১০০ বছরে মারা গেছেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার

সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার
সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার  © সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্ষীয়ান কূটনীতিক হেনরি কিসিঞ্জার মারা গেছেন। এ সময় তার বয়স হয়েছিল ১০০ বছর ছয় মাস। চলতি বছর ২৭ মে এক’শ বছর পূর্ণ করেন বর্ষীয়ান এই কূটনীতিক। জার্মান বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিক বিভিন্ন সময় সেনা সদস্য, গোয়েন্দা কর্মকর্তা, হার্ভাড ছাত্র ও কূটনীতিক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) কানেকটিকাটে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। খবর সিএনএন। বিবৃতিতে জানানো হয়, কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি।

১৯২৩ সালের ২৭ মে জার্মানির এক ইহুদি পরিবারে জন্ম কিসিঞ্জারের। পরে তাঁর পরিবার পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যায়। ওই শহরেই বেড়ে ওঠেন কিসিঞ্জার। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ও জেরাল্ড ফোর্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার। অনেকেই কিসিঞ্জারের নানা বিতর্কিত ভূমিকার জন্য তাঁকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ বলে অভিযুক্ত করে থাকেন।

অনেকের কাছে নন্দিত হলেও কারও কারও কাছে নিন্দিত হয়ে আছেন তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব রাজনীতিতে শান্তির বার্তার বাহক যুক্তরাষ্ট্র তার নেতৃত্বে ফের সর্বোচ্চ শক্তিধর রাষ্ট্রের প্রভাব বলয় নিয়ে সক্রিয় হয় বিশ্বরাজনীতিতে। কোনও সময় নৈতিক কূটনীতির বাহক হলেও কখনও আবার বিভিন্ন দেশে উসকে দিয়েছেন বৈপ্লবিক সংগ্রাম ও ইন্ধন দিয়েছেন সামরিক জান্তা সরকারকে।

জার্মানির শহর নুরেমবার্গের অদূরে জার্মান-ইহুদি মা-বাবার সন্তান হেনরি কিসিঞ্জারের জন্ম। নাৎসি জামার্নির শাসনামলে তাদের শিশুদের সঙ্গে জোরপূর্বক ফুটবল খেলায় অংশ নিতে চাইত না শিশু কিসিঞ্জার। সেই সঙ্গে ইহুদিদের ওপর নাৎসিদের চাপিয়ে দেয়া বিধিনিষেধের প্রতিবাদ করতেন শিশু বয়স থেকে।

তবে তার মানসিক শক্তি ও কাজের যোগ্যতা প্রকাশিত হয় ত্রিশ দশকের শুরুতে শরণার্থী হয়ে যখন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। সেখানে একটি নৈশ স্কুলে ভর্তি করা হয় তাকে। দিনের বেলায় শেভিং ব্রাশ তৈরির কারখানায় কাজ করত সে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার

এসময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঘনঘটায় তার উচ্চশিক্ষায় বাধা হয়ে আসে। এ সময় সমরকালীন বিশেষ সেনা হিসেবে কাজে যোগ দেন তিনি। পরে তাকে পদোন্নতি দিয়ে প্রশাসনিক কাজে নিয়ে আসা হয়। এভাবে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তার অনুরাগ ও আনুগত্য বাড়তে থাকে। নিজেকে মূল আমেরিকান হিসেবে ভাবতে শুরু করেন তিনি।

১৯৬৯ সালে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়ার পর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তার উচ্চশিক্ষা এ ক্ষেত্রে তাকে নানানভাবে সহায়তা করে।

উনিশ শতকের বৈশ্বিক রাজনীতি ও নব্য সাম্রাজ্যবাদের চর্চায় তার বাস্তবধর্মী নীতিমালা হয়ে ওঠে মূল দর্পন। ১৯৭৩ সালে হেনরি কিসিঞ্জারকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়াকে তার নেয়া অভিনব কূটনীতিক কৌশলের প্রতি রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি হিসেবে দেখছেন অনেকে। সেই বছরই মধ্যস্থতার মাধ্যমে সংঘাত নিরসনে তার নেয়া শাটল ডিপ্লোম্যাসি বিশ্বরাজনীতে নিয়ে আসে সব নাটকীয় পরিবর্তন ও সূত্রপাত করে নতুন ধারার।

কম্বোডিয়া ও লাওসে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সম্প্রসারণ, চিলি ও আর্জেন্টিনায় সামরিক অভ্যুত্থানে সমর্থন, ১৯৭৫ সালে পূর্ব তিমুরে ইন্দোনেশিয়ার রক্তক্ষয়ী অভিযানের পক্ষে অবস্থান নেওয়া এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর ব্যাপক নৃশংসতার বিষয়ে চোখ বন্ধ রাখা—এসব অভিযোগ রয়েছে কিসিঞ্জারের বিরুদ্ধে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence