ঢাবির ভাষা ও ভাষা-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জ্ঞানচর্চা সহায়ক অবকাঠামোর চালচিত্র
- ডক্টর এ বি এম রেজাউল করিম ফকির
- প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২০, ১২:৩৮ PM , আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০১:৩৫ AM
১. পূর্বকথা
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী কর্তৃক প্রচারিত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার প্ল্যান বিষয়ে সম্মানিত শিক্ষকদের সুচিন্তিত মতামত ও সুপারিশ’-শীর্ষক একটি পত্রে মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পর্যায়ের সম্মানিত শিক্ষকগণের সুচিন্তিত মতামত ও সুপারিশ আহ্বান করা হয়েছে। এই আহ্বান সম্বলিত পত্রের শিরোনাম থেকে বুঝার উপায় নেই যে, এটি কী সম্পর্কিত মহাপরিকল্পনা (মাস্টারপ্ল্যান-এর বাংলা প্রতিশব্দ হলো―মহাপরিকল্পনা)।
কোনো প্রতিষ্ঠানে বিরাজিত অবকাঠামো উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়ে থাকে। অবকাঠামো আবার দু’প্রকার: ভৌত অবকাঠামো ও কোমল অবকাঠামো। ভৌত অবকাঠামো হলো-শিক্ষাভবন, পরীক্ষণাগার, মিলনায়তন ও ছাত্রাবাস ইত্যাদি। আর কোমল অবকাঠামো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম, শিক্ষাপ্রশাসন ও নিয়োগ-পদোন্নতি প্রক্রিয়া ইত্যাদি পরিচালনায় প্রয়োজনীয় নিয়ম-নীতি।
বস্তুত: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত ও কোমল উভয় অবকাঠামোই দুর্বল। একটি সুষ্ঠু শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালনার মতো অবকাঠামো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান নেই। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী কর্তৃক প্রচারিত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার প্ল্যান বিষয়ে সম্মানিত শিক্ষকদের সুচিন্তিত মতামত ও সুপারিশ’-শীর্ষক পত্রে ভৌত অবাকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে মতামত দানের কথা বলা হয়েছে।
কিন্তু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম সুচাররূপে পরিচালনা করতে ভৌত ও কোমল- এই উভয় অবকাঠামোরই উন্নয়ন সাধনে মহাপরিকল্পনা হাতে নেওয়া উচিত। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামোর চেয়েও, কোমল অবকাঠামোর বিষয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মান বা Ranking নির্ভর করে, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোমল অবকাঠামোর উপর। আমি এ পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা ও ভাষা-সংশ্লিষ্ট শিক্ষাব্যবস্থার কোমল অবকাঠামো নিয়ে আমার মতামত তুলে ধরবো।
২. ভাষা ও ভাষা সংশ্লিষ্ট শিক্ষাব্যবস্থার কোমল অবকাঠামোর অর্থ
কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থার কোমল অবকাঠামো গড়ে উঠে রাষ্ট্রের শিক্ষানীতিকে কেন্দ্র করে। সে অনুসারে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা ও ভাষা শিক্ষাব্যবস্থার কোমল অবকাঠামো গড়ে উঠে রাষ্ট্র প্রণীত ভাষানীতিকে কেন্দ্র করে। এখানে জানা প্রয়োজন যে, ভাষানীতি বলতে কী বুঝায়। ভাষানীতি হলো-রাষ্ট্রভাষা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা, ধ্রুপদী ভাষা ও বিদেশী ভাষা ইত্যাদি বিভিন্ন শ্রেণীর ভাষার গুরুত্ব অনুযায়ী গঠন, মর্যাদা ও প্রায়োগিকতা আরোপণ সম্পর্কিত নীতিমালা।
