‘জারার জন্য খালেদের স্যাক্রিফাইস— সব ছেড়ে বাড়ি বিক্রি করে দেশে ফেরা নিয়ে আবেগি স্ট্যাটাস’

 খালেদ সাইফুল্লাহ ও তাসনিম জারা
খালেদ সাইফুল্লাহ ও তাসনিম জারা  © সংগৃহীত

সম্প্রতি রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছেন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ডা. তাসনিম জারা। নতুন ঘোষিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে মনোনীত হয়েছেন তিনি। এবার তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি আবেগি স্ট্যাটাস দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ব্লগার, লেখক ও চিকিৎসক রুমি আহমেদ। আজ শুক্রবার (৭ মার্চ) ফেসবুকে নিজ ভেরিফায়েড আইডিতে একটি পোস্ট দেন রুমি।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে রুমি আহমেদ লেখেন, ‘নবগঠিত ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির যে লিডারশিপ স্ট্রাকচার-তার সবচেয়ে উপর এর যে লেভেলে তা তাকে ওরা বলছে সুপার টেন! দশজনের এই গ্রুপ এ তিনজন মেয়ে-তা আমাকে আশ্বস্ত করলো! এরা প্রথম থেকেই  ডাইভার্সিটি এবং ইনক্লুশন প্র্যাকটিস টা আত্মস্থ করেছে! তবে নামগুলোর মধ্যে সবচেয়ে এক্সট্রাঅর্ডিনারি যে নামটা তা আমার মতে ডা. তাসনিম জারার নাম।’

তিনি আরো লেখেন, ‘তাসনিম জারা আমাদের দেশের ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ডিএমসি) গ্রেজুয়েট। ডিএমসি থেকে গ্রেজুয়েট করে সে ইংল্যান্ড চলে যায়-অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে এভিডেন্স বেজড মেডিসিন নিয়ে এমএসসি কমপ্লিট করে। এরপর সে রয়্যাল প্যাপওয়ার্থ হাসপাতাল আর কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি হসপিটাল থেকে ইন্টারনাল মেডিসিন এ রেসিডেন্সি করে এমারসিপি ডিগ্রি অর্জন করে। সাথে সাথেই কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি জারাকে ইন্টারনাল মেডিসিন স্পেশিয়ালিস্ট আর লিড ক্লিনিক্যাল ট্রেইনিং সুপারভাইজার হিসেবে নিয়োগ দেয়।’ 

আরো পড়ুন: এবার ইউজিসির ‘নজরদারি’তে কতদিন থাকবে সাত কলেজ?

ফেসবুকে চিকিৎসক রুমি আহমেদ লেখেন, ‘এমারসিপি ছাড়াও জারা রয়াল কলেজ অব অবস্টেট্রিক্স এবং গাইনোকোলোজিতে নারী স্বাস্থ্য (উইমেন্স হেলথ) নিয়ে এসভান্সড ট্রেইনিং নেয় এবং এমারসিপির সাথে সে একজন ডি আর সি ও জি। চিকিৎসা পেশায় ফ্রি টাইম খুবই কম। বিদেশে টিচিং হাসপাতালগুলোতে কাজ অনেক বেশি-সবচেয়ে জটিল রুগিগুলো দেখতে হয়; জুনিয়র চিকিৎসকদের ট্রেইন করতে হয়; রিসার্চ করতে হয়-রিসার্চ পেপার লিখতে হয়। জারা এগুলো সবই করেছে! কিন্তু এসব করার পর আমার মত বাড়ি ফিরে  টায়ার্ড হয়ে বসে থাকেনি।’  

‘ডা. তাসনিম জারা একটা ইউটিউব হেলথ চ্যানেল মেনটেইন করে। বাংলাদেশের মেডিকেল সোশ্যাল মিডিয়া ল্যান্ডস্কেপ যখন জাহাঙ্গীর টাইপের ভণ্ড আর ডা. সংযুক্তা সাহাদের মতো ভয়ংকর ব্যবসায়ী চিকিৎসক সহ সবধরণের বুজরুকির আখড়া সেখানে তাসনিম জারার চ্যানেলটা সত্যিকারের এভিডেন্স বেসড মেডিসিন-একটা অনারেবল একসেপশন। আমাদের কালচারে মেয়েদের স্বাস্থ্য একটা লুকানো চাপানো ব্যাপার। কিশোরীর-তরুণীরা-বিবাহিত-বা বয়স্ক মহিলারা অনেক শারীরিক সমস্যা নিয়ে ডাক্তার তো দূরের কথা-নিজের মা বা হাজবেন্ড বা অ্যাডাল্ট পুত্র কন্যার সাথে কথা বলতে অনীহা বোধ করে। সেই কারণেই হয়তো আমাদের দেশে ব্রেস্ট ক্যান্সার বা জরায়ু মুখ ক্যান্সার ইত্যাদি অনেক এডভান্সড স্টেজে এসে ডায়াগনোসিস হয়; কিছুই করার থাকে না।’

ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘জারা তার বারো মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার এর ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশি কমিউনিটি ও ডায়াস্পোরা কমিউনিটির বিশেষ করে মহিলাদের স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক অবদান রেখেছে। এর জন্যে বাংলাদেশে এর সোশ্যাল মিডিয়া তাকে লিনচিং করলেও-ব্রিটিশ সরকার ওর কাজের ভ্যালু বুঝতে পেরেছে-ওকে বিশেষ পুরস্কারে/পদকে ভূষিত করেছে। ও ব্রিটেনে একটা পরিচিত মুখ-বিবিসি; স্কাই নিউজ; আইটিভি আর পৃথিবীর এক নম্বর নিউজপেপার ফাইনান্সিয়াল টাইমস এ ওর কাজ নিয়ে নিউজ হয়েছে; ওর ইন্টারভিউ প্রকাশিত/প্রচারিত হয় নিয়মিতই।’ 

তিনি আরো লেখেন, ‘তাঁর হাজব্যান্ড খালেদ সাইফুল্লাহ (ওঁর কথায় পরে আসছি) এর সাথে মিলে সহায় হেলথ নাম একটা বাংলা অ্যাপ ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম ক্রিয়েট করেছে। এই সহায় হেলথ অ্যাপ বাংলা ভাষাভাষীদের বিশেষত নারীদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত এভিডেন্সড বেজড সমাধানের একটা অসাধারণ প্ল্যাটফর্ম। এক লক্ষের মত বাংলাদেশি নারী নিয়মিত এই অ্যাপ থেকে সহায়তা নিচ্ছে।’

আরো পড়ুন: বেসরকারি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কবে? 

ওই স্ট্যাটাসে রুমি আহমেদ লেখেন, ‘কেমব্রিজ  ইউনিভার্সিটি হসপিটাল এ কাজ করতো-কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি মেডিকেল স্কুলের টিচার ছিল। ওর বারো মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার এর ইউটিউব চ্যানেলের ইনকাম ই প্রচুর। সব ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে বাংলাদেশ এর জন্যে কাজ করার জন্য দেশে চলে এসেছে তাসনিম জারা।’ 

স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘ভেবে দেখুন আপনারা - আমাদের এই দেশ জারা কে কিভাবে ওয়েলকাম করলো| আপনারাই না অনুযোগ করে থাকেন ভালো মানুষ শিক্ষিত মানুষ কেন রাজনীতিতে আসে না? জারার জন্য এতবড় একটি সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হয়েছে আরেকজন মানুষের উৎসাহে, স্যাক্রিফাইস আর সহায়তায় - খালেদ সাইফুল্লাহ - জারার লাইফ পার্টনার।’ 

স্ট্যাটাসে তিনি আরো লেখেন, ‘খালেদ সাইফুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের তুখোড় ছাত্র - ঢাকা ল রিভিউ এর ফাউন্ডিং চিফ এডিটর। এরপর সে অক্সফোর্ড ইউনিভারিটি থেকে ইন্টারন্যাশনাল হিউমেন রাইটস ল এর উপর মাস্টার্স করেছে| আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের ফিল্ডে এক যুগের উপর দীপ্ত পদচারণা খালেদ এর।’ 

আরো পড়ুন: এখন এই দেশ থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে গেলেই বাঁচি: ভুক্তভোগী ছাত্রী

রুমি আহমেদ লেখেন, ‘জারার সাথে মিলে যে হেলথ কেয়ার টেকনোলজি প্ল্যাটফর্ম টা প্রতিষ্ঠা করেছে - সহায় হেলথ - সিইও হিসেবে ওটার মেইন ড্রাইভিং ফোর্স খালেদ| নূতন যে দলটা গঠিত হয়েছে - খালেদ তার জয়েন্ট কনভেনর।’

তিনি আরো লেখেন, ‘এই তরুণ কাপল টা  দেশে ফিরে এসেছে! আমরা বাকিরা আসি না। পশ্চিমা কমফোর্টে বসে বাংলাদেশের ইস্যু নিয়ে হাহা হুহু করি। জারা আর খালেদ এসেছে। এসে কুশি কমফোর্ট কর্পোরেট জব খোঁজ শুরু করে নি। রাজনীতির কঠিন পথ বেছে নিয়েছে। প্রার্থনা করি জারা আর খালেদ এর জার্নি টা সহজ হোক। ওদের পথ ধরে আরো সহস্র জারা খালেদ দেশে ফিরে আসুক। আমাদের দেশটি আরো সুন্দর হোক।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence