পেটব্যথা নিয়ে টয়লেটে গিয়ে সন্তান প্রসব বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর

সন্তানের সঙ্গে জেস ডেভিস
সন্তানের সঙ্গে জেস ডেভিস  © সংগৃহীত

রাতে বাইরে বের হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রী জেস ডেভিস। হঠাৎ পেটব্যথা শুরু হলে টয়লেটে যান তিনি। সেখানেই একটি সুস্থ সবল শিশুর জন্ম দেন। এই ঘটনা নিয়ে নিজেই হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন ওই ছাত্রী শিক্ষার্থী। ২০ বছর বয়সী জেস জানতেনই না যে তিনি সন্তানসম্ভবা! তিনি ভেবেছিলেন মাসিকের কারণে পেটব্যথা হচ্ছে। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেস ডেভিস ব্রিস্টলের ইতিহাস ও রাজনীতির শিক্ষার্থী। তিনি বর্তমানে সাউদাম্পটন ইউনিভার্সিটিতে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন। তার গর্ভধারণের কোনো সুস্পষ্ট লক্ষণ ছিল না। ছিল না বেবি বাম্পও। তিনি দাবি করেছেন, তার ঋতুচক্র সব সময়ই অনিয়মিত ছিল। তাই লক্ষ্য করেননি যে জরায়ুতে একটি শিশু বড় হচ্ছে।

গত ১১ জুন একটি ছেলে সন্তানকে পৃথিবীতে স্বাগত জানান জেস ডেভিস। এখন অবশ্য মাতৃত্বে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। নবজাতকের ওজন প্রায় তিন কেজি। নতুন মা বলেছেন, যখন সে জন্মেছিল, সেই ঘটনা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় একটা ধাক্কা। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম আমি দুঃস্বপ্ন দেখছি।

ডেভিস বলেন, যতক্ষণ না আমি তার কান্না শুনি, ততক্ষণ আমি বুঝতে পারিনি কী ঘটেছে। প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে এবং তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে, তার সঙ্গে মাতৃত্বের বন্ধন তৈরি করতে কিছুটা সময় লেগেছে। কিন্তু এখন আমি যেন চাঁদ হাতে পেয়েছি!

তিনি আরও বলেন, সে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ঠান্ডা শিশু। সে ওয়ার্ডের শান্ত শিশু হিসেবে পরিচিত।

ইন্ডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনের তথ্যমতে, চলতি বছরের জুনের এক রাতে তীব্র ব্যথায় ঘুম থেকে জেগে উঠেছিলেন ডেভিস। তখন ধরেই নিয়েছিলেন এটি তার মাসিকের শুরু। তিনি কোনোরকম হাঁটতে পারছিলেন। ব্যথার কারণে বিছানায় শুতেও পারছিলেন না। 

ডেভিস বলেন, সেই রাতে আমার জন্মদিনের পরের দিন একটি হাউস পার্টি করার কথা ছিল। তাই প্রাণপণে ভালো বোধ করার চেষ্টা করছিলাম। বারবার গোসল করেছিলাম। কিন্তু ব্যথা শুধু বাড়ছিলই।

ডেভিস আরও বলেন, একপর্যায়ে বাথরুমের চাপ পায়। টয়লেটে বসে জোরে কোঁৎ দিতে শুরু করেন। কখনো ভাবিনি আমি সন্তান জন্ম দিচ্ছি। কিন্তু একপর্যায়ে আমার তলপেট যেন ছিঁড়ে যাচ্ছিল। কিছু একটা পড়ে যায়। তখনো জানতাম না এটা কী! আমি শুধু জানতাম যে চাপমুক্ত হতে একটা কিছু বের করে দেওয়া দরকার। তার কান্নার শব্দ শুনে যেন আমি বাস্তবে ফিরে আসি। বুঝতে পারি আসলে কী ঘটল।

তখন কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না ডেভিস। বাড়িতে একা ছিলেন। তখন সবচেয়ে কাছে বন্ধু লিভ কিংকে ফোন করেন। প্রথমে তার সেই বন্ধু বিশ্বাসই করছিলেন না। ওতো রাতে তিনি বাইরে বের হতে চাচ্ছিলেন না। নানা অজুহাত দিতে থাকেন। ডেভিসকে অ্যাম্বুলেন্স কল করার পরামর্শ দেন। তখন বাধ্য হয়ে ডেভিস তাকে নবজাতক পুত্রের একটি ছবি পাঠান। 

ডেভিসকে প্রিন্সেস অ্যান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে শিশুটিকে ইনকিউবেটরে রাখার জন্য দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকদের ধারণা, শিশুটি ৩৫ সপ্তাহ গর্ভে ছিল। মা ও শিশু এখন ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।


সর্বশেষ সংবাদ