বাংলাদেশের কোনো ভাষানীতি নেই, কাজেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের বিভন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোমল অবকাঠামো গড়ে উঠেছে কতকগুলো প্রথাগত চিন্তাধারাকে কেন্দ্র করে। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের কোনো ভাষানীতি না থাকলেও, স্বায়ত্ত্বস্বাশিত বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভাষা শিক্ষাব্যবস্থা উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের সুযোগ রয়েছে।
৩. ভাষা ও ভাষা সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষাব্যবস্থার চালচিত্র
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট ও অন্যান্য বিভাগে ভাষা ও ভাষা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শিক্ষাব্যবস্থার চালচিত্র তিনটি ভাগে উপস্থাপন করা যেতে পারে:
৩.১. কলা অনুষদভুক্ত ভাষা ও ভাষা সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষাব্যবস্থার চালচিত্র
কলা অনুষদে ভাষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে পঠন-পাঠন হয়ে থাকে। কলা অনুষদের অন্তর্ভুক্ত ভাষা সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো হলো-ভাষা বিজ্ঞান বিভাগ, বাংলা বিভাগ, ইংরেজি বিভাগ, আরবি বিভাগ, সংস্কৃত বিভাগ, পালি ও বৌদ্ধ অধ্যয়ন বিভাগ, ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ ও উর্দু বিভাগ। এই বিভাগগুলোর অধিকাংশই ১৯২১সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মলগ্নে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
শুরুতে বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগ একান্নবর্তী বিভাগ ছিলো। পরবর্তীতে সংস্কৃত ও পালি বিভাগ এবং উর্দু ও ফার্সি বিভাগগুলো একান্নবর্তী বিভাগ হিসাবে চালু ছিলো। এগুলো বিভিন্ন সময়ে আলাদা হয়ে বর্তমান ভাষা সংশ্লিষ্ট বিভাগে রূপ নিয়েছে। সর্বশেষ যে বিভাগটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, তা হলো-উর্দু বিভাগ, যা ২০০৭ সালে আলাদা বিভাগ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
এই বিভাগগুলোর কতকগুলোর নাম থেকে সহজে অনুমেয় যে, পালি ও বৌদ্ধ অধ্যয়ন বিভাগ এবং ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে যথাক্রমে পালি ভাষার সাথে বৌদ্ধধর্ম এবং ফার্সি ভাষার সাথে ফার্সি সাহিত্য পঠন-পাঠন হয়ে থাকে। কিন্তু বাংলা বিভাগ, ইংরেজি বিভাগ, আরবি বিভাগ, সংস্কৃত বিভাগ ও উর্দু বিভাগে কী পঠন-পাঠন হয়ে থাকে, তা বিভাগের নাম থেকে পরিষ্কার নয়।
এগুলোর পাঠ্যসূচী পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, বাংলা বিভাগ, ইংরেজি বিভাগ, আরবি বিভাগ, সংস্কৃত বিভাগ ও উর্দু বিভাগে যথাক্রমে বাংলা সাহিত্য, ইংরেজি সাহিত্য, আরবি ভাষা ও ইসলাম ধর্ম, সংস্কৃত ভাষা ও বৈদিক ধর্ম এবং উর্দু ভাষা ও সাহিত্যের পঠন-পাঠন হয়ে থাকে।
৩.২. আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে ভাষা ও ভাষা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শিক্ষাব্যবস্থার চালচিত্র
আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট (আভাই) প্রতিষ্ঠিত হয়- ১৯৭৪ সালে। কিন্তু ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠাকালে এর নাম ছিলো- বিদেশী ভাষা বিভাগ, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাথে একান্নবর্তী বিভাগ হিসাবে সামজিক বিজ্ঞান অনুষদের অঙ্গীভূত ছিলো। বর্তমান স্থানে নতুন শিক্ষাভবন স্থাপন করা হলে, বিদেশী ভাষা বিভাগকে ১৯৭৪ সালে আভাই নামে এই শিক্ষাভবনে স্থানান্তর করা হয়। আভাই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো যুক্ত-পাকিস্তানের ভাষা শিক্ষাব্যবস্থা মহাপরিকল্পনার অধীনে।
যুক্ত-পাকিস্তান আমলে পাকিস্তান সরকার ঢাকা ও ইসলামাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশী ভাষার পঠন-পাঠন ও গবেষণার জন্য দু’টি যুগল আভাই প্রতিষ্ঠা করে। আভাই-এর সংবিধি (5th Statutes of the Dhaka University, https://www.du.edu.bd/download/statutes/DU-6th-Statutes.pdf) অনুযায়ী এখানে আরবি, বাংলা (বিদেশীদের জন্য), বর্মী, চীনা, ইংরেজি, ফরাসি, জার্মান, হিন্দি, ইন্দোনেশিয়ান, ইতালীয়, জাপানি, মালয়, নেপালি, ফার্সি, রুশ, সিংহলি, স্পেনীয়, সোয়াহিলি, তামিল, থাই, তুর্কি এবং উর্দু ভাষার পঠন-পাঠন ও গবেষণা হওয়ার কথা। কিন্তু বর্তমানে আভাইতে ১৫টি ভাষার পঠন-পাঠন হয়ে থাকে।
সাম্প্রতিকালে আভাইতে চীনা, ফরাসি ও জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষাক্রম চালুকরণের ফলে, বিদেশী ভাষার সাথে ভাষা বিজ্ঞান, সাহিত্য ও সংস্কৃতির পঠন-পাঠন শুরু হয়েছে। কিন্তু আভাই-তে এসব ভাষার উপর তেমন কোনো গবেষণা কর্ম পরিচালনা করা হয় না।
৩.৩. অন্যান্য বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে ভাষা শিক্ষার চালচিত্র
আভাই ও কলা অনুষদভুক্ত বিভিন্ন বিভাগে ভাষা ও ভাষা সংশ্লিষ্ট বিষয় পঠন-পাঠনের বাইরেও, বিভিন্ন অনুষদ ও ইনস্টিটিউটে সীমিত পর্যায়ে বাংলা ও ইংরেজি ভাষাসহ কয়েকটি বিদেশী ভাষার পঠন-পাঠন হয়ে থাকে। তাছাড়া ১০০ নম্বরের বাংলা ও ইংরেজি ভাষার কোর্স বিভিন্ন বিভাগের পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ভাষা বিজ্ঞান বিভাগ, আন্তর্জাতিক ব্যবসা অধ্যয়ন বিভাগ, ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটে ১০০ নম্বেরর বিভিন্ন বিদেশী ভাষার কোর্স মূল পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
৪. কোমল কাঠামো উন্নয়নে করণীয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা ও ভাষা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কার্যক্রম সূচারুরূপে পরিচালনা করতে, বর্তমান কোমল অবকাঠামোটি সংস্কার সাপেক্ষে আধুনিক শাস্ত্রীয় কার্যক্রম উপযোগী একটি কোমল অবকাঠামো নির্মাণ করা প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্যে যে, ‘ভাষা’ অভিধায় যত শিক্ষা কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত হয়, তার মোটামুটি দু’টি দিক রয়েছে―১) ভাষাগত দক্ষতার দিক এবং ২) জ্ঞানীয়/শাস্ত্রীয় দিক। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় গৃহীত সিদ্ধান্ত গ্রহণে এই দু’টি দিককেই উপেক্ষা করা হয়ে থাকে।
৪.১. ভাষাগত দক্ষতার দিক
এ প্রেক্ষাপটে ভাষাগত দক্ষতার বিষয়টি প্রথমেই পর্যালোচনা করা যাক। ভাষাগত দক্ষতা কয়েকটি ক্রমোচ্চ ধাপে বিভক্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত অনেকগুলো ভাষা- ইংরেজি, জার্মান ও জাপানি ইত্যাদি ভাষার দক্ষতার মান নির্ধারণে প্রমিত মানদণ্ড রয়েছে। ইংরেজি ভাষার দক্ষতা নিরূপণে সহায়ক প্রমিত মানদণ্ডের মধ্যে রয়েছে- IELTS ও ToEFL।
