জামায়াতে যোগদান করা সেই ছাত্রদল নেতা দল থেকে বহিষ্কার
- শেরপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২৩ PM , আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২৩ PM

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শেরপুর জেলা ছাত্রদলের শ্রীবরদী উপজেলার দুই নেতাকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত দুইজনের মধ্যে মো. আব্দুল মুন্নাফ গতকাল শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাতে সামাজিক মাধ্যমে ছাত্রদল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন।
এ ঘটনার পর আজ শনিবার (১৯ এপ্রিল) জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নিয়ামুল হাসান আনন্দ ও সাধারণ সম্পাদক মো. নাইম হাসান উজ্জ্বল স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়।
আরও পড়ুন: ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জামায়াতে যোগ দিলেন ছাত্রদল নেতা
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল শেরপুর জেলা শাখার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে শ্রীবরদী পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সুন্দর আলী এবং শ্রীবরদী উপজেলার ৯নং কুড়িকাহনিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আব্দুল মুন্নাফকে ছাত্রদলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সাংগঠনিক সকল পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সংগঠনের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং দলীয় নীতিমালার প্রতি সম্মান জানিয়ে ভবিষ্যতেও এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাইম হাসান উজ্জ্বল দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, 'বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল একটি আদর্শভিত্তিক সংগঠন। এখানে অপরাধের কোনো স্থান নেই। কেউ যদি ছাত্রদলের নাম ব্যবহার করে ব্যক্তিস্বার্থে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়ায়, তাহলে তাকে কোনোভাবেই ছাত্রদলের সদস্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে না। বরং তাকে আইনের হাতে তুলে দেওয়া উচিত। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই—অপরাধীর কোনো দলীয় পরিচয় থাকতে পারে না। তার একটাই পরিচয়—সে একজন অপরাধী। ছাত্রদলের নাম ভাঙিয়ে কেউ যদি সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে, তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
এর আগে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেন উপজেলার কুড়িকাহনিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আব্দুল মুন্নাফ।
তিনি লিখেছেন, ‘আমি ৯নং কুড়িকাহনিয়া ইউনিয়ন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি হিসাবে দায়িত্বরত আছি। আমার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অধ্যয়নে আমি এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে একজন মুসলমান তথা সকল বিবেকসম্পন্ন মানুষের মাঝে কোন সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির পরিবর্তে রাসুলের (সা) জীবনাদর্শে অনুসরণ করাটা হচ্ছে অধিকতর উত্তম।’
তিনি আরও লেখেন, ‘কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি, পরিবার ও দুনিয়াবি ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির বিপরীতে গিয়ে সকল পর্যায়ে আল্লাহর দাসত্ব মেনে নিয়ে রাজনৈতিক রুটিন ওয়ার্ক আমাকে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করে। আমি আরো অধ্যয়ন করেছি,আল্লাহর এই জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি গ্রহণ করেছে মূলত তাতেই নিহিত রয়েছে ইহজাগতিক শান্তি ও পরকালীন মুক্তি।’
তিনি বলেন, ‘জামায়াতের শৃঙ্খলা,জনশক্তির জন্য সুনির্দিষ্ট ধর্মীয় ও বিজ্ঞানভিত্তিক সিলেবাস, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা, আদেশ ও আনুগত্যের ভারসাম্য, দেশের সমস্ত জনহিতকর আন্দোলনে সম্মুখভাগে নেতৃত্বদান ও দেশপ্রেম ইত্যাদি ইতিবাচক গুণাবলি আমাকে বিশেষভাবে দলটির প্রতি আগ্রহী করে তুলেছে।’
পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এমতাবস্থায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান পূর্বক আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ৯ নং কুড়িকাহনীয়া ইউনিয়নের সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব থেকে স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে পদত্যাগ করলাম।’
শেষে তিনি লেখেন, ‘জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে আমার এ দীর্ঘ পথচলায় শুভাকাঙ্ক্ষী ও সহযোদ্ধাদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’