ফের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসছেন ইউনূস-শেহবাজ

মুহাম্মদ শেহবাজ শরিফ ও ড. মুহাম্মদ ইউনূস
মুহাম্মদ শেহবাজ শরিফ ও ড. মুহাম্মদ ইউনূস  © সংগৃহীত

সম্প্রতি নিউইর্য়কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ শেহবাজ শরিফ। বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে একমত হয়েছিলেন দুই নেতা। এবার ফের দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠকে বসতে পারেন দুই নেতা।

জানা গেছে, এ মাসেই উন্নয়নশীল আট মুসলিম দেশের জোট ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলন বসছে উত্তর আফ্রিকার দেশ মিসরের রাজধানী কায়রোতে। সম্মেলনে যোগ দেবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানেই তিনি বৈঠকে বসতে পারেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে। সম্ভাব্য এই বৈঠকের বিষয়ে সবার নজর থাকবে বলেও উল্লেখ করা হচ্ছে। ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে তা হবে উভয় নেতার মধ্যে দ্বিতীয় বৈঠক।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ কায়রোতে অনুষ্ঠেয় উন্নয়নশীল আট দেশের জোট ডি-৮ এর একাদশ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে ১৮ থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মিসরে সরকারি সফর করবেন বলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর ঘোষণা করেছেন।

অন্যদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৭-২০ ডিসেম্বর মিসরে সরকারি সফর করবেন। আর সেখানে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে পারেন উভয় নেতা।

দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল বলছে, কায়রোতে অনুষ্ঠিতব্য এই শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী অন্য নেতাদের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর এখনও পর্যন্ত কোন বৈঠক নিশ্চিতভাবে হতে চলেছে সে বিষযে ইঙ্গিত দেয়নি।

অবশ্য শেখ হাসিনা সরকারকে অপসারণের পর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে সম্ভাব্য বৈঠকের দিকে সবার দৃষ্টি থাকবে বলেও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।

প্রসঙ্গত, পাকিস্তান ছাড়াও ডি-৮ জোটের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে— মিসর, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান এবং তুরস্ক। এই প্ল্যাটফর্মে এসব দেশ মূলত অর্থনৈতিক সহযোগিতার দিকে মনোনিবেশ করে থাকে। এই সহযোগিতার মধ্যে অর্থনীতি ও আর্থিক বিষয়াদির পাশাপাশি গ্রামীণ উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মানবিক উন্নয়ন, কৃষি, জ্বালানি পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যসেবার মতো বিষয়ও রয়েছে।

এবারের ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য বৈচিত্র্য ও উদ্ভাবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে আলোকপাত করার পাশাপাশি সদস্য দেশগুলো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং পারস্পরিক প্রবৃদ্ধি উৎসাহিত করতে একসঙ্গে কাজ করবে দেশগুলো। তবে সম্মেলনে বিশেষ গুরুত্ব পাবে গাজা-লেবানন প্রসঙ্গ। এক্ষেত্রে গাজা ও লেবাননে মানবিক বিপর্যয় নিয়ে শীর্ষ নেতারা একটি বিশেষ সেশন করবেন। ওই সেশন থেকে মানবিক সংকট নিরসনে যৌথ প্রস্তাবনা প্রকাশ করবেন ডি-৮ শীর্ষ নেতারা।

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের ১৫ জুন ইস্তাম্বুল ঘোষণার মাধ্যমে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে উন্নয়ন সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে ডি-৮ গ্রুপটি যাত্রা শুরু করে। উন্নয়নশীল আট মুসলিম দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গড়ে তোলা হয় ডি-৮।


সর্বশেষ সংবাদ