ইংলিশ অলিম্পিয়াডের ঢাকা পর্বের জমজমাট আয়োজন ইউআইইউতে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৬ PM , আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪৫ PM
দেশের তরুণদের নেতৃত্ব গুণাবলিকে আরও সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি তাদের ইংরেজি ভাষাজ্ঞানকে আরও দৃঢ় করতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ইংলিশ অলিম্পিয়াডের সিজন-০৪ এর ঢাকা পর্বের বাছাই পর্ব। শুক্রবার (০১ নভেম্বর) সকাল থেকে বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টান্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) ক্যাম্পাসে এ আয়োজনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। এ পর্বে ঢাকা বিভাগের প্রতিযোগীরা অংশগ্রহণ করেছেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউআইইউ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম মিয়া। এছাড়াও অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস, চাইল্ড রাইটস একটিভিস্ট ফাতিহা আয়াত, বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. ডেভিড ডোলান্ড, জনপ্রিয় শিক্ষক এবং শিক্ষা উদ্যোক্তা ফাহাদ হোসেন, বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক এবং ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলি।
অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করতে সকাল থেকেই ইউআইইউ ক্যাম্পাসে আসতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। বেসরকারি এ উচ্চশিক্ষালয়ের পুরো ক্যাম্পাস দিনভর মাতিয়েছেন শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক, আয়োজক এবং সংশ্লিষ্টরা।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে ইউনাইটেড ইন্টান্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম মিয়া বলেন, ইউআইইউ ইংলিশ অলিম্পিয়াডের গুরুত্বপূর্ন অংশীদার। এসময় বক্তব্যে তিনি অংশগ্রহণকারী এবং তরুণ শিক্ষার্থীদের সাফল্য কামনা করেন।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা আগামী দিনের পরিবর্তনের কারিগর। তারাই আগামীদিনের নেতা। তাদের মাধ্যমের সমাজ, রাষ্ট্র কাঠামোয় পরিবর্তন আসবে। সেজন্য তরুণ শিক্ষার্থীদের আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হতে হবে।
চিত্র: প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা | ছবি: টিডিসি
এ ধরনের আয়োজন শিক্ষার্থীদের মনোবল বাড়াবে বলে মনে করেন অভিভাবকরা। নরসিংদী থেকে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া কন্যাকে নিয়ে ঢাকা পর্বের অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করা ফরিদ হোসেন ও নাজনীন আক্তার দম্পতি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সহশিক্ষার এমন অনুষঙ্গ নেতৃত্বের বিকাশের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আগামীদিনের জন্য প্রস্তুত করবে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবার কুমিল্লাকে আলাদা বিভাগ বিবেচনায় মোট নয়টি বিভাগের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। তার অংশ হিসেবে ঢাকা পর্বের এ আয়োজন। প্রতিযোগিতার বিভিন্ন পর্যায়ের স্পোকেন ও লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিতে পারবেন অংশগ্রহণকারীরা।
আরও পড়ুন: পাওয়ার গ্রিডের চেয়ারম্যান হলেন ইউআইইউর প্রফেসর ইমিরেটাস ড. এম রেজওয়ান খান
এ আয়োজনে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের নিয়ে কিডজ থেকে শুরু করে স্মল-স্টার, জুনিয়রস, সিনিয়রস, হাই ফ্লাওয়ারস এবং উচ্চশিক্ষালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ট্রেইল-ব্লেজারস'সহ মোট ছয়টি বিভাগে প্রতিযোগীরা শ্রেষ্ঠত্বের এ লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছেন।
সকাল থেকে শুরু হওয়া ফাইনাল রাউন্ডে প্রতিযোগীরা লড়াইয়ের সুযোগ পান বিকেল চারটা পর্যন্ত। আসরের শুরুর দিনে বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা এবং শেষ দিনে থাকবে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
প্রতিযোগিতার শুরুতে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থী থাকলে চূড়ান্ত পর্বে মুখোমুখি হয়েছে পাঁচ হাজারের মতো শিক্ষার্থী। ইংলিশ অলিম্পিয়াডের চূড়ান্ত পর্বের চ্যাম্পিয়ন পাবেন ৩ লাখ টাকার সম্মাননা, মেডেল ও সার্টিফিকেট। এছাড়াও ফাইনালের সকল শিক্ষার্থীই পাবেন একটি করে মেডেল ও সার্টিফিকেট। পাশাপাশি শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিযোগীরা ইংলিশ অলিম্পিয়াডের আন্তর্জাতিক কোনো আসরে।
চিত্র: প্রতিযোগিতা চলাকালীন শিক্ষার্থীরা | ছবি: টিডিসি
ইংলিশ অলিম্পিয়াডের আয়োজনে বরাবরই ভেন্যু পার্টনার হিসেবে থাকে বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ)। বিগত সবগুলো আয়োজনই হয়েছে দেশের অন্যতম এ উচ্চশিক্ষালয়ের দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাসে।
ইউআইইউ তার সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে এসব আয়োজনে সহায়তা করছে বলে জানিয়েছেন বেসরকারি এ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জনসংযোগ দপ্তরের (পিআর) পরিচালক আবু সাদাত। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এ ধরনের আয়োজনে আমরা থাকতে পেরে আনন্দিত। এটি আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতায় উৎসাহী করে এবং আগামীতেও আমরা এ ধরনের আয়োজনে থাকবো।
আয়োজনের বিষয়ে জানতে চাইলে ইংলিশ অলিম্পিয়াডের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার আমান সুলাইমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা আয়োজনের শুরু থেকেই দেশের শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। 'থিংক ইন ইংলিশ' ধারণাকে জনপ্রিয় করার প্রত্যয়ে আমরা এটি শুরু করি। এটি এখন একটি প্রতিষ্ঠিত আয়োজন এবং আগামীদিনে বিশ্বে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবে।
আরও পড়ুন: ইউআইইউতে ‘প্রেজেন্টেশন চ্যাম্পস’ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
অলিম্পিয়াডে শুধু ইংরেজি শেখালেই হবে না জানিয়ে আমান সুলাইমান বলেন, সেজন্য আমাদের এবারের মূল থিম রাখা হয়েছে 'নেতৃত্বে উদ্বুদ্ধ করা'র বিষয়টি। ফলে প্রতিযোগীরা এখানে প্রযুক্তি শেখার সুযোগ পাচ্ছে। আমাদের স্লোগানই হচ্ছে 'নেতৃত্বে উদ্বুদ্ধ করা'। আমরা নেতৃত্বটাকে বাস্তবিক অর্থে শেখানোর চেষ্টা করছি। আমরা ইংরেজি শেখাচ্ছি না, বরং বিষয়টিকে সংযুক্ত করার চেষ্টা করছি। অংশগ্রহণকারীরা স্বাভাবিকভাবেই ইংরেজিটা সহজে শেখার সুযোগ পাচ্ছে। আমরা আগামীদিনে ইংলিশ অলিম্পিয়াডকে আরও বেশি ছড়িয়ে দিতে কাজ করবো।
দেশীয় শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষাজ্ঞানকে আরও সমৃদ্ধ ও দৃঢ় করার প্রত্যয়ে ২০১৬ সালে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে ইংলিশ অলিম্পিয়াড। শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া এ আয়োজনটি বর্তমানে দেশের সীমানা পেরিয়ে কাজ করছে বিশ্ব দরবারেও। ১০৩ টি দেশে ছড়িয়ে যাওয়া ইংলিশ অলিম্পিয়াডের নিয়মিত আসর অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৪৩টি দেশে।