সেই রাতে খায়রুনের সাথে কি হয়েছিল জানালেন মামুন

মামুনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
মামুনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

নাটোরে বহুল আলোচিত কলেজ শিক্ষক খাইরুন নাহারের মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী কলেজ ছাত্র মামুন হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এর আগে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মামুনকে জেলা দায়রা জজ আদালতে তোলা হয়। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোসলেম উদ্দিন তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কোর্ট জিআরও খাদেমুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামুন তাদের দাম্পত্য কলহের কথা স্বীকার করেছেন। মামুন জানান, শনিবার রাত ২টায় স্বামী স্ত্রী ঝগড়া হলে তিনি খাইরুনকে লাথি মেরে বাইরে চলে যান।

এরপর শিক্ষক খাইরুন নাহার বেশ কয়েকবার ফোন করলেও মামুন ফোন রিসিভ করেননি। এতে ক্ষোভে খাইরুন নাহার আত্মহত্যা করেছেন বলে জানান মামুন। সেদিন রাত ২টা থেকে ৬টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে মামুনের ঘোরাঘুরির তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: ফ্লাইওভারের গার্ডার পড়ল প্রাইভেট কারে, নিহত ৪

পুলিশ সুপার আরও বলেন, মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না। খায়রুন নাহারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মামুন নামেমাত্র ব্যবসা করতেন। খায়রুন নাহার তার বড় ছেলে বৃন্তকে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার জন্য দুই লাখ টাকা মামুনের সম্মতি চান। কিন্তু মামুন ওই টাকা দেননি। এনিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়ার একপর্যায়ে মামুন রাগ করে রাত ২টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরে ভোর ৬টার দিকে বাড়ি ফিরে দেখেন খায়রুন নাহার সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।

আগের স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর ফেসবুকে মামুন হোসেনের সঙ্গে পরিচয় হয় খায়রুন নাহারের। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর কাজি অফিসে গিয়ে তারা গোপনে বিয়ে করেন।

সম্প্রতি বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হয়। এ অসম বিয়ে মামুনের পরিবার মেনে নিলেও খায়রুন নাহারের পরিবার মেনে নেয়নি। ফলে তারা নাটোর শহরের বলারীপাড়া এলাকায় মোল্লা ম্যানশনের চারতলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছিলেন। রোববার সকালে ওই ফ্ল্যাট থেকে খায়রুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

খায়রুন নাহার গুরুদাসপুরের খুবজিপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। মামুন নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামের কলেজছাত্র মোহাম্মাদ আলীর ছেলে।


সর্বশেষ সংবাদ