মৌলভীবাজারে অভিযান
চীনে লেখাপড়ার মধ্যেই জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়ান রাহাত-মেহেদী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৩, ০৮:২২ PM , আপডেট: ১৫ আগস্ট ২০২৩, ০৯:০৯ PM
রাহাত মণ্ডল (২৪) ও মেহেদী হাসান ওরফে মুন্না (২৩) দুজন চীনের ইয়াংজু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক পাস করেন। সম্প্রতি কয়েক দিনের ব্যবধানে তাঁরা দেশে ফেরেন। তবে তাঁরা বিমানবন্দর থেকে বাড়ি না ফিরে সোজা চলে যান সিরাজগঞ্জে জঙ্গি সংগঠন ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’র অন্যতম সদস্য চিকিৎসক সোহেল তানজিমের কাছে। এরপর তাঁর সঙ্গে চলে যান মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়।
সিরাজগঞ্জের খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ছিলেন সোহেল তানজিম। তিনি সিরাজগঞ্জ সদরের পোড়াবাড়ি এলাকার বাসিন্দা হেলাল উদ্দিনের ছেলে। রাহাত গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহিম মণ্ডলের ছেলে। আর মেহেদী মাদারীপুর সদর উপজেলার পূর্ব চিরাইপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল করিমের ছেলে।
কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নে গতকাল সোমবার জঙ্গি আস্তানা ছেড়ে পালানোর চেষ্টাকালে স্থানীয় লোকজন রাহাত মণ্ডল, মেহেদী হাসান, চিকিৎসক সোহেল তানজিমসহ তাঁদের সংগঠনের মোট ১৭ জনকে আটক করেন। পরে তাঁদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর ঢাকা থেকে আসা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট ও সোয়াটের দল এসে তাঁদের মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ লাইনসে নিয়ে যায়।
অভিযানকারী দলে থাকা সিটিটিসির উপকমিশনার এস এম নাজমুল হক বলেন, রাহাত ও মেহেদী হাসান মেধাবী শিক্ষার্থী।চীনে লেখাপড়ার সময় জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তাঁরা কোনোভাবে জড়িয়ে পড়েন। চিকিৎসক সোহেল তানজিমের সঙ্গে আগে থেকেই তাঁদের যোগাযোগ ছিল। রাহাত ১০-১৫ দিন আর মেহেদী হাসান মাসখানেক আগে বিমানের ফ্লাইটে দেশে ফেরেন। হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে নেমে দুজন প্রথমে সোহেল তানজিমের বাড়িতে যান। পরে সোহেলের সঙ্গে কুলাউড়ার পূর্ব টাট্রিউলি এলাকার আস্তানায় চলে যান।
দুই তরুণের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে এস এম নাজমুল হক বলেন, চীন থেকে ফেরার খবর তাঁদের (রাহাত) স্বজনেরা জানেন না। এস এম নাজমুল হক বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চিকিৎসক সোহেল তানজিম তাঁদের জানিয়েছেন, স্বাধীন নামের পাবনার এক যুবক তাঁকে এ সংগঠনে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করেন। সোহেল সংগঠন থেকে মাসে এক লাখ টাকা বেতন পেতেন।
আটক ১৭ জনের মধ্যে এক কিশোর (১৭) রয়েছে। যশোরের কোতোয়ালি থানার মোল্লাপাড়া আমতলা এলাকায় তার বাড়ি। সে যশোর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে ঢাকার নটর ডেম কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়। দ্বাদশ শ্রেণিতে উঠে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে যায়। এর পর স্বজনদের ছেড়ে জঙ্গি আস্তানায় চলে আসে—জানান এস এম নাজমুল হক।