নারী স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলায় তরুণীর ১১ বছরের জেল

কারাদণ্ড হওয়া তরুণী
কারাদণ্ড হওয়া তরুণী  © সংগৃহীত

নারীর স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলায় এক তরুণীকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে সৌদি আরবের একটি আদালত। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথমে মানাহেল আল-ওতাইবিকে গোপনে কারাদণ্ড দেওয়া হলেও পরে তা স্বীকার করে সৌদি কর্তৃপক্ষ। দেশটি জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে স্বীকার করে যে, চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি আল-ওতাইবিকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সৌদি সরকারের দাবি, ওই তরুণী যা করেছেন তা দেশটির আইন অনুসারে ‘সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড’। 

মানাহেল আল-ওতাইবি একজন স্বীকৃত শরীরচর্চা প্রশিক্ষক। তিনি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টগুলোতে প্রায়ই নারীর ক্ষমতায়নের পক্ষে কথা বলতেন। সর্বশেষ ২০২২ সালের নভেম্বরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে সৌদি আরবের সন্ত্রাসবাদবিরোধী আইনের একটি ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। সেই ধারা অনুসারে, কেউ অনুমোদন ছাড়া কোনো ওয়েবসাইট ব্যবহার করে সংবাদ, বিবৃতি, মিথ্যা বা গুজব সম্প্রচার বা প্রকাশ করলে তা সন্ত্রাসবাদ বলে গণ্য হবে। 
 
সৌদি এই তরুণীর বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ হলো— তিনি #সোসাইটিইজরেডি নামে একটি হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারীদের ওপর পুরুষ অভিভাবকত্ব বাধ্যতামূলক করার আইন বাতিলের পক্ষে কথা বলছিলেন। 

মানাহেল ছাড়াও তার বোন ফৌজ আল-ওতাইবির বিরুদ্ধে শালীন পোশাক না পরার অভিযোগ তুলেছিল সৌদি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাকে গ্রেফতারের আগেই তিনি দেশ ছেড়ে চলে যান। তাদের বড় বোন মারিয়ামও নারী অধিকারের পক্ষে কথা বলায় কারাগারে বন্দি হন। পরে তাকে ২০১৭ সালে মুক্তি দেওয়া হয়। তিনিও বাধ্যতামূলক পুরুষ অভিভাবকত্ব আইন বাতিলের দাবি করেছিলেন।

সৌদি আরব সম্পর্কে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রচারক বিসান ফাকিহ বলেছেন, ‘সৌদি কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তাদের বহুল আলোচিত নারী অধিকার সংস্কারের প্রতি ফাঁকা অঙ্গীকার প্রদর্শন করেছে। শান্তিপূর্ণ ভিন্নমতকে নীরব করার প্রচেষ্টা জারি রেখেছে।’

অ্যামনেস্টি এবং ALQST আল-ওতাইবি প্রসঙ্গে বলে, ‘এই মানবাধিকার কর্মী ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ‘আমূল সংস্কারের একজন সোচ্চার সমর্থক ছিলেন, যিনি  নারীদের জন্য পোষাকের   বিধিনিষেধ শিথিল করেছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