কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হবে

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভাবনায় বিজয় দিবস
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভাবনায় বিজয় দিবস  © টিডিসি ফটো

আগামীকাল শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখন্ডের নাম জানান দেয়ার দিন। এ দিনকে নিয়ে নিজেদের অভিমত জানিয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা। তাদের কথাগুলো শুনেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি—হুমায়রা রহমান সেতু

রাজনীতি হোক জনকল্যাণমূলক
বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছে সুদীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। পরাজিত শক্তির নীল নকশাকে নস্যাৎ করে আমরা পেয়েছি নিজের মতো বাঁচার অধিকার। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে সুখ্যাতি লাভ করেছে ঠিকই; তবে পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থা জনতার গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে টুঁটি চেপে হত্যা করছে।

স্বার্থবাদী এ শক্তির নোংরা রাজনীতি দেশকে অস্বস্তিকর করে তুলছে। স্বাধীনতার সঠিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সুশাসন পূর্ণনিশ্চিত করতে হবে। দেশের জনগনকে বর্তমান এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে বিজয় দিবসকে আবারো প্রতিবাদের শক্তি হিসেবে জাগরিত করতে হবে। রাজনীতি হোক জনকল্যাণ মূলক।

নীল খাকসি 
রসায়ন বিভাগ
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় 

কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হবে
৭১-মানে বাঙালিদের কাছে এক চেতনা। এ চেতনাকে লালন করেই দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু কিছু অশুভ শক্তির কাছে স্বাধীনতার ৫২ বছরেও বিজয়ের ভুল অর্থটা বিরাজ করছে।

বিজয় মানে রাস্তায় হেঁটে চলা নারীদের অকথ্য ভাষায় উত্যক্ত করা নয়, বিজয় মানে কোমল শিশুদের দিকে কুকুরের নজরে তাকানো নয়, বিজয় মানে অন্যের অধিকার কেড়ে নিয়ে উম্মাদের মতো পূর্তি করা নয়, বিজয় মানে মুখ চেপে ধরে বাক স্বাধীনতা হরণ করা নয়—বিজয়ের হলো জনতার চোখে সোনালী স্বপ্ন। মুক্ত আকাশে নির্মল বাতাস, সুশ্রী মুখের হাসি। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে তাই একটাই প্রত্যাশা, কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হবে।

মো. হাবিবুর রহমান
বিবিএ বিভাগ
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি

স্বনির্ভর বাংলাদেশ চাই
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিনটি ছিল বাঙালির বহু ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সাধনার ফল। এর মাধ্যমে নির্যাতন, বঞ্চনা-লাঞ্চনা থেকে বেরিয়ে নিজদের মতো বেঁচে থাকার এক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গুটিগুটি পায়ে এখন আমরা ১৭ কোটি জনতার দেশে উপনিত হয়েছি।

এবার এগিয়ে যাওয়ার পালা। নিজেদের সক্ষমতাকে সর্বোচ্চ কাজে লাগিয়ে যতদূর সম্ভব পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্মাণ করতে হবে। কারো মুখাপেক্ষী নয়, কারো দয়া-মায়ায় বেঁচে থাকা না স্বয়ংসম্পূর্ণ এক আধুনিক রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কৃষি, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা সর্বক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়ন আমাদের স্বনির্ভর বাংলাদেশে পরিণত করবে।

মৌমিতা জামান
মেডিকেল ফিজিক্স অ্যান্ড বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
গণ বিশ্ববিদ্যালয়

সমতাভিত্তিক উন্নয়ন হোক লক্ষ্য
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে আমরা স্বীকৃতি পেয়েছি। পররাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে মুক্ত হয়ে স্বকীয় ভাষা ও সংবিধান নিয়ে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বিষ্ময়। যুদ্ধের বিভীষিকাময় অধ্যায়কে ছাপিয়ে উন্নয়নের মহাসড়কে দেশ মাতৃকা।

তবে, জনতার ছেঁড়া পকেটে তালি দিয়ে উন্নয়ন কখনো তার স্বকীয়তা অর্জন করতে পারে না। তাই, সমতা ভিত্তিক উন্নয়ন হোক লক্ষ্য৷ এক উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় দেশ গড়ার স্বপ্নসূচিত হোক শ্রেণী, ধর্ম, বর্ণ গোত্র, জাতির সম অধিকারের ভিত্তিতে। সমতার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিশ্বের বুকে আরেক বিষ্ময় সৃষ্টি করুক সোনার বাংলা।

মো. আনোয়ারুল আবদীন অনিক
ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি


সর্বশেষ সংবাদ