দক্ষ ও কল্যাণমুখী আগামীর জন্য শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করছে ইউআইইউ’র অর্থনীতি বিভাগ
- খাঁন মুহাম্মদ মামুন
- প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৭ PM , আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২২ PM
অর্থনৈতিক পরিসরে মানুষের সমস্যার গবেষণাভিত্তিক এবং জীবনঘনিষ্ঠ সমাধান খুঁজতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার বিষয় অর্থনীতি। অর্থনীতির বৈচিত্র্যময় বিভিন্ন থিওরি ও মডেল সমাজব্যবস্থা, রাষ্ট্রনীতি, আন্তর্জাতিক-দেশি বাজার, পুঁজিবাজার, রাজনৈতিক ব্যবস্থা সমন্বিতভাবে বোঝার একটি অপরিহার্য দিক। ফলে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে ব্যাপক চাহিদা অর্থনীতি বিষয়ে মেধাবী বিদ্যার্থীদের। সেজন্য দেশের সরকারি এবং বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় প্রতিনিয়ত বাড়ছে এ বিষয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা।
অর্থনীতি শিক্ষার্থীদের জন্য যৌক্তিক চিন্তা করার ক্ষমতা, গাণিতিক দক্ষতা, সমস্যা সমাধান করার দক্ষতা, বিশ্লেষণী ক্ষমতা, গবেষণার দক্ষতা, অর্থনৈতিক জ্ঞান ইত্যাদি বিষয়াদি মৌলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ । অর্থনীতির বিভিন্ন বিশেষায়িত শাখা রয়েছে, যেগুলোর সংশ্লিষ্টতায় এসব দক্ষতা শিক্ষার্থীদের যেকোনো পেশা নির্বাচন করতে সহায়তা করে। অর্থনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত গবেষণা, ব্যাংকিং বীমা এবং বিনিয়োগ। তাছাড়া রয়েছে শিক্ষকতার পেশা। এছাড়া অর্থনীতি পড়ে আরো অনেক ক্ষেত্রে কাজ করা যায়—ডেটা অ্যানালিসিস, আর্থিক পরিকল্পনা, হিসাবরক্ষণ, আর্থিক পরামর্শ, বিনিয়োগ বিশ্লেষণের মতো বিষয়গুলো নিয়ে।
শিক্ষার্থীদের এসব দক্ষতা বাড়াতে এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য যোগ্য অর্থনীতিবিদ গড়তে দেশের অন্যতম বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) স্কুল অব বিজনেসের অন্তর্ভুক্ত অর্থনীতি বিভাগে রয়েছে অভিজ্ঞতানির্ভর শেখার সব আয়োজন। বিভাগটিতে শিক্ষার্থীদের জন্য হালনাগাদ সব সিলেবাসের পাশাপাশি রয়েছেন দেশসেরা শিক্ষকরা। ইউআইইউ’র আধুনিক এবং সময়োপযোগী সব শিক্ষার আয়োজন নিশ্চিতভাবেই এগিয়ে রাখবে এখানকার শিক্ষার্থীদের।
এখানে আমরা প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় জোর দিতে চাই এবং শিক্ষার্থীদের অনেক বেশি দক্ষ করে গড়ে তুলতে চাই—যারা ভবিষ্যতের অর্থনীতিবিদ হিসেবে নিজেদের গড়তে চায়—অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক, অর্থনীতি বিভাগের প্রধান, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংক, সরকারি, এনজিও, জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, ডেভেলপমেন্ট সেক্টর, থিংক ট্যাংক, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে অসংখ্য চাকরির সুযোগ রয়েছে অর্থনীতি থেকে স্নাতক সম্পন্নকারীদের। সেজন্য ইউআইইউতে শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়মিত শেখন-পঠনের পাশাপাশি ইউআইইউতে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা সুযোগ পাচ্ছেন বাস্তবধর্মী গবেষণারও।
এখানকার শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষের পড়াশোনার বিষয়গুলো আরও বেশি অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ করার সুযোগ পাচ্ছে গবেষণার মাধ্যমে। এছাড়াও ইন্ড্রাস্ট্রি এবং একাডেমিয়ার কোলাবরেশনে নানা আয়োজন সবসময়ই এগিয়ে রাখবে ইউআইইউ’র অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের। উচ্চশিক্ষালয়টিতে প্রচলিত সব ধরনের সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন পর্যায়ের, এমনকি শতভাগ স্কলারশিপ সুবিধাও।
আরও পড়ুন: গবেষণানির্ভর পাঠদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ইউআইইউ’র ইংরেজি বিভাগ
ইউআইইউ-তে বেশ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে জুনিয়র ইকনোমিষ্টস ফোরাম। অর্থনীতির শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের বিভিন্ন সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের সাথে সম্পৃক্ত রাখতে কাজ করছে ফোরামটি। শিক্ষার্থীদের মতে—এখানকার বাস্তবমুখী শেখন কাঠামোর সুবিধা তাদেরকে আরও বেশি দক্ষ হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করছে। এখানে যা শেখানো হচ্ছে, তা আমাদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করবে। পাশাপাশি এখানে এক্সট্রা-কারিকুলার নানা ধরনের সুযোগ রয়েছে। যা আমাদের ইন্ড্রাস্ট্রির নানা বাস্তব বিষয়গুলো শেখাতে সহায়তা করছে’—দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান ইউআইইউ’র অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিনা রহমান এবং আবিদ শাহরিয়ার।
