নীতিমালা না থাকায় দক্ষতাবিহীনরা উপাচার্য হচ্ছেন

‘বাংলাদেশের উপাচার্যদের নিয়ে এত প্রশ্ন কেন’ শীর্ষক আলোচনা
‘বাংলাদেশের উপাচার্যদের নিয়ে এত প্রশ্ন কেন’ শীর্ষক আলোচনা   © সংগৃহীত

দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য নিয়োগের সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা না থাকায় বর্তমানে পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও দক্ষতাবিহীন অনেকেই উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়ে যাচ্ছেন। আর নিয়েই নানান বিতর্ক ও প্রশ্নের তৈরি হচ্ছে।

সম্প্রতি ‘বাংলাদেশের উপাচার্যদের নিয়ে এত প্রশ্ন কেন’ শীর্ষক আলোচনায় সাবেক দুই উপাচার্য এবং সাবেক ডাকসু নেতা এ মন্তব্য করেছেন।

নতুনদেশ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগরের সঞ্চালনায় ‘শওগাত আলী সাগর লাইভ’ আলোচনায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান, বাংলাদেশ উপাচার্য পরিষদের সাবেক সভাপতি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. জসিম উদ্দিন আহমদ এবং ডাকসুর সাবেক এজিএস নাসির-উদ-দোজা অংশ নেন।

অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, বাংলাদেশের নতুন জেনারেশনের ৫২টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের কোনো নীতিমালা নেই। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের আইন থাকলেও কেবলমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই সেই আইনের আলোকে উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে, আর কোথাও নয়।

আরও পড়ুন : যেভাবে জানা যাবে মেডিকেল ভর্তির ফল

তিনি বলেন, নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিয়োগের জন্য যে রিজেন্ট বোর্ড আছে তার সদস্য হচ্ছেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, তিন চার জন করে আমলা, রাজনৈতিক দলের স্থানীয় সদস্য। রিজেন্ট বোর্ডকে এরাই নিয়ন্ত্রণ করে। এদের কথামতো না চললে ওই জায়গায় কেউ দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।

তিনি প্রশ্ন করেন, বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত রিজেন্ট বোর্ডে ৪-৫ জন আমলা কেন থাকবে, তাদের কেন সিন্ডিকেটের সদস্য করতে হবে। দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদদের এই জায়গায় নিয়োগ দিলে তাদের মেধাভিত্তিক পরামর্শে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উপকৃত হতে পারতো।

তিনি বলেন, পেশাগত জীবনে কখনো কোনো হলের হাউজ টিউটরের দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা নেই- এমন শিক্ষকরা উপাচার্য হয়ে যাচ্ছেন। এটি অতীতে হয়েছে, এখনো হচ্ছে, হয়তো ভবিষ্যতেও হবে।

তিনি বলেন, অযোগ্য লোক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োগ পেলে তিনি অযোগ্য লোকদেরই বেছে বেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসিয়ে দেন।

অধ্যাপক ড. জসিমউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক বাস্তবতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের ওপর বিশেষ করে বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের উপর নানা ধরনের চাপ থাকে।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য গবেষণা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বর্তমানে নিয়ম শিথিল করে একটি মাত্র গবেষণাপত্রের ভিত্তিতে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই উপাচার্য হিসেবে এমন ব্যক্তি নিয়োগ পাচ্ছেন যাদের শর্তের একটি গবেষণা সেটিও নেই।

ডাকসুর সাবেক এজিএস নাসির উদ দোজা বলেন, আজকের বাস্তবতায় একটি ছাত্র সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে। উপাচার্য সেই নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে আসতে চান কিনা, নাকি তারা নিজেরাও সেউ নিয়ন্ত্রণে থাকতে চান- সেটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।


সর্বশেষ সংবাদ