পশ্চিমবঙ্গের বন্দুক হাতে স্কুলে ঢুকে পড়লেন এক যুবক, সঙ্গে পেট্রোল বোমা-চাকুও

  © সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্কুলে বন্দুকধারীর হামলার ঘটনা অহরহ ঘটে। এবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের স্কুলেও বন্দুকধারীর হামলা ঘটনা ঘটেছে। বন্দুক হাতে স্কুলের ক্লাসরুমের মধ্যে ঢুকে পড়েন এক যুবক। সশস্ত্র অবস্থায় ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের পণবন্দি করেন তিনি। আজ বুধবার দুপুরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা ছড়ায় পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাইস্কুলে।

শুধু বন্দুক নয়, সেই যুবকের সঙ্গে ছিল অ্যাসিডের বোতল, পেট্রোল বোমা ও ধারালো অস্ত্র (চাকু)। যা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। স্কুলের বাইরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে অভিভাবকদের মধ্যেও। দীর্ঘ প্রায় এক ঘণ্টা তীব্র উত্তেজনা উৎকণ্ঠা শেষে পুলিশকর্মীদের সাহসিকতায় কোনো প্রাণহানি ছাড়াই ধরা পড়েন ওই ব্যক্তি। কী উদ্দেশ্যে স্কুলে চড়াও হয়েছেন, তা পরিষ্কার করে জানা যায়নি।

বন্দুকধারীকে ধরতে সাহসী ভূমিকা রাখায় প্রশংসায় ভাসছেন মালদহের ডিএসপি (ডিএনটি) আজহারউদ্দিন খান।

বুধবার দুপুরে অন্যান্য দিনের মতোই ক্লাস চলছিল মালদা শহরের ওই স্কুলে। তখনই কাঁধে ব্যাগ, দুই হাতে দুটি পিস্তল, দুটি বোতল ও পায়ে ধারালো অস্ত্র বেধে স্কুলে ঢুকে পড়েন ওই ব্যক্তি। জানা যায়, বোতলগুলোতে অ্যাসিড ও পেট্রোল বোমা ছিল। অস্ত্র হাতে ছাত্রদের রীতিমতো ভয় দেখিয়ে ‘পণবন্দি’ করে রাখে। বন্দুক উঁচিয়ে রীতিমতো শাসানি দিতে থাকেন বন্দুকধারী। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ক্লাসের মধ্যে তাণ্ডব চালান তিনি। যা দেখে আতঙ্কে কাঁপতে থাকে শিক্ষার্থীরা। প্রাণভয়ে চোখ-মুখে তখন আতঙ্ক। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে মালদা থানায় খবর দেন শিক্ষকেরা। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পৌছায় পুলিশ।

এরপর নানারকম ব্যক্তিগত সমস্যার কথা বলতে শুরু করেন ওই ব্যক্তি। ওই যুবকের দাবি, তিনি কোনো একজন ছাত্রের বাবা। তাঁর ছেলে নিখোঁজ। ছেলেকে খুঁজে দিতে হবে বলেই তিনি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভয় দেখাতে শুরু করেন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পুলিশ ওই বন্দুকধারীকে শান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। এরই মধ্যে বন্দুকের নল উপেক্ষা করে এক পুলিশ সদস্য গিয়ে ওই ব্যক্তিকে জাপটে ধরেন। পেছন পেছন ছোটেন বাকি পুলিশ সদস্যরাও। আগ্নেয়াস্ত্রগুলো উদ্ধার করে আটক করা হয় ওই ব্যক্তিকে। অন্য পুলিশ সদস্যরা নিরাপদে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস থেকে বের করে আনেন। এরপর বন্দুকধারীকে নিয়ে যাওয়া হয় মালদা থানায়। 

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের দাবি ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন। স্থানীয়রা জানিয়েছে, ওই যুবকের নাম দেব বল্লভ রাই, তিনি স্থানীয় বিজেপি কর্মী। জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে কেন ওই ব্যক্তি বন্দুক নিয়ে স্কুলে ঢুকলেন তা জানার চেষ্টা চলছে। বন্দুকগুলো আসল কিনা তাও জানার চেষ্টা চলছে এবং ওই ব্যক্তির সঙ্গে থাকা বোতলে কী তরল রয়েছে তাও পরীক্ষা করে দেখা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।  

সন্তান বিপদে পড়ার খবর পেতেই স্কুলে ছুটে আসেন অভিভাবকরা। স্কুলের সামনে ভিড় জমান তারা। তাঁদের চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ। চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে এক ঘণ্টা কাটান তাঁরা। সন্তানের মুক্তি অপেক্ষা করতে থাকেন।স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় শিক্ষাঙ্গনের নিরাপত্তা নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মালদা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এর আগেও গ্রেপ্তার হয়েছিল এই বন্দুকধারী। সোশ্যাল মিডিয়ায় হুমকি দিয়ে গ্রেপ্তার হয়।

ঘটনা নিয়ে স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, আমি বাংলা ক্লাস নিচ্ছিলাম সেভেনে। ক্লাসে স্কুলে ৭০ থেকে ৮০ জন শিক্ষার্থী ছিল। তখন সেই যুবক ঢোকে। সে জানায়, তার ছেলে নিখোঁজ। তাই তিনি এসেছেন স্কুলে। নিজের ছেলেকে দেখতে না পেলে তিনি বাচ্চাদের ক্ষতি করে দেবে। আমাকে বন্দুক দেখিয়ে বলে একদম নড়বেন না চুপ থাকুন। এমনকি শিক্ষার্থীদের বন্দুক দেখিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি বোমা বিস্ফোরণের হুমকি দেয় যুবক। তাকে পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্যহীন বলা যাবে না।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence