আন্তঃশিক্ষাবোর্ডের আদলে কওমী মাদ্রাসায় আন্তঃবেফাক কমিটি গঠনের দাবি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৪:৫২ PM , আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ১১:০২ PM

দৈনিক নয়া দিগন্তের সিনিয়র সাব এডিটর ও দারুর রাশাদ মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক মাওলানা লিয়াকত আলী বলেছেন, ‘কওমী মাদ্রাসাগুলোর ঐক্য, সংহতি ও তদারকির জন্য ছয়টি বেফাক বা বোর্ড রয়েছে। সারা দেশে যে কওমী মাদ্রাসাগুলো রয়েছে এগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতেই একটি বোর্ড গঠিত হয়েছে এবং পরিচালিত হচ্ছে। তবে সাধারণ শিক্ষার জন্য যেমন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড রয়েছে, তেমন কওমী মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য আন্তঃবেফাক গঠন করা জরুরি।
বুধবার (১৯ মার্চ) বিকেলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষার অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারের চতুর্থ সেশনে কওমী মাদ্রাসার সার্বিক চিত্র ও করণীয় মোকাবেলায় এক প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
আরো পড়ুন: ‘গ্রামের মাদ্রাসাগুলোতে ছেলের তুলনায় মেয়ে শিক্ষার্থী বেশি’
মাওলানা লিয়াকত আলী প্রবন্ধে বলেন, ‘কওমী মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য সবচেয়ে বড় বোর্ড হলো ‘ঢাকা বেফাক’। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ও সারা দেশের মাদ্রাসা এই বেফাকের অধীনে নিবন্ধীত। এ ছাড়াও আরো পাঁচটি বোর্ড রয়েছে, যা অনেকটাই অঞ্চলভিত্তিক। যেমন গওহারডাঙ্গা ভিত্তিক (বেফাকুল মাদারিসিল কওমীয়া) বোর্ডের অধীনে ওই অঞ্চলের মাদ্রাসাগুলো নিবন্ধীত।
চট্টগ্রামের ইত্তেহাদুল মাদারিসিল কওমীয়া, সিলেটের আযাদ দ্বীনী এদারা, উত্তরবঙ্গের তানযীমুল মাদারিসিল কওমীয়া ও ময়মনসিংহের ইত্তেফাকুল মাদারিস। এ কমিটিগুলো আলাদাভাবে কাজ করে থাকে। তাই সবগুলোকে নিয়ে একটি আন্তঃবেফাক কমিটি গঠন করা যেতে পারে। যেভাবে আমাদের দেশের সাধারণ শিক্ষার জন্য যে বোর্ডগুলো রয়েছে সেগুলোতে ‘আন্তঃশিক্ষাবোর্ড’ নামে একটি কমিটি আছে।’
আরো পড়ুন: ‘মাদ্রাসার প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি হয়ে থাকে’
প্রবন্ধে তিনি বলেন, ‘সারা দেশের স্কুল কলেজে অভিন্ন সিলেবাস ঠিক রাখা, একই সময়ে একই নিয়মে পরীক্ষা নেয়াসহ স্কুল-কলেজের গুণগত মান ঠিক রাখতে ‘আন্তঃশিক্ষাবোর্ড’ যেভাবে এক জায়গায় বসে চিন্তা করে বা কাজ করে থাকে। এ ছাড়াও এ আন্তঃশিক্ষাবোর্ড আলাদা আলাদাভাবে কাজ বাস্তবায়ন করে থাকে। কিন্তু সম্মিলিতভাবে সবাই চিন্তা করে। তেমনি কওমী মাদ্রাসাগুলোর জন্য জরুরি একটি ‘আন্তঃবেফাক’ কমিটি করা। যাতে এসব নিয়ে চিন্তাভাবনা করা যায়।
প্রবন্ধে তিনি আরো বলেন, ‘এখন অটোমেটিক একটি ‘আন্তঃবেফাক’ কমিটি হয়ে গেছে। তা হলো ‘আল হাইয়াতুল উলইয়া'। এটাকে আন্তঃবেফাক কমিটি হিসেবে কাজে লাগানো যেতে পারে। কেননা এখানে সব কওমী বোর্ডের প্রতিনিধি রয়েছেন। তাছাড়া হাইয়াতুল উলয়ার দায়িত্বশীলেরা দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম। তারা একত্র হয়ে যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলে তা সবার পাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে।’
সেমিনারের চতুর্থ সেশনে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ ড. মুহাম্মদ আবু ইউসুফ খান। এ ছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।