মানুষের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়ে বাংলা ভাষা শিখতে শুরু করেছি
উগান্ডা থেকে বাংলাদেশে পড়তে এসেছেন আবদুল্লাহ। তিনি বর্তমানে ওআইসির সরাসরি তত্ত্বাবধায়নে পরিচালিত ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে (আইইউটি) পড়াশোনা করছেন। তার বাংলাদেশে পড়তে আসা এবং দুই দেশের শিক্ষাব্যবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। তার কথাগুলো শুনেছেন আইইউটি প্রতিনিধি তাওফিকুল ইসলাম হিমেল—
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার শৈশব সম্পর্কে জানতে চাই
আবদুল্লাহ: আমি উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় বেড়ে উঠেছি। আমার বাবার নাম আব্দুল রাজ্জাক কুলুম্বা এবং মার নাম মদিনা নাকাকান্দে। আমারা ৮ ভাইবোন আমার আরো ৩ বোন এবং ৪ ভাই রয়েছে। আমি আমার বাবা-মায়ের ৭ম সন্তান। আমি আমার প্রাথমিক পড়াশুনা করেছি একটি ইসলামিক স্কুলে যেখানে আমাদের ইংরেজি এবং আরবি সিলেবাস ছিল।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার বাংলাদেশে আসার পেছনের গল্প কি
আবদুল্লাহ: আমার এডভান্স মাধ্যমিক লেভেল শেষ করার পর পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং গণিতের (পিসিএম) জন্য আমি ভর্তি হয়েছিলাম টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। যেটি সর্বোচ্চ র্যাংকিং-এ থাকা আমার দেশর মেকেরের বিশ্ববিদ্যালয়।
আরও পড়ুন: ‘বাংলাদেশিদের বেশি মনোযোগ টাকা আয়ে, নিজের দিকে নয়’
তবে আমার শিক্ষক আমাকে জোর দিয়েছিলেন বিদেশে আবেদন করতে। যাতে আমি বিদেশ থেকে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করি। যেহেতু উগান্ডা ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার একটি (ওআইসি)-এর সদস্য রাষ্ট্র তাই আমি বাংলাদেশে অবস্থিত ওআইসির IUT-তে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) জন্য আবেদন করি এবং সফল হই।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আইইউটিতে আপনার অবস্থান কি?
আবদুল্লাহ: আগের প্রশ্নে বলেছি IUT-তে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথে আমাকে প্রস্তুতি শুরু করতে হয়েছিল। বাংলাদেশ সফরের জন্য এবং সৌভাগ্যক্রমে সেটি হয়ে যায়। এই মুহূর্তে আমি আইইউটির ইইই বিভাগের ২য় বর্ষে পড়াশোনা করছি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কি?
আবদুল্লাহ: মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ একটি সুন্দর দেশ। এদেশের মানুষ অনেক অতিথি পরায়ণ। এর জন্য আমিও বাংলা সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ থেকে বাংলা ভাষা শিখতে শুরু করেছি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বাংলাদেশে আপনি কি ধরনের জিনিস পছন্দ করেন?
আবদুল্লাহ: বাংলাদেশ অনেক সুন্দর একটি দেশ। নান্দনিক বৈশিষ্ট্য যেমন নদী, হ্রদ, পর্বত এবং সকলের মধ্যে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত রয়েছে এদেশে। আমি অনেক রোমাঞ্চকর স্থান পরিদর্শন করেছি এদেশের। যেমন কক্সবাজার, চট্টগ্রামসহ অন্যান্য স্থানে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনি বাংলাদেশের কোন ধরনের জিনিস অপছন্দ করেন?
আবদুল্লাহ: মশলাদার খাবার এবং মরিচের ঝালে আমার খুব অসুবিধা হয়। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে
এটাতে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি আমি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: উগান্ডা এবং বাংলাদেশের মধ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার পার্থক্য কি?
আবদুল্লাহ: দুই দেশের শিক্ষাব্যবস্থার কিছু ভিন্নতা রয়েছে। যেমন উগান্ডায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি করা হয় উচ্চ মাধ্যমিকে একজন শিক্ষার্থীর পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে। যেখানে বাংলাদেশে ভর্তি করা হচ্ছে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার দেশে চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া কেমন
আবদুল্লাহ: উগান্ডায় সরকারি চাকরি পাওয়া বেশ প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়া। চাকরি পাওয়ার জন্য আপনার নথিপত্র (বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কর্মক্ষমতা) একটি বড় ভূমিকা পালন করে। সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেশি পায়। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের সহকর্মীদের তুলনায় সুযোগ কম সরকারি চাকরির জন্য।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার স্নাতক শেষ করার পর আপনার পরিকল্পনা কি?
আবদুল্লাহ: আমার স্নাতকের পর আমি বিদেশে আরও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই।