‘নিখোঁজ’ সেই পুলিশ সদস্য এখন নেদারল্যান্ডসে হোটেল বয়!
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২২, ০১:০২ AM , আপডেট: ২৩ আগস্ট ২০২২, ০১:০২ AM
প্রশিক্ষণের জন্য নেদারল্যান্ডসে গিয়ে ফিরে না আসা চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) দুই সদস্য এখনও পুলিশের রেকর্ডে ‘নিখোঁজ’। এক গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই দুজনের একজন রাসেল কান্তি দে এখন নেদারল্যান্ডসে হোটেল বয় হিসেবে কাজ করছেন।
ফেসবুকে অন্য নামে আইডি খুলে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন সহকর্মী ও পরিবারের সঙ্গে। সহকর্মীদের দুজন তা স্বীকার করলেও পরিবারের দাবি, যোগাযোগ নেই। রাসেলের বাড়ি কক্সবাজার পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পল্লাইন্না কাটা এলাকায়।
ডগ স্কোয়াডের প্রশিক্ষণ নিতে তিনিসহ সিএমপির আট সদস্যের একটি দল গত ৯ মে নেদারল্যান্ডসে যায়। প্রশিক্ষণ শেষে অন্যরা ফিরে আসলেও পাওয়া যায়নি তাকে ও কুমিল্লার শাহ আলমকে। তারা দুজন ছিলেন সিএমপির কনস্টেবল।
রাসেলের বোন কমলা পাল তখন বলেন, ‘২০ তারিখ রাসেল পম্পির সঙ্গে সবশেষ কথা বলে। স্ত্রীকে সে নানান কসমেটিকস কেনার কথা জানায়। কিন্তু তারপর থেকে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। ২৫ মে পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়, প্রশিক্ষণে যাওয়া টিমের ৬ সদস্য এক দিন আগে দেশে ফিরছে।’
কমলা জানান, রাসেলের ফিরে না আসার বিষয়টি তাদের দুবাই প্রবাসী ভাই সুভাষ চন্দ্রকে জানানো হয়। ২৬ মে রাসেল সুভাষকে ফোন করে। ফোনে সে জানায়, তার পুলিশের চাকরি ভালো লাগে না। তাই সে দেশে (নেদারল্যান্ডস) থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তখন ভাই তাকে বকাঝকা করলে সে ফোন কেটে দিয়ে তার (সুভাষের) নাম্বার ব্লক করে দেয়। এরপর আর কোনো যোগাযোগ হয়নি।’
রাসেলের এই বিষয়টি জানেন সিএমপির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, রাসেলের সঙ্গে নিয়মিতই যোগাযোগ আছে। তিনি নেদারল্যান্ডসে হোটেল বয়ের কাজ করেন, ৩৫ হাজার টাকার মতো বেতন পান। এর বেশি তথ্য তিনি জানাতে রাজি হননি।
‘এলেক্স চৌধুরী’ নামে ওই ফেসবুক আইডি ঘেঁটে দেখা গেছে, ফ্রেন্ডলিস্টে আছেন রাসেলের স্ত্রী পম্পি ও শ্যালিকা কাকলি রানী।
ওই আইডিতে পরিচয় জানতে চেয়ে মেসেজ পাঠানো হলেও কোনো উত্তর আসেনি। এ বিষয়ে জানতে পম্পিকে কল করা হলে তিনি জানান, স্বামীর সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ নেই।
২০১৬ সালে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন রাসেল। ২০২১ সালের জুনে বিয়ে করেন। সংসারে আছে শিশুসন্তান।
সিএমপি কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, ‘গত ৬ জুন পুলিশ সদর দপ্তরের তিন সদস্যের কমিটি এ বিষয়ে (রাসেল ও শাহ আলমের দেশে না ফেরায়) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
‘তাতে এই দুই সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সুপারিশ করা। তবে এখনও তাদের খোঁজ মেলেনি।’