কেন যুক্তরাষ্ট্র শেখ হাসিনার ভিসা বাতিল করল?

দেশত্যাগী শেখ হাসিনার ভিসা যুক্তরাষ্ট্র বাতিল করে দিয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে। এছাড়া যুক্তরাজ্যও তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে অপরাগতা জানিয়েছে। এখন শেখ হাসিনা ইউরোপের অন্য কোনো দেশ অথবা সংযুক্ত আরব আমিরাতে যেতে পারেন।

গত সোমবার (৫ আগস্ট) ছাত্র ও জনতার তোপের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। সরকারি চাকরিতে থাকা কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন শুরু হলেও এটি হাসিনার পতন ঘটিয়ে দেয়।

বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শেখ হাসিনার বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইসলামী চরমপন্থা রোধে কাজ করেছেন। এছাড়া মিয়ানমার থেকে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তার ক্রমবর্ধমান স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের সমালোচনা শুরু করে। এছাড়া বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রক্ষায় ভিসা নিষেধাজ্ঞার হুমকিও দেয়।

বিশেষ করে গত কয়েক মাসে— যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে থাকা সম্পর্কের মধ্যে অবনতি ঘটে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশের সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ হিসেবেও অভিহিত করে। এছাড়া নির্বাচনের পর রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয় তারা।
এএফপি জানিয়েছে, বাংলাদেশকে তাদের বৈদেশিক নীতির একটি পরীক্ষাগার হিসেবে ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা অব্যাহতভাবে মানবাধিকার, গণতন্ত্রের মূল নীতি এবং বিশেষ করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করেছে। তারা অব্যাহতভাবে বার্তা, রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা, সাধারণ ও ভিসা নিষেধাজ্ঞার কথা বলে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্র শেখ হাসিনার উপর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিল। বিশেষ করে মানবাধিকার নিয়ে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল দেশটি। বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটাস হাস মানবাধিকার নিয়ে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের চাপে একটা সময় মানবাধিকার নিয়ে একটি সেলও গঠন করা হয়। আর এটি পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয় জাতিসংঘকে।

যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে শেখ হাসিনার সমালোচনা
শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার নিয়ে সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, সেখানে স্কুলে ঢুকে যেখানে সেখানে মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন যে, তারা জোরপূর্বক বাংলাদেশে ঘাঁটি স্থাপন করতে চাইছে। যদিও মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

হাসিনা আরও অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার পরিবর্তন করতে চাইছে। যুক্তরাষ্ট্র চাইলেই মুসলিম দেশের সরকার ভেঙে দিতে পারে।

এদিকে বঙ্গোপসাগরের কাছে অবস্থান এবং অর্থনৈতিক প্রতাপের কারণে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে তাদের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের মূল কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করে। বাংলাদেশের সঙ্গে তারা সামরিক তথ্য চুক্তি ও অ্যাকুইজিশন ক্রস-সার্ভিসিং চুক্তি করতে চায়। যেন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে আরও নিরাপদ করা যায়। [সূত্র: এএফপি]


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence