শিক্ষক সংকট দূর না হওয়ার কারণ জানাল এনটিআরসিএ

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক ও এনটিআরসিএ লোগো
শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক ও এনটিআরসিএ লোগো  © ফাইল ছবি

দেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৮০ হাজার শূন্যপদ রয়েছে। এ পদগুলো পূরণে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও শিক্ষক সংকট কাটছে না। অথচ দেশের সিংহভাগ শিক্ষার্থীই এসব প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করেন। 

বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশ করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ বা এনটিআরসিএ। শিক্ষক সংকট কেন যাচ্ছে না এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে প্রতিষ্ঠানটির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস।

তারা বলছেন, নানা কারণে শিক্ষক সংকট কাটছে। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ই-রেজিস্ট্রেশন না করা, শূন্যপদের তথ্য না দেওয়া, যতগুলো শিক্ষক প্রয়োজন তার চেয়ে অধিক চাহিদা দেওয়া অন্যতম। এই কাজগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন হলে একদিকে যেমন শূন্য পদের সংখ্যা কমত অন্যদিকে প্রার্থীদের ভোগান্তিও কম হত।

শিক্ষক সংকট দূর না হওয়ার কারণ জানাতে গিয়ে এনটিআরসিএ’র শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামান শাখার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযক্তি, ভৌত বিজ্ঞান, চারু ও কারুকলা, আইসিটি লেকচারার, সহকারী মৌলভী ও ইবতেদায়ী মৌলভী পদে প্রার্থী সংখ্যা কম। এছাড়া নারী কোটায় অনেক পদ ফাঁকা থাকে। এজন্য মূলত শিক্ষক সংকট দূর করা যাচ্ছে না।’

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ‘নারী প্রার্থীরা নিয়োগ সুপারিশ পেলেও স্বামীর কর্মস্থলের জেলার প্রতিষ্ঠান না হলে যোগদান করতে চান না। অনেক পুরুষ প্রার্থী নিজ বাড়ি থেকে দূরত্ব বেশি হওয়ায়, সুযোগ-সুবিধা খারাপ এমন প্রতিষ্ঠানে সুপারিশ পেলেও যোগদান করেন না। এছাড়া মাদ্রাসার কয়েকটি বিষয়ের প্রার্থীরা প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেন না। যার কারণে পদ থাকলেও প্রার্থী পাওয়া যায় না। এসব কারণে মূলত শিক্ষক সংকট দূর করা সম্ভব হচ্ছে না।’

ই-রেজিস্ট্রেশন করেনি ৩ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান

বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য হালনাগাদের (ই-রেজিস্ট্রেশন) কার্যক্রম শেষ হয়েছে। ২৮ হাজারের বেশি স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠান ই-রেজিস্ট্রেশন করলেও প্রায় ৩ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথ্য হালনাগাদ করেনি। এই প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষক নিয়োগের চাহিদাও দিতে পারবেন না।

বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে ৩১ হাজার ৮২৬টি। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) আওতাধীন স্কুল ১৭ হাজার ৬৩৪টি, কলেজ ২ হাজার ৮৬৮, মাদ্রাসা রয়েছে ৯ হাজার ১০২টি এবং কারিগরি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২ হাজার ২২২টি। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৩ হাজারের কিছু বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ই-রেজিস্ট্রেশন করেননি।

প্রসঙ্গত, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শূন্যপদের তথ্য এনটিআরসিএকে জানানোর প্রথম ধাপ ই-রেজিস্ট্রেশন। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ই-রেজিস্ট্রেশন করেনি তারা শিক্ষক নিয়োগের জন্য শূন্যপদের চাহিদাও (ই-রিকুজিশন) দিতে পারবে না। ফলে ৩ হাজার প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক স্বল্পতায় পাঠদান ব্যাহত হলেও সরকারের কিছুই করার থাকবে না। এসব প্রতিষ্ঠান কেন ই-রেজিস্ট্রেশন করেনি সেটি জানান সম্ভব হয়নি। 


সর্বশেষ সংবাদ