ইভ্যালির গ্রাহকের টাকা রিফান্ড না দেয়ার কারণ জানালেন মাহবুব কবির

মাহবুব কবির মিলন
মাহবুব কবির মিলন

কেন ইভ্যালির গেটওয়েতে আটকে থাকা গ্রাহকের টাকা রিফান্ড দেয়া যাচ্ছে না জানালেন ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমডি মো. মাহবুব কবীর মিলন।

এ সংক্রান্ত কারণ জানিয়ে বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যার পর মাহবুব কবীর তার ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

সেখানে তিনি লিখেন, ১ জুলাই ২০২১ তারিখ হতে এস্ক্রো নীতিমালা কার্যকর হওয়ার পর গ্রাহক মাল ক্রয়ের জন্য পেমেন্ট গেটওয়েতে টাকা জমা দেয়ার পর গ্রাহক মাল বুঝে পেলে, তবেই সে টাকা পেমেন্ট গেটওয়ে থেকে ইভ্যালির একাউন্টে জমা হবে। আর গ্রাহক মাল না পেলে ইভ্যালি একটা অর্ডার বা রিকুয়েস্টের মাধ্যমে গেটওয়েতে জানিয়ে দেবে যে, এই এই গ্রাহকের মাল ডেলিভারি দেয়া যায়নি, তাদের টাকা ফেরত দেয়া হোক। একেই বলে রিফান্ড।

আরও পড়ুন: এতেতো কেয়ামত হয়ে যায়নি: কাজী সালাউদ্দিন

এই রিফান্ডের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা হচ্ছে, ই-কমার্স বা ইভ্যালি হতে রিফান্ড রিকুয়েস্ট পেলেও পেমেন্ট গেটওয়ে যেন, গ্রাহকের তথ্য যাচাই করে নেয়। যে, গ্রাহক সত্য নাকি মিথ্যা বলে রিফান্ড নিচ্ছে।

ইভ্যালির প্রাক্তন সিইও রাসেল সাহেব গ্রেফতার হবার আগে ১ জুলাই, ২০২১ হতে এস্ক্রোতে জমা হওয়া টাকার মধ্যে সর্বশেষ যে রিফান্ড অর্ডার পেমেন্ট গেটওয়েতে প্রেরণ করেছিলেন, তার সব টাকা গ্রেফতারের পরপরই পেমেন্ট গেটওয়ে ঐ গ্রাহকদের রিফান্ড করে দিয়েছিলেন।

রাসেল সাহেব গ্রেফতার হওয়ার পর ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে এবং এরপর সার্ভার কয়েকদিন চালু থাকলেও এসক্রো'র টাকা রিফান্ড দেয়ার জন্য রিফান্ড অর্ডার বা রিকুয়েস্ট তৈরি করার মত কেউ অফিসে ছিলেন না বা বাসায় বসেও কেউ একাজটি করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেনি। ফলে গেটওয়েতে ইভ্যালির আর পেন্ডিং রিফান্ড অর্ডার বা রিকুয়েস্ট নেই।

অর্থাৎ, ইভ্যালি অফিস হতে যাচাই বাছাই করে কার মাল ডেলিভারি হয়নি এবং কে কে রিফান্ড পাবে সেই ডাটা তৈরি করে পেমেন্ট গেটওয়েতে পাঠানো হয়নি আর, রাসেল সাহেব গ্রেফতার হবার পর।

আমারা দায়িত্ব নেবার পর একই অবস্থা পেয়েছি। ছয়টি গেটওয়েতে যে টাকা পড়ে আছে, তা সম্পূর্ণভাবে ১ জুলাইয়ের পর প্রাপ্ত এস্ক্রো সার্ভিসের। অন্যকোন বা ১ জুলাইয়ের আগের কোন টাকা এখানে বা অন্য কোন ব্যাংকে নেই। ছয় পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা এস্কোর টাকা ছাড়া কোন ব্যাংকে ইভ্যালির কোন টাকা পাওয়া যায়নি।

এস্কোর টাকা রিফান্ড করার প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা সকল গেটওয়ের সাথে বৈঠক এবং অসংখ্যবার কথা বলেছি। তারা সবাই বলেছে গ্রাহকের তথ্য দৈবচয়নের ভিত্তিতে যাচাই করে অনেক গ্রাহকের সঠিক তথ্য তারা পায়নি। বড় কথা হচ্ছে এজন্য ইভ্যালি হতে ক্লিয়ারেন্স বা রিফান্ড অর্ডার চায় তারা।

আমাদের কাছে গ্রাহকের কোন তথ্য বা কাগজপত্র নেই, যার ভিত্তিতে রিফান্ড অর্ডার তৈরি করা যাবে। এটা করতে হলে অবশ্যই সার্ভার আপ এবং পূর্বের লোকজন কিছু হলেও নিয়োগ করতে হবে। কারণ গ্রাহকের সব তথ্য আছে সার্ভারে।

এই সার্ভার আপ করতে হলে এর এডমিন এক্সেস লাগবে। যা আছে রাসেল সাহেবের হাতে, যদিও তিনি বলেছেন ইউজার নেইম এন্ড পাসওয়ার্ড তিনি ভুলে গেছেন। তিনি আছেন জেলে। এটার জন্য একটা প্রক্রিয়ার কথা চিন্তা করা হচ্ছে, যা সময় হলে জানবেন সবাই।

গ্রাহকের হাতে থাকা কাগজপত্র দিয়ে রিফান্ড দেয়া সম্ভব নয়। একারণেই গেটওয়েতে আটকে থাকা প্রায় ৩৯৭ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ৪৫/৪৬ কোটি টাকা রিফান্ড দিতে পেরেছে কিউকম। কারণ মাত্র এই ৪৬ কোটি টাকার সঠিক তথ্যই তাদের মালিক গ্রেফতারের আগেই রেডি করা ছিল। তাই তারা সেটা রিলিজ করতে পেরেছে। গ্রাহকের কাছে সব তথ্য থাকলেও কিউকম টাকা রিফান্ড করতে পারবে না। যতক্ষণ না পুরো ব্যবসা আবার চালু না হয়।
তারা কিছু টাকা রিফান্ড করতে পারছে না, মার্চেন্ট বা এজেন্ট নাম্বার হতে গ্রাহক টাকা পেমেন্ট করায় গ্রাহকের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।

গ্রাহক মাল পেয়েছে কিনা, মাল পাবার পরেও সে রিফান্ড ক্লেইম করছে কিনা, তা বর্তমানে আমাদের বা ব্যাংক কিংবা গেটওয়ের পক্ষে যাচাই করা সম্ভব নয়। তাই সার্ভার আপ করে যাচাই বাছাই না করা পর্যন্ত রিফান্ড দেয়া সম্ভব হবে না। যদিও আমাদের একাজ করতে মহামান্য হাইকোর্টের অনুমতি নিতে হবে।

আরও পড়ুন: রমজানে স্কুল-কলেজ খোলা রাখার সময় কমতে পারে

আবারও বলছি, ইভ্যালির একাউন্টে এস্কোর টাকা ছাড়া অন্যদের অন্যান্য পাওনা পরিশোধের কোন অর্থ নেই। শুধুমাত্র ব্যবসা আবার শুরু করা গেলেই ধিরে ধিরে হয়ত তা করা সম্ভব হবে। সেটা সম্ভব কিনা, তা সময়ই বলে দেবে। এস্ক্রোতে আটকে থাকা গ্রাহকের এক টাকাও খরচ করা হয়নি।

একের পর এক, সব চেষ্টাই করে যাচ্ছি আমরা। যাতে এই লক্ষ লক্ষ মানুষ পথে বসে না যায়। বিনে পয়সায় ভলান্টারি সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছি আমি। আমার উপর গালাগালি, ঝাঁপিয়ে পড়ে কাঁপিয়ে দেবেন। মুহূর্তের মধ্যে ছেড়ে দিয়ে চলে যাব। ইভ্যালি আমার সোনার ডিম পাড়া হাঁস নয়। কথাটা মনে রাখবেন প্লিজ সবাই।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence