবেশ করতে হবে। আমদানি প্রবণ বাংলাদেশ তকমাটি ঘুচাতে হবে। এসময় তিনি বাংলাদেশে উচ্চামানের শিক্ষা কমিশন গঠন এবং একটি আধুনিক, বিজ্ঞানমনস্ক এবং উদ্ভাবনী শিক্ষানীতি প্রণয়নের জন্য শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে দাবি তুলে ধরেন।
স্বাগত বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামস রহমান বলেন, আমাদের জনশক্তিকে সম্পদে রুপান্তর করতে হলে আমাদের প্রযুক্তিগত এবং ভাষাগত দক্ষতা বাড়াতে হবে। শিক্ষার্থীদের প্রচলিত কাঠামোর বাইরে গিয়ে নিজেদের সৃজনশীলতা দিয়ে নতুন কিছু করতে উৎসাহ দেন তিনি।
এর আগে সকাল থেকে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও গ্র্যাজুয়েটরা সমাবর্তন স্থলে আসতে শুরু করেন। শুধু গ্র্যাজুয়েট ও আন্ডারগ্রাজুয়েটরা নয়, অনেকের সাথে বাবা মা, কারও সাথে বড় ভাই-বোন, আবার কারো সাথে স্বামী সন্তানও নিয়ে এসেছেন। শিক্ষা জীবনের শেষে সনদ হাতে পাওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপ উপাচার্য, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যগণ, কোষাধ্যক্ষ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারপার্সন, শিক্ষক, কর্মকর্তা, গ্র্যাজুয়েট ও অভিভাবকবৃন্দ।