শহীদ মিনারে ডিসপ্লে নয়, মৃত্যুর পর মায়ের শাড়ীতে দাফনের ইচ্ছা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২১, ০৮:৫৭ AM , আপডেট: ১২ মার্চ ২০২১, ০৮:৫৭ AM
শেষ ইচ্ছাটা অন্যরকম ছিল রাজনীতির রহস্যপুরুষ সিরাজুল আলম খানের। সম্প্রতি ‘প্রতিনায়ক: সিরাজুল আলম খান’ শিরোনামে প্রকাশিত বইতে তার ইচ্ছার কথা লিখেছেন লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ। তাকে এক সাক্ষাৎকারে নিজের শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সিরাজুল আলম খান।
মহিউদ্দিন আহমদ লিখেছেন, বেশ কিছুদিন আগে আমি তার (সিরাজুল আলম খান) কাছে গিয়েছিলাম। তিনি কিছু কথা বলার আগ্রহ দেখালেন। আমার সঙ্গে ছিলেন সুমন মাহমুদ। সুমনকে বললেন রেকর্ড করতে। যথারীতি ভিডিও হলো। তার শেষ ইচ্ছার কথা বললেন তিনি।
সিরাজুল আলম খানের কথায়, ‘আমার মৃত্যুর পর কোনো শোকসভা হবে না। শহীদ মিনারে ডিসপ্লে হবে না লাশ। যত দ্রুত সম্ভব নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আমার গ্রামের বাড়িতে পাঠাতে হবে মরদেহ, যা ঢাকা থাকবে একটা কাঠের কফিনে। মায়ের একটা শাড়ি রেখে দিয়েছি। কফিনটা শাড়িতে মুড়ে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে, মায়ের কবরে।’
স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ষাটের দশকে ছাত্রলীগের যে ‘নিউক্লিয়াস’ আলোচিত ছিল, তার উদ্যোক্তা ছিলেন সিরাজুল আলম খান। অনেকে ‘দাদাভাই’ নামে ডাকত তাকে। স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ ভেঙে জাসদ গঠনের উদ্যোক্তাও তিনি। সচরাচর জনসম্মুখে আসেন না সিরাজুল আলম খান। কোনো বক্তৃতা-বিবৃতিও দেন না।
দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রে থেকে সম্প্রতি দেশে ফেরেন সিরাজুল আলম খান। রাজধানীর কলাবাগানে বার্ধক্যে উপনীত সিরাজুল আলম খান ভাইদের বাসায় ওঠেন। লেখক মহিউদ্দিন আহমেদ লেখেন, ‘সিরাজুল আলম খান লেখালেখি করে সময় কাটান। তার লেখা ঠাঁই পায় না বিদ্বজ্জনের টেবিলে। এ নিয়ে তার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। তার গুরু ও ঘনিষ্ঠজনেরা অনেকেই দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন, একদিন তিনিও চলে যাবেন। প্রকৃতির এটাই নিয়ম।’