অথচ আমাদের জাতীয় ভাষা বাংলা ভাষার দক্ষতার মান নিরূপক কোন মানদণ্ড নেই। কিন্তু উচ্চশিক্ষা কার্যক্রমটি অনুষ্ঠিত হতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়েরই যথেষ্ট ভাষাগত দক্ষতা প্রয়োজন। কারণ জ্ঞানের আধার হলো ভাষা। ব্যাক্তিবিশেষের জ্ঞান ভাষার কাঠামোতে পরিব্যপ্ত থাকে। কাজেই, শিক্ষক নিয়োগে, শিক্ষার্থী ভর্তিতে এবং পরীক্ষা পদ্ধতিতে ভাষাগত দক্ষতার বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া উচিত।
৪.১.১. শুন্য থেকে ভাষা শিক্ষায় ভাষাগত দক্ষতার উপযোগিতা
পূর্ববর্তী অনুচ্ছেদে বিবৃত করা হয়েছে যে, বিভিন্ন অনুষদভুক্ত কতকগুলো বিভাগ ও আভাইতে শুন্য থেকে ভাষাগত দক্ষতা অর্জনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। এসব ভাষার মধ্যে রয়েছে- i) প্রতিবেশী দেশসমূহের বিদেশি ভাষা: উর্দু ও হিন্দি, এবং ii) দূরদশসমূহের বিদেশি ভাষা: জাপানি, চীনা, জার্মান, তুর্কী, রুশ ও ফরাসি ইত্যাদি। এসব ভাষা কর্মক্ষেত্রে ব্যবহারে বা জ্ঞানার্জনের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করতে হলে, ভাষাগত দক্ষতার প্রয়োজন হয়।
বিদেশের কোনো প্রতিষ্ঠানই লোকবল নিয়োগে বা শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে ভাষাগত দক্ষতায় ছাড় দেয় না। সেজন্য তারা বাংলাদেশের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কোনো সুযোগ দিতে- উভয়েরই ভাষাগত দক্ষতাকে বিবেচনায় নিয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়টি আমলে নেওয়া হয় না। ফলে আমাদের ঢা.বি.-এর শিক্ষাব্যবস্থায় উদ্দীষ্ট ভাষাগত দক্ষতা জন্মায় না।
আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব বিভাগে বিদেশি ভাষার পাঠ দেওয়া হয়, তার অধিকাংশেরই পাঠ্যক্রমে একটি বেশি বিদেশি ভাষা কোর্স নেই। কিন্তু ভাষাগত দক্ষতার মানদণ্ডে, যেমন- Common European Framework for Refeferenc (CEFR), যা প্রায় সব শিক্ষাবিদই অনুসরণ করে থাকেন, ভাষাগত দক্ষতার ৬টি ধাপের কথা বলা হয়েছে।
এর প্রথম ধাপটি কৃতকার্যভাবে অতিক্রম করতে ১৫০ঘন্টার ক্লাস ও তার দ্বিগুণ সময় স্ব-অধ্যয়নের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এই ধাপ অতিক্রমকারীরা কেবলই অভিযোজনমূলক দক্ষতা অর্জন করতে পারে। সে অর্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে শুধুমাত্র নিম্নতম ভাষাগত দক্ষতা গঠন উপযোগী কোর্স প্রবর্তন করতে হলে, ১০ ক্রেডিট-এর সমান কোর্স প্রবর্তন করা দরকার। কিন্তু একটি ভাষাকে মোটামুটি রপ্ত করতে হলে, প্রায় ৪০ ক্রেডিট-এর সমপরিমাণ কোর্স প্রদান করা প্রয়োজন।
তবে ভাষা বিজ্ঞান বিভাগ, বাংলা বিভাগ, আরবি বিভাগ, ইংরেজি বিভাগ বা আভাই-এর যেসব বিভাগে ভাষা বিজ্ঞান পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, সেখানে ১/২টি বিদেশি ভাষা কোর্স ভাষা বিজ্ঞানে ব্যুৎপত্তি সৃজনে সহায়ক হতে পারে, তবে ভাষাগত দক্ষতা জন্মাবে না। কাজেই উক্ত বিভাগ ব্যতীত অন্যান্য বিভাগ বা ইনস্টিটিউট, যেমন- ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটে ১টি কোর্সের মাধ্যমে, ভাষা শিক্ষাদানের যে কার্যক্রম চালু রয়েছে, তা অর্থহীন।
সেজন্য শুন্য থেকে ভাষা শিক্ষায় ভাষাগত দক্ষতা বিষয়ক শিক্ষা কার্যক্রম সুচারুরূপে পরিচালনা করতে শিক্ষক নিয়োগে, শিক্ষার্থী ভর্তিতে এবং পরীক্ষা পদ্ধতিতে ভাষাগত দক্ষতার বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া উচিত।
