‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধির সুবর্ণ জয়ন্তী আজ

  © সংগৃহীত

২৩ ফেব্রুয়ারি। ১৯৬৯ সাল। আগরতলা মামলা থেকে সবে মুক্তি পাওয়া নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের সংবর্ধনার দিন এটি । কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত বিশাল ওই গণসংবর্ধনায় তৎকালীন ডাকসুর সভাপতি শেখ মুজিবের একনিষ্ঠ সহচর তোফায়েল আহমেদ মাইকে ঘোষণা করেন, ‘কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতি ঋণের বোঝা হালকা করতে চায়। জাতির পক্ষ থেকে প্রিয় নেতাকে উপাধি দিতে চাই।’

রেসকোর্স ময়দান তখন প্রকম্পিত হয়ে উঠে। লাখ লাখ জনতা হাত উত্তোলন করে জানান দেন, প্রিয় নেতা শেখ মুজিবকে উপাধি দেওয়া হোক। এরপর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। সেই উপাধি আজ ৫০ বছর পার করলো।

ইতিহাস বলছে, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, মহাত্মা গান্ধী -রবীন্দ্রনাথ যাঁকে মহাত্মা উপাধি দিয়েছিলেন; দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, শেরে বাংলা একে ফজলুল হকসহ পৃথিবীতে অনেকেই উপাধি পেয়েছেন। কিন্তু ফাঁসির মঞ্চ থেকে মুক্ত হয়ে, গণমানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে, এমন আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে কেউ উপাধি পাননি।

তোফায়েল আহমেদ লিখেছেন, সেদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ১০ লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ। সেই জনসমুদ্রের মানুষকে যখন জিজ্ঞাসা করেছিলাম, যে নেতা জীবনের যৌবন কাটিয়েছেন পাকিস্তানের কারাগারে, ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন, সেই প্রিয় নেতাকে কৃতজ্ঞ বাঙালী জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞ চিত্তে একটি উপাধি দিতে চাই। ১০ লক্ষ মানুষ যখন ২০ লক্ষ হাত উত্তোলন করেছিল সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। তখনই প্রিয় নেতাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। পরবর্তীতে এই উপাধিটি জনপ্রিয় হয়েছে, জাতির জনকের নামের অংশ হয়েছে এবং আজকে তো শুধু ‘বঙ্গবন্ধু’ বললেই সারা বিশ্বের মানুষ এক ডাকে চিনে।’

স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবকে দেওয়া বঙ্গবন্ধু উপাধি ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগসহ রাষ্ট্রীয়ভাবে নানান ঐতিহাসিক দলিলে স্থায়ীভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়। কেন-না, বঙ্গবন্ধুর নামেই লক্ষ-কোটি বাঙালি, বাংলাদেশের মানুষ নিজের জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!