‘রিতু-হিয়ার মৃত্যু নিছকই একটি দুর্ঘটনা নয়’

অনন্যা হিয়া ও তাসফিয়া জাহান রিতু
অনন্যা হিয়া ও তাসফিয়া জাহান রিতু  © ফাইল ছবি

আজকে রিতু-হিয়ার মৃত্যুটা নিছকই একটি দুর্ঘটনা নয়। কোনো সান্ত্বনা হয় এর? কী জবাব আছে আমাদের এই হতভাগ্য পরিবারগুলোর কাছে দেওয়ার? পরিবার ছেড়ে এসে বাচ্চাগুলো আমাদের অভিভাবকত্বের অধীন ছিল আর আমরা কী করছি? কী দায়িত্ব পালন করতে পারলাম?

নিদেনপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়টা একটু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে পারি নাই, শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে অক্সিজেন সাপ্লাই দেওয়ার জন্য কোনো ব্যবস্থা রাখতে পারি নাই। তাই এই মৃত্যুকে কোনোভাবেই দুর্ঘটনা বলা যায় না, এটা স্পষ্ট দায়িত্বের গাফিলতি বৈ আর কিছুই না। স্বীকার করতেই হবে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়টাই এখন একটা মরণ-ফাঁদ হয়ে উঠেছে! 

লেকটা অরক্ষিত, ছাদগুলো দুর্ঘটনাপ্রবণ, রাস্তাগুলো ব্যবহার-অযোগ্য, মাঠগুলো সাপ-খোপের অবাধ বাসস্থল! অথচ প্রশাসন থাকে ঘুমিয়ে। বললেও কানে তোলে না কোন কথা। একের পর এক নিউজ হয়েছে মেডিক্যালে ডাক্তার-ঔষধ-চিকিৎসা সংকট, নির্মাণাধীন ভবনগুলোর ছাদ অরক্ষিত, রাস্তাগুলো ব্যবহার করার মতন নেই, মাঠগুলোতে পানি-কাদায় একাকার সেখানে অহরহ বিষধর সাপের আনাগোনা দেখা যায়। কোনো নিউজ এদের টনক নড়াতে পারে না। 

এদিকে কোনো অসঙ্গতি নিয়ে আমরা শিক্ষকেরা কথা বললে আমাদের নিয়ে সর্বোচ্চ মহল পর্যন্ত বিচার চলে যায় লিখিত ও মৌখিক! ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে আমাদের চরিত্র আর কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করে এবং কীভাবে আমাদের দমন-পীড়ন করা যায় এর ফন্দি-ফিকির করে। এইতো এখানকার কর্তৃপক্ষের কাজ, এইসব দায়িত্বের কাজগুলো দেখার সময় তাদের কোথায়? 

ভাবছি এখন আর এসব বলে কী হবে? আজ পর্যন্ত তো কিছু হলো না! এত ব্যাপক আন্দোলনের পরেও যদি সর্বোচ্চ মহল বিশ্ববিদ্যালয়টার ভালোর কথা ভেবে সিদ্ধান্ত না নেয়, তবে আর কাকে কী বলার আছে? শিক্ষার্থীরা তো তবুও বলতে পারে, আর আমরা শিক্ষকেরা হলাম ঢাল নেই তলোয়ার নেই একেকজন নিধিরাম সর্দার!

অবশ্য কিছু ব্যক্তি এর ব্যতিক্রম আছেন, তাদের অতিকথনের ক্ষমতার জেরে কোনো কাজই সফলতার মুখ দেখে না শেষ অবধি! দুর্ভাগ্য এদের চেহারা উন্মোচনের সুযোগ নাই, বহু সমর্থক জুটে যায় মুহুর্তেই। কেননা এরা মানুষ বোঝে না, বোঝে শুধু রাজনীতি! ফলে এতটাই হর্তাকর্তা এরা সর্ব-মহলে! 

কিছু বলার আছে? কিছুই বলার নাই। কার কাছে প্রতিকার চাইবো? সর্বশেষে শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি শোক ও সমবেদনা রইলো।

লেখক: সাধারণ সম্পাদক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতি।


সর্বশেষ সংবাদ