গবেষণাপত্র প্রকাশনায় এগিয়েছে বাংলাদেশ, শীর্ষস্থানে ঢাবি

এশিয়ায় তৃতীয় বাংলাদেশ
এশিয়ায় তৃতীয় বাংলাদেশ  © প্রতীকি ছবি

গবেষণাপত্র প্রকাশে অনেক এগিয়েছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি বছরে বাংলাদেশি গবেষকদের ১১ হাজারের বেশি বৈজ্ঞানিক প্রকাশনা প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত। এই সংখ্যা ২০২০ সালের চেয়ে প্রায় ২ হাজার বেশি। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এটি যথেষ্ট নয়।

অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকে প্রায় একই অবস্থানে থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় গবেষণা প্রকাশে প্রথম স্থানে ভারত। গত বছর দেশটিতে গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৮৪৯ টি। ২০২০ সালে গবেষণাপত্র প্রকাশ হয়েছিলো ১ লাখ ৯৯ হাজার। ৩৫ হাজার ৬শ ৬৩ টি গবেষণা প্রকাশ করে দ্বিতীয় অবস্থানে পাকিস্তান। ২০২০ সালে দেশটিতে গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিলো ২৮ হাজারের বেশি।

বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান উভয়ের মধ্যে গবেষণাপত্র প্রকাশে শীর্ষস্থানে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ২৪৬টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৫০০ বেশি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ৬৯৩টি প্রকাশনা নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে নেমেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ স্থান অর্জন করেছে, আর বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ২০২০ সাল থেকে দুই ধাপ উপরে উঠে ৫ম স্থানে রয়েছে।

সবচেয়ে বেশি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের ফার্মাসি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক তালহা বিল ইমরানের। 

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ২০২১ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৯ সালে দেশের ১২৫টি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণায় ব্যয় করেছে ১৫৩ কোটি টাকা। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে গবেষণায় ব্যয় করেছে ১.২২ কোটি টাকা। এই অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বার্ষিক ব্যয়ের মাত্র ১ শতাংশ। ২০১৯ সালে বেসরকারিভাবে পরিচালিত ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণায় ব্যয় করেছে ৩৭.৯ কোটি টাকা। ২০১৯ সালে ১০ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণায় যে অর্থ ব্যয় করেছে তার চেয়েও ৫ কোটি টাকা বেশি ব্যয় করেছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।

বাংলাদেশ একাডেমি অফ সায়েন্সেসের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. এম শমসের আলী বলেন, দেশে বর্তমানে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের সংখ্যা যথেষ্ট নয়। এটা খুবই নগণ্য একটি সংখ্যা। আর গবেষণা না বাড়ার বড় কারণ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণার ক্ষেত্রে বাজেট না থাকা। এই অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আমাদের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু মাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।

শিক্ষাবিদ এবং বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলতে গবেষণার জন্য কম অর্থ ব্যয়ের ফলে গবেষণা কাজ অপর্যাপ্ত হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রবীণ বিজ্ঞানী এবং পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ডঃ সালেহ হাসান নকিব বলেন, "একটি অনুষদের বছরে অন্তত একটি বা দুটি মানসম্পন্ন গবেষণা প্রকাশনা প্রকাশ করা উচিত। কিন্তু গড়ে আমরা তা করতে পারি না। আমরা যোগ্য ব্যক্তিদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছি না। দুর্নীতির কারণে অনেক নিয়োগ প্রশ্নবিদ্ধ। এছাড়া প্রকাশনা ছাড়াই একজন শিক্ষককে সহজেই পদোন্নতি দেওয়া যায়।

বাংলাদেশে গবেষণাপত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে সব চেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছে চীন। বাংলাদেশের গবেষকদের সর্বোচ্চ সংখ্যক নিবন্ধ প্রকাশিত শীর্ষ সাতটি জার্নাল হল: হেলিয়ন, প্লস ওয়ান, সাসটেইনেবিলিটি সুইজারল্যান্ড, সায়েন্টিফিক রিপোর্টস, আইইইই অ্যাক্সেস, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড পলিউশন রিসার্চ, ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিক হেলথ।

স্কোপাস ডাটাবেস অনুসারে, বাংলাদেশীদের জন্য প্রকাশনার শীর্ষ তিনটি বিষয় হল প্রকৌশল (১০.৭%), চিকিৎসা (১০.৪%), এবং কম্পিউটার বিজ্ঞান (৯.৬%)।

 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence