জার্মান চ্যান্সেলর মেরকেল এর আত্মজীবনীতে ভারতে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও মোদীর সমালোচনা
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৯ PM , আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৯ PM
সাবেক জার্মান চ্যান্সেলর অ্যান্জেলা মেরকেল আত্মজীবনী নিয়ে সম্প্রতি একটি বই প্রকাশ করেছেন। নাম ‘ফ্রিডম: মেমোরিস ১৯৫৪-২০২১’।
বই এ তিনি প্রকাশ করেন, নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের দ্বারা অন্যান্য ধর্মের মানুষেরা আক্রমণের স্বীকার হয়েছেন। এর মধ্যে মুসলিম এবং খ্রিষ্টান সংখ্যায় ছিলেন বেশি।
মেরকেল তার আত্মজীবনীতে দুই ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী, মনমোহন সিং এবং মোদীর সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা তুলে ধরেছেন। সেখানে প্রধান বিষয় হিসেবে উঠে এসেছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা।
তিনি মনমোহন সিংয়ের সাথে ভারতের ঐক্য ও জাতিগত বৈচিত্র্যের নিয়ে তাদের আলাপের বিষয়ে বইটিতে আলোচনা করেছেন এবং মোদীর প্রশাসনিক জটিলতা কমানোর উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন।
তবে বইয়ে ২০১৪ সাল থেকে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার বৃদ্ধি এবং তা অস্বীকার করায় মুসলিম ও খ্রিস্টানদের ওপর হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের আক্রমণের খবর গুলো স্মরণ করিয়ে দিয়ে মোদীর সমালোচনা করেছেন মেরকেল।
তিনি তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন, আমি উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছিলাম, মোদী ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে অন্যান্য ধর্মের সদস্য, বিশেষত মুসলিম ও খ্রিস্টানদের ওপর হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা আক্রমণ বাড়াচ্ছে।
তিনি আরও লেখেন, যখন তিনি তার ভারত সফরে এই বিষয়টি তুলে ধরেন, মোদী তীব্রভাবে তা অস্বীকার করেন এবং জোর দিয়ে বলেন, ভারত সবসময় ধর্মীয় সহিষ্ণুতা বজায় রাখে এবং ভবিষ্যতেও তা থাকবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, বাস্তবতা ভিন্ন। আমি বিষয়টি নিয়ে একমত হতে পারিনি। আমার উদ্বেগ রয়ে গেছে, কারণ পরিশেষে ধর্মীয় স্বাধীনতা, প্রতিটি গণতন্ত্রের একটি মূল উপাদান।
পক্ষান্তরে মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে আলাপ নিয়ে মেরকেল তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন, ড. সিং তাকে ভারতের সাংস্কৃতিক এবং ভাষাগত বৈচিত্র্যের বিষয়ে জানিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, ভারতের ঐক্য তার জাতি- ভাষাগত বৈচিত্র্যের ভেতরেই নিহিত এই সময় ভারতকে মনমোহন সিং সম্পূর্ণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের তুলনা করেছিলেন।
মেরকেলের আত্মজীবনীটি নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমে আলোচনা হচ্ছে। যেখানে তিনি লিখেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে অস্বস্তিকর সম্পর্কের কারণে ক্যামেরার সামনে তার সঙ্গে হাত মেলাতে অস্বীকার করেছিলেন। তাছাড়া রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তিনি তাদের মিটিংয়ে পোষা কুকুর না আনার জন্য অনুরোধ করেছিলেন, যদিও পুতিন সেই অনুরোধ রাখেননি পরবর্তীতে অবশ্য এ আচরণের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন পুতিন। পরে বিষয়টিকে মেরকেল ‘কুকুরের শক্তিপ্রদর্শন’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।