৪.১.২. দক্ষতাপুষ্ট ভাষায় ভাষাগত দক্ষতার উপযোগিতা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অনেকেই বাংলা, ইংরেজি, আরবি ও উর্দু-এ ৪টি ভাষায় ভাষাগত দক্ষতা নিয়ে ভর্তি হয়ে থাকে। এর মধ্যে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষতাটি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ লাভ করে থাকে শুন্য থেকে শুরু করে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত জাতীয় শিক্ষাকার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে। কিন্তু এই ভাষা দু’টির ১০০ নম্বরের ভাষাগত দক্ষতা বিষয়ক শিক্ষা কার্যক্রম অনেক বিভাগের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অথচ, বিদ্যালয় পর্যায়ে ১২বছর একটানা বাংলা ও ইংরেজি শেখার পর ১০০ নম্বরের বাংলা ও ইংরেজি কোর্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বাংলা ও ইংরেজি দক্ষতায় কিছুই যোগ হয় না।
তা সত্ত্বেও আভাইতে শুন্য থেকে শুরু হওয়া বিদেশী ভাষা শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য পরিচালিত জুনিয়র/সিনিয়র সার্টিফিকেট কোর্সের কাঠামোটিকে ব্যবহার করে ইংরেজি ভাষা কোর্স প্রদান করা হচ্ছে। তার অর্থ হলো-একজন শিক্ষার্থী নিজ বিভাগ ও আভাই- এই দুই বিভাগে ইংরেজি পড়ছে। এই ব্যবস্থাটি উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার মূলনীতির পরিপন্থী। এই ধরণের বাংলা ও ইংরেজি মূলত: বিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ। কাজেই ঢাবি থেকে ১০০/২০০ নম্বরের বাংলা/ইংরেজি শিক্ষা কার্যক্রম ব্যয়সাপেক্ষ, কিন্তু অর্থহীন।
৪.১.৩. শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে ভাষাগত দক্ষতার উপযোগিতা
যে সব দেশে উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা রয়েছে, সেসব দেশে ভর্তি পরীক্ষায় যেসব Apptitude Test পরিচালনা করা হয়, তার অর্ধেকের মতো অংশ থাকে ভাষাগত দক্ষতা নিরূপক বিষয়বস্তু। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে ভর্তির ক্ষেত্রে বাংলা বা ইংরেজিতে দক্ষতা নিরূপক কোনো Apptitude Test গ্রহণ করা হয় না।
একইভাবে শিক্ষক নিয়োগে প্রার্থীর ভাষাগত দক্ষতা নিয়োগের শর্ত হিসাবে আমলে নেওয়া হয় না। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগে ও শিক্ষার্থী ভর্তিতে ভাষাগত দক্ষতা নিরূপক পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করা প্রয়োজন। বিশেষ করে যে সব বিভাগে ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়, সেসব বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষার্থী ভর্তিতে ToEFL-এর মত কোন পরীক্ষা পদ্ধতির প্রবর্তন করা প্রয়োজন। তা না হলে শিক্ষা কার্যক্রম সুচারুরূপে পরিচালিত হবে না। জ্ঞানচর্চা ব্যহত হবে। বাস্তবে এখন তাই হচ্ছে।
৪.২. জ্ঞানীয়/শাস্ত্রীয় দিক
ভাষা সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও ভাষা বহির্ভূত বিভাগ-এই উভয় প্রকার বিভাগেই কোনো একটি ভাষার মাধ্যমে একটি জ্ঞানীয় বা শাস্ত্রীয় বিষয় পড়ানো হয়। কাজেই শিক্ষক ও শিক্ষার্থী- এই উভয়েরই নিশ্চিত ভাষাগত দক্ষতা থাকলে, শিক্ষাব্যবস্থায় জ্ঞানীয়/শাস্ত্রীয় কার্যক্রম সুচারুরূপে পরিচালিত হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় ভাষাগত দক্ষতা না থাকলে জ্ঞানীয়/শাস্ত্রীয় কার্যক্রম ব্যহত হয়। কিন্তু ভাষা সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী-এই উভয়েরই উচ্চ পর্যায়ের ভাষাগত দক্ষতা না থাকায়, এসব বিভাগের শিক্ষার মান নিয়ে উদ্বেগের কারণ রয়েছে।
