তৃতীয় লিঙ্গের জন্য নতুন শিক্ষাক্রমে যা থাকছে

তৃতীয় লিঙ্গের জন্য নতুন শিক্ষাক্রমে যা থাকছে
তৃতীয় লিঙ্গের জন্য নতুন শিক্ষাক্রমে যা থাকছে  © ফাইল ফটো

আগামী বছর থেকে শুরু হচ্ছে তৃতীয় লিঙ্গের জন্য নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষাদান র্কমসূচী। এজন্য পরীক্ষামূলক ফ্রেমওয়ার্কও তৈরি করেছে বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষার্বোড।

তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের র্দীঘদিনের আন্দোলন এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

রাজবাড়ীর রূপান্তরিত নারী তানিশা ইয়াসমিন চৈতি, পুরুষ হিসেবে জন্ম নিয়েছিলেন তিনি। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত সেই পরিচয়েই পড়ালেখা করেন।

কিন্তু এরপর রুপান্তরিত হলে বিপত্তি ঘটে সার্টফিকেটে নাম পরিবর্তন করতে গিয়ে।

তিনি বলেন, এইচএসসির পর ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে অনেক দৌড়াদৌড়ি করেও কোনও লাভ হয়নি। শেষ পর্যান্তও তৃতীয় লিঙ্গ হিসাবে সার্টিফিকেটে নাম পরিবর্তন করা যায়না। সার্টিফিকেটে তার নাম পরিবর্তন করা যায়নি। যে কারণে পরর্বতী পড়াশোনায় অংশ নিতে পারেনি তিনি।

এর জন্য নিদির্ষ্ট কোনো ব্যবস্থা নেই বলে তাকে জানিয়েছিল শিক্ষাবোর্ড।

তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, যদি একজন মানুষ ছেলে হিসেবে শিক্ষাজীবন শুরু করে এবং এক পর্যায়ে নিজের পরিচয় নারীত পরিবর্তন করতে চাই তাহলে সেটার জন্য একটি সুব্যবস্থা থাকার দরকার।

হিজড়াদের অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারী সংগঠন 'সম্পর্কের নয়া সেতু'র সভাপতি জয়া শিকদার বলেন, ‘‘১৮ বছর বয়সের পর যদি কেউ মনে করে আমার শরীর পুরুষের কিন্তু আমি নারী। সে নারীর পোশাক পরতে পারে, সার্জারির মাধ্যমে নারী থেকে পুরুষ বা পুরুষ থেকে নারী হতে পারে। কিংবা কিছু নাও করতে পারে। বিষয়টা পুরোটাই মনস্তাত্ত্বিক।”

এছাড়া আরও বলেন, সরকারি সব নথিতে নিজের পছন্দের পরিচয় নির্বাচনের সুযোগ থাকতে হবে, তাহলেই একজন মানুষ, সে যেই লিঙ্গেরই হোক না কেন, রাষ্ট্রের সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবে।

এই সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষাক্রম এবং পাঠ্যপুস্তক বোর্ড তাদের শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আনে।

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার সময় সবার মত তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিরাও নিজের পরিচয় ব্যবহার করেই ভর্তি হতে পারবেন।

এ বিষয় জাতীয় শিক্ষাক্রম এবং পাঠ্যপুস্তক বোর্ড জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো এখন থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার সময় প্রত্যেকে তার নিজের পরিচয় ব্যবহার করে ভর্তি হতে পারবে। খবর বিবিসি বাংলার।

এনসিটিবির অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলছেন, যে যে পরিচয় দিতে চায় সে পরিচয়ে ভর্তি হবে পারবেন। এছাড়া সব রকম ফরম, সেটা ভর্তি ফরম হোক আর যেকোনো ফরম হোক, সেখানে নারী-পুরুষের পাশাপাশি তৃতীয় লিঙ্গ এই কথাটা থাকতে হবে।

২০২২ সাল থেকে নতুন শিক্ষা পদ্ধতিতে তারা পরীক্ষামূলকভাবে পাঠ্যসূচি চালু করার ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করেছে। পরবর্তীকালে এর খুঁটিনাটি বিষয় যোগ হতে পারে। সরকার ২০১৩ সালে হিজড়াদের তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি দেয়। তারা ২০১৯ সালে জাতীয় পরিচয়পত্রে তৃতীয় লিঙ্গে পরিচয় দিতে পারেন, একই সঙ্গে ভোট দেওযার অধিকার পান। এখন নতুন এই শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রথমবারের মতো তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করতে পারবে।


সর্বশেষ সংবাদ