১৬৬তম বি.পি. ও বিশ্ব স্কাউট দিবস আজ
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:৪০ PM , আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:৪০ PM
আজ ২২ ফেব্রুয়ারি। বিশ্ব স্কাউট দিবস। স্কাউটিং আন্দোলনের প্রবক্তা লর্ড ব্যাডেন পাওয়েল ১৮৫৭ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন। তারই হাত ধরে ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে স্কাউটিং আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে। তাই ব্যাডেন পাওয়েলের জন্মদিনটিকে স্মরণ করতেই প্রতিবছর ২২ ফেব্রুয়ারি স্কাউট দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
রবার্ট ব্যাডেন পাওয়েল লন্ডনের হাইড পার্কে জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম রবার্ট স্টিফেনসন স্মিথ লর্ড ব্যাডেন পাওয়েল অব গুলওয়েল (বি.পি.)।
১৯২০ সালে অলিম্পিয়ায় অনুষ্ঠিত প্ৰথম বিশ্ব স্কাউট জাম্বুরিতে বিভিন্ন দেশের স্কাউট আন্দোলনের মধ্যে সংযোগ ও সমন্বয় করার উদ্দেশ্যে বিশ্ব স্কাউট সংস্থা গঠিত হয়। এটি একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন। বিশ্ব স্কাউট সংস্থার প্ৰধান কার্যালয় (ওয়ার্ল্ড স্কাউট ব্যুরো) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত। মহাসচিবের কার্যালয় মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে।
বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশে স্কাউটিংয়ের যাত্রা শুরু ব্রিটিশ আমলে। ১৯৪৭-এর পর ইস্ট পাকিস্তান বয়স্কাউট অ্যাসোসিয়েশনের যাত্রা। ১৯৭২ সালে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বাংলাদেশ বয়স্কাউট অ্যাসোসিয়েশন। ১৯৭৮ সালে আবার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বাংলাদেশ স্কাউটস। ১৯৯৪ সাল থেকে মেয়েরা এর সদস্য হওয়ার অধিকার লাভ করে। আত্মনির্ভরশীল সু-নাগরিক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এ কার্যক্রম বিশ্বব্যাপি সমাদৃত।
আরও পড়ুন: ১৫৬ পদে আইটি অফিসার নেবে সমন্বিত তিন ব্যাংক।
২০১১ সালের হিসাব অনুযায়ী, দেশে ১০লাখ ১৫ হাজার ১১৬ স্কাউট রয়েছেন। কমিউনিটি সেবা, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিশুকল্যাণ, নির্মাণ ও সস্তায় বাড়িঘর তৈরিতে স্কাউটরা সহায়তা করে থাকেন। বাংলাদেশ স্কাউটস সূত্র অনুযায়ী, কমিউনিটি সেবা, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিশুকল্যাণ, নির্মাণ ও সস্তায় বাড়িঘর তৈরিতে স্কাউটসরা সহায়তা করে থাকেন। এ ছাড়া বন্যা, ঝড় ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ সামাল দিতে, অসহায় মানুষের আশ্রয় বা পুনর্বাসনে স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকা পালন করেন তারা।
স্কাউট শব্দের অর্থ চর, গুপ্তচর। ম্যাফেকিং যুদ্ধে থাকাকালে রবার্ট ব্যাডেন পাওয়েল রচিত ‘এইডস টু স্কাউটিং’ বইয়ে দেখিয়েছিলেন চরবৃত্তি অবলম্বন করে কীভাবে কাজ হাসিল করে নিরাপদে ফিরে আসা যায়। ১৯০৭ সালে ব্রাউন সি দ্বীপে তিনি প্রথম স্কাউট ক্যাম্প স্থাপন করেন।
১৯০৮ সালে স্কাউটদের জন্য রচনা করেন ‘স্কাউটিং ফর বয়েজ’ বইটি এবং ওই বছরই আনুষ্ঠানিকভাবে বয় স্কাউটের প্রতিষ্ঠা করেন। ব্যাডেন পাওয়েলের ছোট বোন অ্যাপনেস ব্যাডেন পাওয়েল বড় ভাইয়ের সহযোগিতায় ১৯১০ সালে বয় স্কাউটের অনুরুপ মেয়েদের জন্য একটি সংগঠন গার্লস গাইড মুভমেন্ট গড়ে তোলেন।
রবার্ট ব্যাডেন পাওয়েল ১৮৭৬ সালে একজন লেফটেন্যান্ট হিসেবে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। সামরিক বাহিনীতে কর্মরত থাকাকালীন বিভিন্ন অভিজ্ঞতা থেকে তিনি স্কাউট আন্দোলন গড়ে তোলার প্রেরণা পান। বিশেষ করে ম্যাফেকিং-এর যুদ্ধে তিনি বাস্তব অভিজ্ঞতা ও ধারণা থেকে উপলব্ধি করেন যে, যুবক ও বালকদেরকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করানো সম্ভব। অতঃপর তিনি রাজা সপ্তম এডওয়ার্ডের পরামর্শক্রমে চাকরি ছেড়ে পুরোপুরি স্কউট আন্দোলনে আত্মনিয়োগ করেন।
আরও পড়ুন: একাডেমিক ফলেও সেরা ছিলেন বিজেএসে দ্বিতীয় হওয়া শাওন।
১৯১৬ সালে ১২ বছর পর্যন্ত বয়সের ছেলেমেয়েদের নিয়ে স্কাউটের নতুন শাখা ‘কাব স্কউট’ তৈরি করলেন। ‘কাব’ শব্দের অর্থ সিংহ শাবক। ব্যাডেন পাওয়েল কাবদের জন্য ‘উলফ কাবস হ্যান্ড বুক’ নামে একটি মূল্যবান বই রচনা করেন। এরপর তরুণদের জন্য গঠন করলেন ‘রোভার স্কাউট’ এবং তরুণীদের জন্য ‘রেঞ্জারিং’। মূলত কাব, স্কউট, রোভার, রেঞ্জার, গাইড একই সংগঠন। শুধু ভিন্ন বয়সী ছেলেমেয়েদের জন্য ভিন্ন নাম। ১৯২০ সালে অলিম্পিয়াতে সারা বিশ্বের স্কাউট ও গাইডদের নিয়ে আন্তর্জাতিক সমাবেশ বা জাম্বুরী অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বিশ্ব স্কাউটস-এর ৬টি রিজিওন বা অঞ্চল আছে।
সেগুলো হলো ১.এশিয়া প্যাসেফিক ফিলিপাইন-ম্যানিলা ২. ইউরোপ অঞ্চল সুইজারল্যান্ড-জেনেভা ৩.আফ্রিকা অঞ্চল কেনিয়া-নাইরোবি ৪. ইন্টার আমেরিকা চিলি-সান্টিয়াগো ৫.আরব অঞ্চল মিশর- কায়রো ৬. ইউরেশিয়া অঞ্চল ইউক্রেন-ইয়ালতাগুজরাফ।
১৯৪১ সালের ৮ জানুয়ারি কেনিয়ার নাইরোবিতে মৃত্যুবরণ করেন রবার্ট ব্যাডেন পাওয়েল।