সড়কে প্রাণ গেল বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রীর

‘মা’ কি জিনিস বোঝার আগেই হারাল মাকে

আনাহিতা ও তার মা সুইটি
আনাহিতা ও তার মা সুইটি  © সংগৃহীত

মাদারীপুরের শিবচরে বাস দুর্ঘটনায় নিহত ১৯ জনের মধ্যে একজন সুরভী আলম সুইটি (২২)। আজ রোববার সকাল পৌনে ৮টার দিকে বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় রেলিং ভেঙে খাদে পড়া ইমাদ পরিবহনের বাসটি খুলনা থেকে ঢাকায় যাচ্ছিল। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন।

৫ মাসের কন্যা সন্তান আনাহিতা বুঝতেই পারলো না মা সুইটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় চলে গেছেন না ফেরার দেশে। আজ বিকেলে সুরভীর মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে করে গোপালগঞ্জ শহরের পাচুড়িয়া এলাকার বাড়িতে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।

জানা যায়, আজ সকালে সুইটির বাবা মাসুদ আলম মেয়েকে নিয়ে গিয়েছিলেন ঢাকায় পৌঁছে দিতে, কিন্তু ফিরলেন মেয়ের মরদেহ নিয়ে। বাড়ির ছোট মেয়ে আত্মহত্যা করেছে ৪ বছর আগে, আর আজ বড় মেয়ের মৃত্যু শোকে নির্বাক সুইটির মা বিউটি খানম। অঝোরে কাঁদছেন তিনি। কখনও আবার মূর্ছা যাচ্ছেন। 

এসময় তিনি বলছিলেন, ওরে আল্লাহরে, এ তুমি কী করলে। আমার তো সব শেষ হয়ে গেল। ওরে আমার সোনার পাখি উড়ে গেল রে। আমার তো আর কেউ রইল না। ‌আমি এখন কী নিয়ে বেঁচে থাকপো।

আরও পড়ুন: মাদারীপুরের বাস দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া সুইটি ঢাবি ছাত্রী ছিলেন না

জানা গেছে, দেড় বছর আগে রংপুরের রেজাউর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয় সুইটির। রেজাউর ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। পড়ালেখা করার কারণে দুই মাস বয়স থেকে আনাহিতাকে মায়ের কাছে রেখে ঢাকার মিরপুরে স্বামীর সঙ্গে থাকতেন সুইটি। ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি’তে ইংরেজি বিভাগে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়ন করছিলেন তিনি। 

নিহতের ছোট চাচা পিল্টন মিয়া বলেন, সুইটির দুই বোন ছিল। ছোট বোনটা ২০১৭ সালে মারা গেছে। তখন ক্লাস সিক্সে পড়ত। সেই থেকে বাবা-মায়ের একমাত্র সম্বল ছিল এই মেয়েটা। দেড় বছর হলো তার বিয়ে হয়েছে। তার  স্বামী ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তাদের ৫ মাসের একটি মেয়ে আছে। তাকে নানুর কাছে রেখেই বাবার সঙ্গে ঢাকায় যাচ্ছিলেন সুইটি।


সর্বশেষ সংবাদ