ফাঁস হওয়া প্রশ্নে ৫ মেডিকেলে ভর্তি ১২০ শিক্ষার্থী

প্রশ্ন ফাঁস
প্রশ্ন ফাঁস  © ফাইল ফটো

ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়ে প্রথম সারির পাঁচটি মেডিকেল কলেজে প্রায় ১২০ জন ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। ২০০৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন বছরে এ প্রশ্ন ফাঁস হয়। 

জানা গেছে, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ৪০, খুলনা মেডিকেল কলেজে ২০, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ২৫, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ২০ ও রংপুর মেডিকেল কলেজের ১৫ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের  চিহ্নিত করেছে সিআইডি। একাধিক অভিযুক্তকে রাখা হয়েছে নজরদারিতে।

সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মেডিকেলের প্রশ্নফাঁসে জড়িত চক্রের ৩২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ, উদ্ধার হওয়া ব্যাংক চেক, ডিজিটাল আলামত বিশ্লেষণ করে এই শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে তথ্য পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তিদের মধ্যে ১২ জন চিকিৎসক রয়েছেন। 

জানতে চাইলে সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মেডিকেলের প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সঙ্গে যারা সরাসরি জড়িত, তাদের প্রথম টার্গেট করা হয়েছে। তাদের আইনের আওতায় আনার পর জিজ্ঞাসাবাদ, জবানবন্দি ও তদন্তে আরও যাদের নাম পাওয়া যাবে সবাই আইনের আওতায় আসবে।’ 

তালিকায় থাকা খুলনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে খুলনার আশিকুজ্জামান সানি ভর্তি হয়েছিলেন ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে। মেধা তালিকায় তিনি হয়েছিলেন ৬০১তম; কিন্তু ২০২২ সালের মে মাসে চূড়ান্ত প্রফেশনাল পরীক্ষায় ফেল করেন তিনি। এরপর আর পরীক্ষার টেবিলে বসেননি।

২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে মেধা তালিকায় ১১তম হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন পিরোজপুরের মুসতাহিন হাসান লামিয়া। তিনি ২০১৭ সালে প্রথম প্রফেশনাল পরীক্ষায়  অ্যানাটমি ও ফিজিওলজিতে ফেল করেন। দ্বিতীয় প্রফেশনাল পরীক্ষায় মেডিসিনে ফেল করেন। তবে ২০২১ সালে চূড়ান্ত প্রফেশনাল পরীক্ষায় পাস করেন। 

খুলনার আনিকা তাহসিন জেসি ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে মেধা তালিকায় ১৮২৩তম হয়ে ভর্তি হন। ২০২০ সালের নভেম্বরে পাস করেন তিনি। খুলনার শর্মিষ্ঠা মণ্ডল ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ১৮২৩তম হয়ে ভর্তি হন। পাস করেছেন ২০২২ সালে। খুলনার আসমাউল হুসনা নিহা ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ২২৪১তম হয়ে ভর্তি হন। পাস করেছেন ২০২২ সালে। 

খুলনার নূরে মার্জিয়া ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ২১১০তম হয়ে ভর্তি হন। ২০২০ সালে তিনি চূড়ান্ত প্রফেশনাল পরীক্ষায় পাস করেন। যশোর সদরের ফারিহা ইসলাম ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন। পাস করেছেন ২০২১ সালে  খুলনার রেমী মণ্ডল ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়ে পাস করেছেন ২০২১ সালের নভেম্বরে। খুলনার নাজিয়া মেহজাবীন ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ১৩৫৬তম হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। পাস করেছেন ২০২১ সালের মে মাসে। খুলনার মো. সোহানুর রহমান বিশ্বাস ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন। মেধা তালিকায় তিনি ছিলেন ২১৯৫তম। ২০২২ সালের মে মাসে চূড়ান্ত প্রফেশনাল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফেল করেন। গত নভেম্বরে আবার পরীক্ষা দিয়েছেন। ফল এখনো প্রকাশ হয়নি। রাজশাহীর আরাফাত হোসেন ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ২০৯২তম হয়ে ভর্তি হন। ২০২২ সালের চূড়ান্ত প্রফেশনাল পরীক্ষায় ফেল করেন। নভেম্বরে আবার পরীক্ষা দিয়েছেন। তার পরীক্ষার ফলও প্রকাশ হয়নি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া ১১ জনের মধ্যে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ফয়সাল আহমেদ রাসেলের রোল নম্বর ছিল ১১। চূড়ান্ত প্রফেশনাল পরীক্ষায় পাস করেছেন ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে। ফাঁস হওয়া প্রশ্নে চিকিৎসক হয়ে বর্তমানে তিনি দিনাজপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। 

২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী আসমা উল হুসনা মোনালিসা তৃতীয় প্রফেশনাল পরীক্ষায় গত মে মাসে অংশ নিয়েছেন। ফল প্রকাশ হয়নি এখনো। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহনাজ জেসমিন জিনিয়া। তিনি চূড়ান্ত প্রফেশনাল পরীক্ষায় ২০২২ সালের মে মাসে পাস করেছেন। মাদারীপুরের মিরাজ আহমেদ ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। চূড়ান্ত প্রফেশনাল পরীক্ষায় পাস করেছেন ২০২১ সালের মে মাসে। মুন্সীগঞ্জের ইসরাত জাহান ঈশিতা ভর্তি হয়েছিলেন ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে। তিনি পাস করেছেন ২০২০ সালের। দিনাজপুরের মোছা. সাবরিনা আক্তার সুমী ভর্তি হয়েছিলেন ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে। তিনি পাস করেছেন ২০২০ সালের। কুষ্টিয়ার মোহ. তানভীর রহমান সবুজ ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি পাস করেছেন ২০২১ সালে। নড়াইলের জেসিয়া জুঁই ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়ে পাস করেছেন ২০২০ সালের নভেম্বরে। খুলনার মুর্শিদা মুস্তারীন ফাইজা ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়ে পাস করেছেন ২০২২ সালে। খুলনার মেহনাফ মোস্তারিন মালিহা ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়ে পাস করেছেন ২০২১ সালের মে মাসে। যশোরের সাদীয়া পার্শিয়া ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েছিলেন। চূড়ান্ত প্রফেশনাল পরীক্ষা দিয়েছেন ২০২৩ সালের মে মাসে। ফল এখনো প্রকাশ হয়নি।

মুর্শিদা মুস্তারীন ফাইজা ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়ে পাস করেছেন ২০২২ । খুলনার মেহনাফ মোস্তারিন মালিহা ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়ে পাস করেছেন ২০২১ সালের মে মাসে। যশোরের সাদীয়া পার্শিয়া ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েছিলেন। চূড়ান্ত প্রফেশনাল পরীক্ষা দিয়েছেন ২০২৩ সালের মে মাসে। ফল এখনো প্রকাশ হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