‘ট্রাম্প-শি-মোদি ধাক্কা দিয়ে কিছু করে যাবে না, আমাদের করতে হবে’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  © সংগৃহীত

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমেরিকা থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প, চীনের শি, ভারতের মোদি এসে ধাক্কা দিয়ে কিছু করে যাবে না, যা করার আমাদের করতে হবে।’

তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে যেমন আমরা বহুত্ববাদ এক হয়ে যুদ্ধ করেছি। তেমনি করে ২০২৪ সালে ছাত্রদের ওপর যখন গুলি চালায়, তখন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। যেভাবে গণ-অভ্যুত্থানে সবাই এক হয়েছিল, সেভাবে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানাই।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীতে ‘বাংলাদেশের ক্ষমতায়ন : নেতৃত্ব, ঐক্য এবং প্রবৃদ্ধির পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন।

এনএসইউ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে রাজনীতি, কূটনীতি, অর্থনীতি, পরিবেশ এবং সমাজ উন্নয়নের ক্ষেত্রে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্বরা অংশগ্রহণ করেন। দিনব্যাপী এই আয়োজনে ধারনকৃত (ভিডিও) বক্তব্য রাখেন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, অর্থনীতিবিদ রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ও পলিসি অ্যাডভাইজার ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, এবং সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ড. হোসেন জিল্লুর রহমান ও এবি পার্টির সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।

দেশের খাদ্য নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় আমাদের লোকের সংখ্যা ছিল সাত কোটি আর এখন ১৮ কোটি। সেই সময় আমাদের খাদ্যঘাটতি ছিল ২৮ লাখ মেট্রিক টন আর এখন খাদ্যঘাটতি নেই বললেই চলে। আর এই খাদ্যঘাটতি মিটিয়ে খাদ্য নিরাপত্তায় কাজ করেছে দেশের কৃষক ও কৃষিবিজ্ঞানীরা, যেটা আমরা মনে করি না, বুঝিও না।

মার্কিন শুল্ক বিষয়ে সতর্ক করে তিনি বলেন, সবাই এখন ভিন্ন দিকে নজর দিচ্ছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে ট্যারিফ দিয়েছে তা দেশের জন্য একটু বিপদে পড়ার মতোই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া বাড়তি শুল্ক দ্রুত সমাধান করতে না পারলে সমস্যা আরও বাড়বে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, গ্রামের যে মানুষগুলো খেত-খামারে পরিশ্রম করে দেশকে নিয়ে যাচ্ছে, যে নারী মাত্র ১৫ হাজার টাকার বেতনে কাজ করে দেশের প্রবৃদ্ধি বাড়াচ্ছে, আমরা যদি তাদের নিয়ে না ভাবি, তাহলে কোনোভাবেই দেশে এগিয়ে যাবে না। আমরা যদি সত্যিকার অর্থে তাদের নিয়ে ভাবি। তবেই দেশ এগিয়ে যাবে। এইটুকু আশাবাদী আমি, আমরা সবাই যদি বিশ্বাস করি। দেশকে এগিয়ে নিতে ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে আমাদের ভাবতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সমস্যা থাকবে, সমাধানও হবে। ড. ইউনূস সাহেবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তিনি চেষ্টা করছেন। তাকে ধন্যবাদ জানাই। আশা করি ড. ইউনূস সফল হবেন। আসুন আমরা নিজেরা নিজেদের সাহায্য করি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী। তিনি বলেন, “আমরা এমন নাগরিক তৈরিতে বিশ্বাস করি যারা দেশকে ন্যায়সঙ্গত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”

সম্মেলনে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের ‘অ্যাম্বাসেডর সিরাজুল ইসলাম ফিউচার লিডার্স স্কলারশিপের' বৃত্তি প্রদান করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