জলাতঙ্ক মুক্ত বিশ্ব গড়তে কাজ করে যাচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:১১ AM , আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:২২ AM
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার দেশে জলাতঙ্ক রোগে মৃত্যু শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসতে ২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে আসছে। তিনি বলেন, জলাতঙ্ক মুক্ত বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যেও আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ‘বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস-২০২২’ উপলক্ষে গতকাল (মঙ্গলবার) দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০০৯ সালের আগে প্রতিবছর জলাতঙ্ক রোগে মৃত্যুর সংখ্যা দুই হাজারের বেশি ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০১০ সাল থেকে আমাদের সরকার কর্তৃক জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচি গ্রহণ এবং কার্যকর বাস্তবায়নের ফলে জুলাই ২০২২-এ মৃত্যুর সংখ্যা ২৬ জনে নেমে এসেছে। এমডিজি অর্জনের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এসডিজি ৩.৩ অর্জন এবং ২০৩০ সালের মধ্যে জলাতঙ্ক মুক্ত বিশ্ব গড়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। আমরা জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিনামূল্যে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা সরবরাহ করছি। ব্যাপক হারে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, আক্রান্তদের চিকিৎসা ও টিকা প্রদানের পাশাপাশি কুকুরের টিকাদান এবং সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দেশকে জলাতঙ্কের ঝুঁকি থেকে মুক্ত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি’।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস-২০২২' উদযাপিত হচ্ছে জেনে আনন্দিত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘মৃত্যু আর নয়, সবার সঙ্গে সমন্বয়’ সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনি অঙ্গীকার অনুযায়ী, গত সাড়ে তেরো বছরে আমরা স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছিলাম। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে আমাদের সরকারের এই জনকল্যাণমুখী প্রকল্পটি বন্ধ করে দিয়েছিল। ফলে সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছিল। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর, আমরা স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে পুনরায় কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করি। এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করেছি। যেখানে বিনামূল্যে ৩০ প্রকার ঔষধ দেওয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় স্বাস্থ্য নীতি, ২০১১’ প্রণয়ন করা হয়েছে, সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনকে প্রাধান্য দিয়ে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। সরকার সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যেও বহুখাতভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা, ২০১৮-২০২৫ বাস্তবায়ন করে চলছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়ন, সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো উন্নয়ন, চিকিৎসা এবং নার্সিং শিক্ষা প্রসারের মাধ্যমে পর্যাপ্ত জনবল সৃষ্টি এবং নিয়োগ, স্বাস্থ্যখাতে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার, আইন ও নীতিমালা প্রণয়নসহ নানা ধরনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করছি। চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি, সাধারণ হাসপাতাল ও বিশেষায়িত হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করেছি। স্বাস্থ্যখাতে সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ এমডিজি পুরস্কার, সাউথ-সাউথ পুরস্কার এবং গ্যাভি পুরস্কার অর্জন করেছে। আমাদের দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় গড় আয়ুষ্কাল ৮০ বছরসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছি। সে অনুযায়ী আমরা ৪র্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি গ্রহণ এবং হেলথ কেয়ার ফাইন্যান্সিং স্ট্রাটেজি (২০১২-২০৩২) প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। করোনা মহামারি মোকাবিলায় সকলের জন্য বিনামূল্যে টিকার ব্যবস্থা করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ‘রূপকল্প-২০৪১’ যথাযথভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হবো। তিনি ‘বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস-২০২২’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
সূত্র: বাসস