‘রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে হলে আলেম সমাজকে নিয়ে ভাবতে হবে’
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৮:০৩ PM , আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৯:০৬ PM

বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেছেন, ‘বাংলাদেশে ৯২ শতাংশ মুসলিম। বাংলাদেশের আলেম সমাজ শৃঙ্খলা মেনে চলে। যারা রাষ্ট্র ক্ষমতা যাওয়ার জন্য চিন্তা করছেন, তাদের আলেম সমাজকে নিয়ে ভাবতে হবে। আলেমদের অভিলাষ নেই। আলেম সমাজকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে ভাবতে হবে। যে নেতৃত্ব দিতে চায় তার সবার সমার্থক দরকার আছে।’
আজ সোমবার (১৭ মার্চ) মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের পেশাজীবী অজনৈতিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদারেছীনের উদ্যোগে দেশের পীর-মাশায়েখ, ইসলামিক স্কলার শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবীদ ও সরকারি কর্মকর্তাদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।
ইফতার মাহফিলে দোয়া পরিচালনা করেন, ছারছীনা দরবার শরীফের পীরসাহেব মাওলানা শাহ আবু নছর নেছার উদ্দীন আহমদ হুসাইন।
আরো পড়ুন: মাদ্রাসায় ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ চালুর উদ্যোগ
এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, ‘বিশ্বে প্রায় ২০০ কোটি মুসলিম রয়েছে। ইতোমধ্যে নেতৃত্বের জন্য ছোটো-খাটো যুদ্ধ হচ্ছে। কে নেতৃত্ব দেবে? সৌদি আরব নেতৃত্ব দেবে না তুরস্ক নেতৃত্ব দেবে। যেই নেতৃত্ব দেক, নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে সবারই কিন্তু শক্তির দরকার আছে। আজকে মাহাথির মুহাম্মদের নেতৃত্বে মালয়েশিয়া বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছে, আগামী ১০ বছরের মধ্যে ভারতের অর্থনীতিকে অতিক্রম করে যাবে ইন্দোনেশিয়া।
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ইন্দোনেশিয়া খুবই দ্রুত অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ইন্দোনেশিয়া হচ্ছে সর্ববৃহৎ মুসলমান রাষ্ট্র। এই শতাব্দী শেষে বাংলাদেশেসহ মুসলমানের জনসংখ্যা প্রায় ১৫০ কোটি হবে। তখন বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এরদোগান সুপরিচিত, তিনি একজন মুসলমান দেশের নেতা। ইন্দোনেশিয়া প্রেসিডেন্ট শক্তিশালী একজন মুসলিম দেশের নেতা। আগামী দিনে বাংলাদেশে যিনি ক্ষমতায় আসবেন এটা আল্লাহ তায়ালা নির্ধারণ করে রেখেছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘ দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করতে হবে। নাহিদ ও সারজিস সবাই মাদ্রাসার ছাত্র। তাদের মধ্যে জ্ঞানের ভাণ্ডার লুকিয়ে আছে। অনেকেই এই (মাদ্রাসার) পরিচয় দিতে চান না। তাদের এই জ্ঞানকে কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম হিসাবে কাজ করবে।’
এ এম এম বাহাউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের মাদরাসার শিক্ষার্থীরা পরিবার তৈরি করছে। মাদরাসায় পড়া মেয়েটা কিন্তু সুন্দরভাবে পরিবারের দায়িত্ব পালন করছে। আদর্শ মানুষ তৈরি করছে। এই দেশে ৫ লাখ মসজিদ আছে, কয়েক লাখ কাজী আছে, প্রায় ৫ লাখ মসজিদের সাথে ইমাম মুয়াজ্জিন আছে। আলিয়া মাদরাসায় প্রায় ৩ লাখ শিক্ষক ও প্রায় ৭০ লাখ ছাত্র-ছাত্রী আছে।’
তিনি বলেন, ‘কওমী মাদরাসায় লাখ লাখ ছাত্র আছে। যারা আগামী দিনে রাষ্ট্র ক্ষমতার চিন্তা-ভাবনা করছেন তাদের ভাবনায় আলেম সমাজকে রাখা উচিত, তাদের নিয়ে ভাবা উচিত। এদেশের আলেম সমাজ সব সময় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। আগামী দিনে এদেশের আলেম সমাজ যাতে সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয় সে দিক বিবেচনা করতে হবে।’
ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ডা. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মুফতি ফখরুল ইসলাম, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আব্দুল কাদের, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র মোহাম্মদ ওসমান বিন হাদী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফি, বাংলাদেশ ওলামা বিভাগের সেক্রেটারি ড. শায়খ খলীলুর রহমান মাদানী, তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ জয়নুল আবেদীন ও অন্যান্য ইসলামিক দলের নেতৃবৃন্দ ও দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম।