স্কুল দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত করে বিসিএস ক্যাডার নিয়োগ দিলে শিক্ষার মান বাড়বে
- অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন
- প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৫ PM , আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৯ PM
সারাবিশ্বে স্কুল হলো দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত। এমনকি ভারতেও দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত। বাংলাদেশের সব সরকারি স্কুল দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করে সেখানে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারদের নিয়োগ দিলে স্কুলের শিক্ষার মান অনেক বৃদ্ধি পাবে। ছোটোখাটো কলেজগুলোর কিছু কলেজকে শুধু ডিগ্রি পাস কোর্স এবং বাকিগুলোকে কারিগরি বিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হোক। বড় বড় কলেজকে শুধু অনার্স পড়ানোর অনুমতি দেওয়া হোক।
বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউটগুলোয় যেখানে গবেষণা করানো হয়, কেবল সেসব প্রতিষ্ঠানকে মাস্টার্স পড়ানোর অনুমতি দেওয়া হোক। ভারতে কলেজগুলোর শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয় ইউজিসির মাধ্যমে। সেখানে তাদেরকে National Eligibility Test (NET) পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ হয়। Assistant professor পদের জন্য মাস্টার্সে ৫৫ শতাংশ পেতে হয়। তার সঙ্গে NET qualified হতে হয়। তারা কলেজগুলোতে অনার্স এবং পাস কোর্স পড়ান। শুরুতে বেতন assistant professor - মূল বেতন ৫৭ হাজার। DA, house rent allowance সহ সবমিলিয়ে এটা হয় ৭৩ হাজার রুপি বেতন পান, যা বাংলাদেশী টাকায় ১ লাখ ২ হাজার টাকা হয়।
আমার এক ছাত্র সাত বছর হয় বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দিয়ে প্রভাষক হিসাবে নিয়োগ পেয়েছে। বেতন ৩৫ হাজার টাকা। তার সহপাঠীরা যারা বিসিএস প্রশাসন বা অন্যান্য ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছে, তাদের বেশ আগেই একটি প্রমোশন হয়ে গেছে। আমার ছাত্র হয়তো আগামী বছর সহকারী অধ্যাপক হবে, যখন তার বেতন হবে ৫০ হাজার টাকার মতো- যেখানে ভারতের সহকারী অধ্যাপক বেতন পাবে তার দ্বিগুনের বেশি।
আরো পড়ুন: দেশে শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও নেই কোনো এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম
আর ভারতের কলেজের একজন Associate professor সবমিলিয়ে বেতন পান ৯৪ হাজার রুপি, যা বাংলাদেশী টাকায় ১ লাখ ৩১ হাজার টাকা হয়। বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকও ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা পান না। যাই হোক কলেজ শিক্ষক নিয়োগের জন্য আমাদের একটা আলাদা বডি থাকা উচিত। শিক্ষকদের জন্য একটা স্বতন্ত্র বেতন স্কেল থাকা উচিত।
কলেজের শিক্ষক হওয়ার জন্য ন্যূনতম মাস্টার্স পাশ থাকা আবশ্যকতো বটেই। নিয়োগ প্রক্রিয়া এমন হওয়া উচিত যে, কারো পিএইচডি থাকলে সরাসরি সহকারী অধ্যাপক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া। তুলনাটা পাশের কলকাতা শহরের কলেজের শিক্ষকদের সাথেই করলাম, যেখানে বাসা ভাড়া থেকে শুরু করে সব কিছুর দাম বাংলাদেশ থেকে কম।
লেখক: অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
(ফেসবুক থেকে নেওয়া)