মাঝ আকাশে বিস্ফোরণের ঝুঁকিতে বোয়িংয়ের শত শত বিমান

বোয়িং কোম্পানির তৈরি বিমান
বোয়িং কোম্পানির তৈরি বিমান  © সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অন্যতম উড়জাহাজ প্রস্তুতকারক কোম্পানি বোয়িংয়ের তৈরি বিমান। তবে এবার কোম্পানিটি নিয়ে এসেছে ভয়ংকর তথ্য। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বোয়িং ৭৭৭ সিরিজের অন্তত ৩০০টি বিমান উড্ডয়নরত অবস্থায় মাঝ আকাশে বিস্ফোরণের ঝুঁকিতে রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের বিমান পরিষেবা বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউএস ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিবৃতিতে জানিয়েছে, বোয়িংয়ের ৭৭৭ সিরিজের অন্তত ৩০০ বিমান মাঝ আকাশে উড্ডয়নের ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব বিমানকে ত্রুটিযুক্ত বলে শনাক্ত করা হয়েছে এগুলোর সবই যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ রুটে পরিচালিত হয়ে আসছে। এ তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্য যেসব দেশে বোয়িং ৭৭৭ সিরিজের বিমানগুলোকে রয়েছে তাদের যুক্ত করা হয়নি। মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থাকা একই সিরিজের অন্য বিমানগুলো ঝুঁকির বাইরে নয়।

এফএএ জানিয়েছে, সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছে ৭৭৭ সিরিজের ৭৭-২০০, ২০০ এলআর, ৭৭৭-৩০০, ৩০০ ইআর এবং ৭৭৭ এফ উপসিরিজের বিমান।

বাংলাদেশের সরকারি উড়োজাহাজ পরিষেবা সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিজস্ব ১৬টি বিমানের রয়েছে। এরমধ্যে চারটি বিমান ৭৭৭-৩০০ সিরিজের। ছোট ছোট যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ঝুঁকিতে পড়ছে বিমানগুলো।

এই সংস্থার তথ্যমতে, বিমানগুলোর জ্বালানি ট্যাংক শীতল এবং ঝুঁকিমুক্ত রাখতে যে প্রযুক্তি বা ইগনেশন সোর্স ব্যবহার করা হয়েছে তা অত্যন্ত দুর্বল। ফলে ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হলে তা জ্বালানি ট্যাংকে প্রভাব ফেলতে পারে। এতে করেই মাঝ আকাশে ঝুঁকিতে পড়বে বিমানগুলো।

এফএএ জানিয়েছে, এ সমস্যার জন্য দায়ী বিমানের ফুয়েল ট্যাংকের ভেতরে থাকা ত্রুটিপূর্ণ ইগনিশন সোর্স। এছাড়া তারা অবিলম্বে বোয়িং কর্তৃপক্ষকে ৭৭৭ সিরিজের সব বিমান পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে।

১৯১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল শহরে বোয়িং কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে এর সদরদপ্তর ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের আর্লিংটনে স্থানান্তর করা হয়।

১০০ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও দাপট দেখাচ্ছে কোম্পানিটি। যুক্তরাষ্ট্রের দুই শীর্ষ বিমান পরিবহন সংস্থা আমেরিকান এয়ারলাইন্স এবং ইউনাইটেড এয়ার‌লাইন্সের সব অপারেশন বোয়িং সিরিজের বিমান দিয়ে পরিচালনা করে আসছে।

২০২১ সালে বোয়িংয়ের ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের তদন্ত শেষে ওই বছরই ড্রিমলাইনার সিরিজের বিমান তৈরি স্থগিতের নির্দেশ দেয় এফএএ। এ ছাড়া এই সিরিজের সব বিমান গ্রাউন্ডেড করে যথাযথ পরীক্ষা এবং ত্রুটি সারানোর দেয় নির্দেশ দেয় এফএএ।

এরপর ২০২৩ সালের শেষদিকে ৭৭৭ সিরিজের বিমানের বিরুদ্ধেও যান্ত্রিক ত্রুটির অভিযোগ ওঠে। ফলে এটি নিয়ে জানুয়ারি থেকে তদন্ত শুরু করে এফএএ। বৃহস্পতিবার এ তদন্তের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