২৮ জেলায় ছড়িয়েছে নিপাহ ভাইরাস, নেই চিকিৎসাও

ছড়িয়েছে নিপাহ ভাইরাস
ছড়িয়েছে নিপাহ ভাইরাস  © সংগৃহীত

বিশ্বমারি ঘটাতে সক্ষম নিপাহ ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ। যার প্রাদুর্ভাব শীতকালীন জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি সমস্যা। যা ২৮টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য অধিপ্তরের হিসাবে, এ ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহার ৮০ শতাংশ। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে এখন পর্যন্ত সারাদেশে আক্রান্ত হওয়া ১২ জনের মধ্যে ১০ জনই মৃত্যুবরণ করেছে। অথচ এ ভাইরাসের কোনো ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা নেই। তাই ঝুঁকিতে থাকা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে খেজুরের কাঁচা রস খাওয়া থেকে বিরত করা যাচ্ছে না। এই ভাইরাস সম্পর্কে ধারণাও নেই তাদের।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে সাধারণত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এই সময়টাতেই খেঁজুরের রস সংগ্রহ করা হয়। আর বাদুড় গাছে বাঁধা হাড়ি থেকে রস খাওয়ার চেষ্টা করে বলে ওই রসের সঙ্গে তাদের লালা। সেই রস খেলে মানুষের মধ্যেও এই রোগ ছড়িয়ে পারে। এছাড়া বাদুরে খাওয়া ফলমূলের অংশ খেলেও এ রোগ ছড়াতে পারে।অথচ এ বিষয়ে প্রচারের উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ নেই প্রশাসনের। 

গত ৩০ জানুয়ারি রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার করমদোশী গ্রামের শিশু সিয়াম হোসেন। পরীক্ষার পর জানা যায়, সিয়ামের মৃত্যু হয়েছে নিপাহ ভাইরাসে। এ ঘটনার পর আইইডিসিআরের ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল বাগাতিপাড়ায় খেজুরের রস খাওয়া ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করে। কিন্তু নিপাহ ভাইরাসের ঝুঁকিতে থাকা এই জনপদে থেমে নেই কাঁচা রস খাওয়ার প্রবণতা। মহাসড়কের পাশে ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে নির্বিঘ্নে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা রস।

বিশিষ্টজনেরা বলছেন, এই ভাইরাসে আক্রান্তদের মৃত্যুহার আশঙ্কাজনক। তাই এই বার্তা জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে সচেতনতামূলক উদ্যোগ আরও জোরদার করা দরকার। খেজুরের কাঁচা রস পান না করার বিষয়ে বারবার সতর্ক করার পরও মানুষের মধ্যে সচেতনতা আসেনি। আর সে কারণেই এ বছর নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। এখনই সতর্ক না হলে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠতে পারে।

চিকিৎসকরা বলছেন, আক্রান্ত ব্যক্তির বা পশুর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসার ২ সপ্তাহের মধ্যে মৃদু থেকে তীব্র শ্বাসকষ্ট, জ্বরসহ মাথাব্যথা, মাংসপেশিতে ব্যথা, খিঁচুনি, জ্ঞান হারানোর মতো লক্ষণ দেখা দিলে ওই ব্যক্তি নিপাহ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন বলে ধরে নেয়া হয়।

আরও পড়ুন: বায়ুদূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা

বাদুড় থেকে সংক্রমিত নিপাহ ভাইরাসের কোনো চিকিৎসা নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, নিপাহ একটি মারাত্বক ভাইরাস। এতে আক্রান্তদের ৭৫ শতাংশেরই মৃত্যু হয়। এ ভাইরাসের কোনো ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা নেই। কাজেই আমাদের সবাইকে সাবধানে থাকতে হবে। মানিকগঞ্জ বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে শনিবার রাতে একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমনটি জানান।

জাহিদ মালেক জানান, চলতি শীত মৌসুমে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত আটজনের মধ্যে পাঁচজনই মারা গেছেন। এরইমধ্যে আক্রান্তদের জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) হাসপাতালে ২০টি এবং মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ৫টি বেড চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হয়েছে। আমাদের দেশে অনেক উন্নয়ন হয়েছে ও অনেক উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। 


সর্বশেষ সংবাদ