সরকার পতনের পর নগদে আসছেন না সোলায়মান সুখন

সোলায়মান সুখন
সোলায়মান সুখন  © ফাইল ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে অনেকটাই নিশ্চুপ ছিলেন সামাজিক মাধ্যমে জনপ্রিয় মুখ সোলায়মান সুখন। তবে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর আর তাঁকে পাওয়া যায়নি জনসম্মুখে। বর্তমানে মোবাইলে আর্থিক সেবা ‘নগদ’ এর চিফ পাবলিক রিলেশন বিভাগের পরিচালকের দায়িত্বে থাকা সুখন এরপর আসেননি নগদ কার্যালয়েও।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনায় প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা নগদ কার্যালয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বুঝে নেন। তখনও কার্যালয়ে পাওয়া যায়নি আলোচিত ও সমালোচিত সুখনকে।

নগদ কার্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত আগস্ট সরকার পতনের পর তাঁকে আর নগদ কার্যালয়ে দেখা যায়নি। তিনি অফিসে আসছেন না। তবে এখন তিনি কোথায় আছেন বা নগদ থেকে তিনি ছুটি নিয়েছেন কি-না, এমন বিষয়ে তাঁরা স্পষ্ট করে কিছু জানাতে পারেননি। 

অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুঞ্জন উঠেছে, সোলায়মান সুখন জুলাই বিপ্লবে আওয়ামী সরকারের সঙ্গে ছাত্র আন্দোলন দমানোর বিষয়ে পরিকল্পনা করেছেন। এজন্য আন্দোলনের সময় জনপ্রিয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদেরকে জোর করে স্কিপ্টেড ভিডিও বানানোর হুমকি দেয়া হয়েছে। এর বিনিময়ে তাদেরকে লাখ টাকার লোভও দেখানো হয়েছে। এমন অজস্র অভিযোগ সুলাইমান সুখনের বিরুদ্ধে। তার সঙ্গে সরকারকে মদদ দেওয়ার ক্যাম্পেইনে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে  ইনফ্লুয়েন্সার তৌহিদ আফ্রিদির বিরুদ্ধে।

এদিন মোবাইলে আর্থিক সেবা ‘নগদ’ পরিচালনায় প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব বুঝে নেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।  এখন থেকে তাঁরাই নগদের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। তবে, প্রতিষ্ঠানটির সামগ্রিক বিষয়গুলো পুরোপুরি বুঝতে আরও সময় লাগবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তাদের। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রশাসক দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আগের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বাতিল হয়ে গেল। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে প্রতিষ্ঠানটির পুরো নিরীক্ষা করা হবে। এ কাজ শেষ করতে সময় প্রয়োজন হবে। নিরীক্ষা শেষে প্রতিষ্ঠানটির ভাগ্য নির্ধারিত হবে বলেও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

দেশে মোবাইলে আর্থিক সেবায় (এমএফএস) বিকাশের পরই এখন নগদের অবস্থান। তবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি নানা প্রক্রিয়া যথাযথভাবে মেনে চলেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। ডাক বিভাগের সেবা বলা হলেও আদতে এতে সরকারের কোনো অংশীদারত্ব নেই। নগদের মালিকানায় বিভিন্ন সময়ে যুক্ত ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকনের স্ত্রী রেজওয়ানা নূর, সাবেক সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক ও রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় মোবাইলে আর্থিক সেবা পরিচালনার জন্য থার্ড ওয়েভকে কাজ দেয়।

২০১৯ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নগদের উদ্বোধন করেন। পরে বিভিন্ন সময়ে এর মালিকানায় যুক্ত হয়েছেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। যথাযথ গ্রাহক তথ্য যাচাই (কেওয়াইসি) ছাড়াই প্রতিষ্ঠানটি মোবাইল গ্রাহকদের নিজস্ব গ্রাহক বানিয়ে ফেলার সুযোগ পায় নগদ। সরকারের সব ভাতা বিতরণেরও একচ্ছত্র সুবিধা পায় প্রতিষ্ঠানটি। ফলে সরকারি ভাতা পেতে নগদের গ্রাহক হওয়া বাধ্যতামূলক হয়ে যায়। নগদে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন তানভীর আহমেদ, নিয়াজ মোর্শেদ ও মারুফুল ইসলাম।

এর আগে গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক ডাক বিভাগের ডিজিটাল আর্থিক সেবা ‘নগদ’-এ চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদারকে এক বছরের জন্য প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান, যুগ্ম পরিচালক আনোয়ার উল্লাহ, পলাশ মন্ডল, আবু ছাদাত মোহাম্মদ ইয়াছিন, উপপরিচালক চয়ন বিশ্বাস ও আইয়ুব খানকে সহায়ক কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence