ছাত্রলীগ নেতা মাসুদকে পিটিয়ে হত্যা, বিচার চাইলেন জয়

মাসুদ ও সজীব ওয়াজেদ জয়
মাসুদ ও সজীব ওয়াজেদ জয়  © সংগৃহীত

রাজশাহীর সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ গণপিটুনিতে প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত আব্দুল আল মাসুদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিকেল সেন্টারে স্টোর অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন। গণপিটুনিতে নিহত ছাত্রলীগ নেতা চারদিন আগেই সন্তানের বাবা হয়েছেন। এদিকে আবদুল্লাহ আল মাসুদকে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। 

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় ভোরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ এবং এক্সে (পূর্বের টুইটার) শেয়ার করা এক পোস্টে তিনি এ দাবি করেন। 

পোস্টে জয় লিখেছেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র আবদুল্লাহ আল মাসুদ। জামাত-শিবির তাঁর এক পা কেটে নিয়েছে ২০১৪ সালে। তখন বাকি হাত-পাগুলোর রগও কেটে দিয়েছিল। দশ বছর ধরে পঙ্গু জীবন যাপন করছিল। গত ৩ সেপ্টেম্বর একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছিল। মেয়ের জন্য ওষুধ আনতে রাজশাহীতে বাড়ির পাশে ফার্মেসিতে গিয়েছিল। আর সেখানেই তাঁকে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে জামাত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা।’ 

জয় আরও লিখেন, ‘মৃত্যুর সময় এক ফোঁটা পানি চেয়েছিল, তাও দেয়নি। কাকুতিমিনতি করে বলেছিল—“আমার চার দিনের একটি সন্তান আছে”—কিছুই তাদের মন গলাতে পারেনি। কারণ মাসুদ এক সময় ছাত্রলীগের রাজনীতি করত।’

সজীব ওয়াজেদ জয় দাবি করেন, ‘জানা গেছে, শিবির ক্যাডার ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার এই হত্যার নেতৃত্ব দিয়েছে। আমি মাসুদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি, এবং অবিলম্বে ঘাতকদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে তিনি গণপিটুনির শিকার হন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। হাসপাতালে নেয়া হলে রাত ১২টার দিকে তিনি মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, রাজশাহী বোয়ালিয়া থানার ওসি মাসুদ পারভেজ।

পুলিশ জানায়, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে রাতে বিনোদপুর বাজারে মাসুদের ওপর হামলা হয়। পরে সেখানই গণপিটুনি দিয়ে প্রথমে মতিহার থানা পুলিশের কাছে দেয়। কিন্তু ওই থানায় ৫ আগস্টের সহিংসতার কোনো মামলা নেই। তাই তাকে বোয়ালিয়া থানায় আনা হয়, যাতে কোনো সহিংসতার মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। সেখান থেকে গুরুতর আহত হওয়ায় মাসুদকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বোয়ালিয়া থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হয়েছিলেন মাসুদ। শারীরিক অবস্থা দেখে সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। 

এদিকে, গত ৩ সেপ্টেম্বর কন্যা সন্তানের বাবা হন মাসুদ। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) নবজাতক শিশুর ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে মাসুদ লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তাআলার। গত ৩-৯-২০২৪ তারিখে কন্যা সন্তানের পিতা হয়েছি। মহান আল্লাহর কাছে নেক হায়াত ও সুস্থতা কামনা করি। সকল আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধু-বান্ধবের কাছে আমার ও আমার মেয়ের জন্য দোয়া প্রার্থনা করছি।’


সর্বশেষ সংবাদ