বিভাগটিতে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন মোশাররাত শবনম সুচি। জানতে চাইলে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শ্রেণিকক্ষে তারা শিক্ষার্থীদের হালনাগাদ বিষয়গুলো শেখানোর চেষ্টা করেন। যাতে শিক্ষার্থীরা তা বাস্তব জীবনে কাজে লাগাতে পারে। তারা যেন বাজার উপযোগী হতে পারে। আমার বিশ্বাস শিক্ষার্থীরা এখান থেকে বাস্তবমুখী হয়ে গড়ে উঠবে এবং দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এগিয়ে থাকবেন।
ইআইইউ’র নিজস্ব ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা পেয়ে থাকেন উন্নত শিক্ষার পরিবেশ। ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত।
ইউআইইউ’র অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে সবকিছু শেখানো হয় বলে জানিয়েছেন এখানকার শিক্ষকরা। বিভাগটির দুই অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতার হোসাইন এবং ড. মোহাম্মদ আলী আশরাফ বলছেন—আমরা শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের শেখানোর পাশাপাশি বাস্তব প্রেক্ষিতের বিষয়গুলোও দেখানোর চেষ্টা করি। এতে তারা বাজার উপযোগী এবং বাজার চাহিদা সম্পর্কে বিস্তারিত জানান সুযোগ পান। এছাড়াও এখানে শিক্ষার্থীদের জন্য সহশিক্ষার নানা আয়োজন থাকে—ফলে তারা সবকিছুই শেখার সুযোগ পান।
সামগ্রিক বিষয় নিয়ে জানতে চাওয়া হয় ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) অর্থনীতি বিভাগের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুকের কাছে। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, ‘ইউআইইউতে শিক্ষার্থীদের জন্য এখানে শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ রয়েছে। আমাদের রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসও শিক্ষার্থীদের সবসময়ই এগিয়ে রাখবে। এছাড়াও এখানে শিক্ষার্থীদের যে ধরনের ‘অ্যাটেনশন’ আমরা দিতে পারি—তা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্ভব নয়। আমাদের সেরা শিক্ষকরা আছেন। আমি আশা করবো, যাদের যা ‘পোটেনশিয়াল’ আছে, তা যেন পূর্ণভাবে বিকশিত করতে পারে। যারা পরিশ্রম করতে প্রস্তুত এবং সামনে ভালো কিছু করতে চায়, তারা ইউআইইউ'র ইকোনমিক্স ডিপার্টমেন্টে পড়তে আসবে বলে আমি আশা করছি।’
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানি গবেষণার বাতিঘর ইউআইইউ’র সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ
ইউআইইউ’র অর্থনীতি বিভাগের সিলেবাস প্রতিনিয়ত হালনাগাদ করা হয় জানিয়ে অধ্যাপক ফারুক বলেন, এর পাশাপাশি আমরা সময়ের সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের যেসব দক্ষতা বাড়ানো দরকার এবং তার জন্য যা করা দরকার—আমরা তা করছি। এখানে আধুনিক বিশ্বের সুবিখ্যাত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোয় যা পড়ানো হয়—তার আলোকে আমাদের পাঠ্যক্রম হালনাগাদ করা হয়, যাতে আমাদের ছেলে-মেয়েরা অনেক বেশি সময়োপযোগী হতে পারে এবং বাজার উপযোগী হয়ে গড়ে উঠতে পারে। অল্প কিছু সময়ের মধ্যে আমরা কিছু নতুন প্রোগাম সংযোজন করা হবে—যেগুলো হয়ত বাংলাদেশে অর্থনীতি পাঠ্যক্রম সংশ্লিষ্ট কিছু পথিকৃতের ভূমিকা রাখবে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে পিএইচডি সম্পন্নের পর সেখানে দুই দশক এবং তারপর মধ্যপ্রাচ্যেও দীর্ঘ শিক্ষকতার পর বাংলাদেশের শিক্ষকতার ফিরতে পেরে উচ্ছ্বাস জানিয়ে অধ্যাপক ফারুক বলেন, এখানে আমরা প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় জোর দিতে চাই এবং শিক্ষার্থীদের অনেক বেশি দক্ষ করে গড়ে তুলতে চাই—যারা ভবিষ্যতের অর্থনীতিবিদ হিসেবে নিজেদের গড়তে চায়। দেশে আরো বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি পাঠ্যক্রম আছে। কিন্তু অন্যগুলোর পাশাপাশি ইউআইইউ-র কিছু স্বকীয়তা আছে। অর্থনীতি পড়তে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য আমাদের অর্থনীতি প্রোগ্রাম অবশ্যই বিবেচনায় থাকা উচিত বলেও জানান তিনি।