কিন্তু বাস্তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভাষা সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভাষাগত দক্ষতার মান কীরূপ তা স্পষ্ট নয়। এর কারণ শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষার্থী মূল্যায়নে ভাষাগত দক্ষতা পরিমাপক প্রমিত মানদণ্ড ব্যবহার না করা। এসব বিভাগে জ্ঞানীয়/শাস্ত্রীয় কার্যক্রমের বিষয়টিও অস্পষ্ট। কিন্তু একটি ভাষা সংশ্লিষ্ট বিভাগে জ্ঞানীয়/শাস্ত্রীয় শিক্ষা কার্যক্রমের পরিধি নির্ধারণ করা প্রয়োজন। এ বিষয়টি স্পষ্ট করতে একটি ছক ব্যবহার করা হলো-
বিভিন্ন ভাষা | ধর্ম | দর্শন | সাহিত্য | ভাষা বিজ্ঞান | ইতিহাস | সভ্যতা ও সংস্কৃতি | বিদেশ/আঞ্চলিক বিদ্যা | শিক্ষাদান পদ্ধতি |
বাংলা | ☑ | ☑ | ||||||
ইংরেজি | ☑ | ☑ | ||||||
আরবি | ||||||||
সংস্কৃত | ☑ | ☑ | ||||||
পালি | ☑ | ☑ | ||||||
ফারসি | ☑ | ☑ | ||||||
উর্দু | ||||||||
চীনা (আভাই) | ☑ | ☑ | ☑ | ☑ | ||||
জাপানি (আভাই) | ☑ | ☑ | ☑ | ☑ |
ফরাসি (আভাই) | ☑ | ☑ | ☑ | ☑ | ||||
ইংরেজি (আভাই) | ☑ | ☑ |
উক্ত ছকটিতে ভাষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগে জ্ঞান/শাস্ত্র চর্চার পরিধি সম্পর্কিত একটি অসম্পূর্ণ চিত্র প্রতিভাত হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগে কী কী বিষয়ে জ্ঞান/শাস্ত্র চর্চা হয়ে থাকে, তার পূর্ণাঙ্গ চিত্র তৈরি করতে হলে একটি জরীপের প্রয়োজন হবে।
এ ছকটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের জ্ঞান/শাস্ত্র চর্চার চালচিত্র সম্পর্কে একটি সম্যক ধারণা নেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে। এখানে প্রদর্শিত ভাষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের জ্ঞান/শাস্ত্র চর্চার চালচিত্র থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে সামগ্রিকভাবে যুগোপযোগী জ্ঞান/শাস্ত্র চর্চা সহায়ক কোমল অবকাঠামোর অনুপস্থিতি রয়েছে বলে জানান দেয়। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষা সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহে জ্ঞান/শাস্ত্র চর্চার বিষয়বস্তু হিসাবে নিচের বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।
৪.২.১. বাঙ্গালি সভ্যতা ও সংস্কৃতি শাস্ত্র
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাঙ্গালি জাতির সভ্যতা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে পঠন-পাঠনের সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে চারুকলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও কলা অনুষদের কয়েকটি বিভাগে পঠন-পাঠন হয়ে থাকে। কিন্তু বঙ্গবিদ্যা বিষয়ক জ্ঞান/শাস্ত্র চর্চার বিষয়টি এই বিভাগগুলোতে সার্বিকভাবে পঠন-পাঠন হয় না। তবে, বর্তমান বাংলা বিভাগে এর কিছুটা পঠন-পাঠন হয়ে থাকে। কিন্তু বিভাগের নাম ‘বাংলা’ থাকায় এ বিভাগের জ্ঞান/শাস্ত্র চর্চার বিষয়টি উহ্য থাকে। কিন্তু এই বিভাগে বঙ্গবিদ্যার পঠন-পাঠনের সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে এবং সে অনুসারে বিভাগের নামও পরিবর্তন করা যেতে পারে।
৪.২.২. ধ্রুপদী শাস্ত্র
বাঙ্গালি জাতির একটি হিরন্ময় অতীত রয়েছে। এই অতীত হলো বাঙ্গালি জাতির সভ্যতা ও ঐতিহ্য। বাঙ্গালি জাতির বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নির্মাণে অতীতকে জানা প্রয়োজন। অতীতকে জানা মানে হলো ধ্রুপদী চর্চা। কিন্তু বাঙ্গালি জাতির সভ্যতা ও ঐতিহ্যের প্রায় সবকিছুই লিখিত হয়েছে-সংস্কৃত, পালি, ফার্সি ও তিব্বতি ভাষায়। তাই সংস্কৃত, পালি, ফার্সি ও তিব্বতি ইত্যাদি ধ্রুপদী ভাষা বিভাগকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ধ্রুপদী শাস্ত্র চর্চার অবকাঠামোকে এমনভাবে গড়ে তোলা প্রয়োজন, যেন দেশে ধ্রুপদী চর্চার একটি আবহ সৃষ্টি হয়। উল্লেখযোগ্য যে, বাঙ্গালি জাতি পালি ভাষার উত্তরাধিকার প্রাপ্ত জাতি। কাজেই এই ভাষাকে রক্ষা করার দায়িত্ব বাংলাদেশের উপর বর্তায়।
৪.২.৩. বিদেশবিদ্যা বা আঞ্চলিকবিদ্যা চর্চা
বিশ্বায়নের যুগে বিশ্বায়নের সুবিধা নিতে, বাংলাদেশে আঞ্চলিক বিদ্যা/বিদেশ বিদ্যা বিষয়ে জ্ঞানসম্পন্ন অনেকগুলো চিন্তকবর্গ (Thinktank) গড়ে তোলা প্রয়োজন। সেজন্য, বর্তমানে ঢা.বি.-তে অন্তর্ভুক্ত ভাষা সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে আঞ্চলিক বিদ্যা/বিদেশ বিদ্যা বিষয় জ্ঞানচর্চা সহায়ক অবকাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে আরবি, উর্দু, ফার্সি বিভাগ এবং আভাই-তে এ বিষয়ে জ্ঞান চর্চার সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে। তাছাড়া, জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ইংরেজি বিভাগসমূহের জ্ঞানচর্চার রেওয়াজকে উদাহরণ হিসাবে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ইংরেজি বিভাগটির কোমল অবকাঠামো ঢেলে সাজানো যেতে পারে।
উল্লেখ্য যে, জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে যেসব দেশের রাষ্ট্রভাষা ও দাপ্তরিক ভাষা ইংরেজি, সেসব দেশ (যেমন-কেনিয়া ও নিউজিল্যণ্ড) কেন্দ্রিক আঞ্চলিক বিদ্যা/বিদেশ বিদ্যা সম্পর্কিত বিষয়ের পঠনপাঠন হয়ে থাকে। জাপানের এই উদাহরণকে সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগকে কেন্দ্র করে এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ বিষয়ক জ্ঞানচর্চার কোমল অবকাঠামো গড়ে তোলা যেতে পারে।
৪.২.৪. ভাষা শিক্ষাদান পদ্ধতি বিষয়ক চর্চা
বিদ্যালয় পর্যায়ে যেসব ভাষার পঠন-পাঠন হয়ে থাকে, সেসব ভাষায় শিক্ষাদানে দক্ষ শিক্ষক সৃষ্টির জন্য ভাষা শিক্ষাদান পদ্ধতি সম্পর্কিত ফলিত বিদ্যা চর্চার অবকাঠামো প্রয়োজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ইংরেজি শিক্ষাদান পদ্ধতি বিষয়ক পঠন-পাঠন হয়ে থাকে আভাই-তে ও ইংরেজি বিভাগে। আভাই-তে TESOL (নিয়মিত) ও ELT (অনিয়মিত) নামের দু’টি ভিন্ন প্রোগ্রাম চালু রয়েছে, যেখানে ইংরেজি ভাষা শিক্ষাদান সম্পর্কিত বিষয়ে পঠন-পাঠন হয়ে থাকে। অথচ আমাদের দেশে বিদ্যালয় পর্যায়ের পাঠ্যসূচীতে বাংলা, আরবি, ইংরেজি, সংস্কৃত ও পালি ভাষা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সেজন্য উক্ত ভাষার প্রত্যেকটির জন্যই ভাষা শিক্ষাদান বিষয়ক ফলিত জ্ঞান চর্চার প্রয়োজনীতা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে ইংরেজি ছাড়া অন্য কোনো ভাষার শিক্ষাদান পদ্ধতি সম্পর্কিত জ্ঞানচর্চার সুযোগ নেই। কাজেই জাতীয় চাহিদার কথা বিবেচনা করে বাংলা, আরবি, ইংরেজি, সংস্কৃত ও পালি ভাষায় শিক্ষাদান বিষয়ক জ্ঞানচর্চার কোমল অবকাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন।
৫. উপসংহার
ভাষা ও ভাষা সংশ্লিষ্ট বিদ্যা সম্পর্কিত জ্ঞানচর্চার অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হলে, বিদ্যমান ভাষা ও ভাষা সংশ্লিষ্ট বিভাগ/ইনস্টিটিউট গুলোর শিক্ষা-প্রশাসনের পুনর্গঠন করা প্রয়োজন।
লেখক: অধ্যাপক, জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়