চাকরিতে আবার বয়সীমা কেন, প্রশ্ন মান্নার

সমাবেশে মাহমুদুর রহমান মান্না
সমাবেশে মাহমুদুর রহমান মান্না  © সংগৃহীত

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ৩০ নাকি ৩৫ এই বিতর্ক আমি ভালোমতো বুঝি না। কিন্তু আমি মনে করি, চাকরিতে আবার বয়সীমা কেন? আমার যদি যোগ্যতা থাকে, তাহলে ৪০ বছর বয়সেও আমি চাকরি পেতে পারি। সামরিক বাহিনীর অফিসাররা ও আমলারা যদি চাকরি শেষ করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে পারেন, তাহলে এই তরুণরা, যারা ইতিহাস তৈরি করল, তারা কেন পারবে না?

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে মহাসমাবেশের ডাক দেন চাকরিপ্রার্থীরা। শাহবাগে ওই কর্মসূচি চলাকালে সেখানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

মান্না বলেন, এমন একটা পদ্ধতি করতে হবে আমাদের, যাতে তাদের লেখাপড়ার জন্য, মেধার চর্চার ক্ষেত্রে, নিয়োগ করার জন্য, তাদের চাকরি ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বৈষম্য না হয়। এক দিনেই হবে তা মনে করার দরকার নেই। সবাই মনে করছেন সরকার বদলেছে, এখনই ভোট দিয়ে দাও, তারপর নতুন সরকার এস সব করবে। নিশ্চয় ভোট দিতে হবে। এই সরকার চিরজীবনের জন্য আসেনি। আর সংস্কারও থেমে থাকে না।

স্বৈরাচার সকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিলে সারা দেশের মানুষ তাদের অভাব-অভিযোগ নিয়ে পথে নেমেছে। তখন মনে হয়েছিল যে দেশটা মনে হয় অচল হয়ে যাবে তাদের আন্দোলন ও দাবিতে। কিন্তু আমি সরকারকে ধন্যবাদ দিই, তারা অল্প দিনের মধ্যেই সেই সংকট সামাল দিয়েছে।

দেশটা বদলে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেখানে কথা বলা যেত না, প্রাণ ভরে শাস নেওয়া যেত না, চোখে চোখে তাকিয়ে প্রফুল্ল মনে কথা বলা যেত না, তার পরিবর্তন হয়েছে। এখন আমরা কথা বলতে পারছি, নিজেদের অভাব-অভিযোগ জানাতে পারছি।

আমাদের দেশে চাকরিতে কত ধরনের বৈষম্য আছে, বিভেদ আছে, সব লিখতে গেলে একটা ডিকশনারি হয়ে যাবে। কত যে অস্থায়ী নিয়োগ আছে। যখন-তখন একজনকে চাকরি থেকে কান ধরে বের করে দেওয়া যায়, তার কোনো আইনি সাপোর্ট পর্যন্ত নাই। এটা অজস্র। বেতন পর্যন্ত দেওয়ার সিস্টেম নাই।

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, পৌর কর্মচারীর বেতন সরাসরি কোনো লোকাল গভর্নমেন্ট দেয় না। সেটা দেয় লোকাল গভর্নমেন্টের কর্তা। তিনি আবার টাকা আটকে রাখেন। তারপর যারা চাকরি করেন, তাদের কাছ থেকে ঘুষ নেন। এই পদ্ধতিই চলছে দেশে।

পুরো ব্যবস্থা বদলাতে হবে জানি এই নেতা বলেন, এই যে এত বড় লড়াই হলো, এটাকে যদি আমরা মনে করি এটা শুধু সরকার বদলের লড়াই, একটা সরকার যাবে, ভোট হবে, আরেকটা সরকার আসবে, তাহলে না। আমরা কেবল সকার বদলের আন্দোলন করছি না, আমরা দেশ বদলের আন্দোলন করছি। আমরা প্রশাসন বদলের আন্দোলন করছি। আমরা রাষ্ট্রটা বদলে দিতে চাই। দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত প্রত্যেক নাগরিকের যাতে জীবন বদলে যায়, তার লড়াই করছি।

শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে মান্না বলেন, আমি তাদের ধন্যবাদ দিই। রাজনৈতিক দলগুলো অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা, গুম-খুনের শিকার হয়ে আন্দোলনটা করতে পারেনি। কারণ শেষ লড়াইয়ের জন্য যৌবন দরকার, তারুণ্য দরকার...তাদের প্রত্যাশার প্রতি আমাদের মূল্য দেওয়া উচিত।

সবাইকে অনুরোধ করি, আমাদের নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করবেন না। এক পেশার মানুষ দাবি তুলল, এর পরিপ্রেক্ষিতে আরেক পেশার মানুষ আরেকটা দাবি তুলল, যাতে দুপক্ষের মধ্যে একটা ক্ল্যাশ হয়, মতপার্থক্য হয়। এ রকম দাবি নয়।


সর্বশেষ সংবাদ