আইফেল টাওয়ারকে হিজাব পরিয়ে বিজ্ঞাপন, বিতর্ক ছড়াল ফ্রান্সে
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০১:০৩ AM , আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০১:০৩ AM

ইসলামি পোশাকের একটি ব্র্যান্ড মেরাচি। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে প্রতিষ্ঠানটির একটি বিজ্ঞাপন ফ্রান্সে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিজ্ঞাপনটিতে দেখা যায়, আইফেল টাওয়ার একটি হিজাবে পরানো। আর ক্যাপশনে লেখা রয়েছে—‘ফরাসি সরকার মেরাচিকে আসতে দেখলে ঘৃণা করে।’
মঙ্গলবার যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সানডে টাইমস জানিয়েছে, ফ্রান্সে স্কুল ও সরকারি অফিসগুলোতে হিজাব নিষিদ্ধ হওয়ায় ওই বিজ্ঞাপনটি সেখানে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। জাতীয় টেলিভিশন ও রেডিওতে ভাষ্যকারেরা এর কঠোর সমালোচনা করেছেন। তাঁদের মতে, এটি সরকারবিরোধী স্লোগানকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার একটি কৌশল।
ফরাসি সংবাদ চ্যানেল বিএফএম-এর বিশ্লেষক লরেন্ট নিউম্যান বলেছেন, ‘ফ্রান্সে হিজাব শুধু স্কুলে নিষিদ্ধ। আর তারা যে বলছে বিনয়ী এই ফ্যাশনে ধর্মীয় সংযোগ নাই—তা সত্য নয়।’
লে পয়েন্ত ম্যাগাজিনের সম্পাদক জেরালদিন ভোসনার মনে করেন, এই বিজ্ঞাপন ফ্রান্সে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে। তিনি বলেন, ‘তারা বোঝাতে চাচ্ছে যে হিজাব বিনয়ী, আর যারা এটি পরে না তারা বিনয়ী নয়। এটি সত্যিই আক্রমণাত্মক এবং বিভ্রান্তিকর।’
বিজ্ঞাপনটিতে সরাসরি ধর্মের উল্লেখ নেই। তবে এটি ফ্রান্সের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বিভাজনকে সামনে নিয়ে এসেছে। বিশেষ করে কট্টর ডানপন্থী রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল র্যালি দলের নেতারা এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। দলটির সংসদ সদস্য লিসেট পোলেট সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘এটি আইফেল টাওয়ারের জন্য একটি অবমাননা। ইসলামিক হিজাবে এটি ঢেকে দিয়ে মেরাচি ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেছে।’
নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম-ভিত্তিক মেরাচি মূলত অনলাইনের মাধ্যমে ফ্রান্সে ব্যবসা করে এবং সম্প্রতি প্যারিসের মারাইস অঞ্চলে একটি অস্থায়ী দোকানও চালু করেছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ২৬ বছর বয়সী নাদা মেরাচি এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
ফ্রান্সের কঠোর ধর্মনিরপেক্ষতা নীতির অধীনে সরকারি কর্মচারী, আইনজীবী, পুলিশ কর্মকর্তা এবং রাষ্ট্রীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা প্রকাশ্যে ধর্মীয় প্রতীক পরতে পারেন না। ২০২৩ সাল থেকে ফ্রান্সের স্কুলে ইসলামিক আবায়া পরাও নিষিদ্ধ।