ভারতে বিক্ষোভের মুখে বাড়ি বিক্রি করতে বাধ্য হলেন মুসলিম দম্পতি
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৬ AM , আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৯ AM
ভারতের উত্তর প্রদেশের মুরাদাবাদ শহরে একটি নতুন বাড়ি কিনেছিলেন সংখ্যালঘু এক মুসলিম চিকিৎসক পরিবার। কিন্তু হিন্দু প্রতিবেশীদের বিক্ষোভের মুখে নিজেদের কেনা বাড়িতে উঠতে না পেরে বাড়ি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন ওই মুসলিম দম্পতি।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বৃটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জানা গেছে, সম্প্রতি মুরাদাবাদের ‘টিডিআই সিটি’ আবাসিক এলাকায় ওই বাড়িটি অশোক বাজাজ নামের এক চিকিৎসকের কাছ থেকে কিনেছিলেন ওই মুসলিম দম্পতি। বাড়ি বিক্রির খবর সামনে আসার পর বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিক্ষোভ শুরু করেন এলাকার হিন্দু বাসিন্দারা।
হিন্দু প্রতিবেশীদের দাবি, মোরাদাবাদ এলাকাটি হিন্দু অধ্যুষিত। সেখানে ৪০০-এর বেশি হিন্দু পরিবারের বসবাস। তাই তারা অন্য সম্প্রদায়ের কাউকে সেখানে থাকতে দিতে চান না।
মেঘা আরোরা নামের টিডিএস এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, 'তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে বাড়ি বিক্রি করেছেন অশোক বাজাজ। বাড়িটি স্থানীয় মন্দিরের সামনে। এমন জায়গায় মুসলিম পরিবারের বসবাস মেনে নেবেন না তারা।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এই বাড়ির নতুন মালিকের নামে নিবন্ধন বাতিলের আহ্বান জানিয়েছি। এখানে অন্য কোনো বিশ্বাসের মানুষ আসুক এবং বসবাস করুক, তার অনুমতি আমরা দেব না। আমরা তাদের (মুসলিম দম্পতি) এখানে প্রবেশের অনুমতি দেব না এবং যতক্ষণ তারা না যাবেন বিক্ষোভ চালিয়ে যাব।’
বাড়ির মালিক অশোক বাজাজ জানান, 'শহরের একজন নির্বাচিত প্রতিনিধির মধ্যস্থতায় বাড়িটি নিয়ে তারা একটি সমঝোতায় পৌঁছেছেন। সে অনুযায়ী ওই মুসলিম দম্পতি এলাকার একটি হিন্দু পরিবারের কাছে বাড়িটি বিক্রি করে দেবেন।
এ ঘটনায় ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্কসবাদী) সাংসদ জন ব্রিটাস এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, ‘আমরা সবসময় ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য’ নিয়ে গর্ব করি। কিন্তু এমন ঘটনার জন্য আমাদের লজ্জিত হওয়া উচিত।’
ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা, বিশেষত মুসলিমরা বহু বছর ধরে বৈষম্যের শিকার। বিজেপি শাসনামলে এ ধরনের ঘটনা আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ মানবাধিকার সংস্থাগুলোর। মোরাদাবাদের এই ঘটনাটি কেবল একটি বাড়ি বিক্রি নয়, বরং ভারতে বাড়তে থাকা ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ, যা সংবিধানের মৌলিক মূল্যবোধকেও চ্যালেঞ্জ করে।