উত্তর আমেরিকার আদলে চলছে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি

অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম
অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম  © টিডিসি ফটো

কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ দেশের উদীয়মান একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১৬-তে এর যাত্রা শুরু হয়। পড়াশোনায় উৎসাহ দিতে শিক্ষার্থীদের জন্য এখানে বৃত্তির সুযোগ আছে। কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত আছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসারে সাজানো হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম।

বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ-এর উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োজিত আছেন অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম। একইসঙ্গে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন হিসেবে কর্মরত। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার মান এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে তার মুখোমুখি হয়েছে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শিহাব উদ্দিন-


দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন বিষয়ের জন্য প্রসিদ্ধ। কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় কোন বিষয়ের জন্য প্রসিদ্ধ বলে আপনি মনে করেন?

অধ্যাপক নজরুল: আমরা সব বিষয়ের দিকেই সমানভাবে গুরুত্ব দিচ্ছি। তবে বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা শাখা অনুষদ অনেক ভাল মানের। এমবিএ প্রোগ্রামের জন্যও অনেক শিক্ষার্থী এখানে ভর্তি হয়। এছাড়া আমাদের কম্পিউটার সাইন্স অনেক ভাল প্রোগ্রাম। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহফুজুল ইসলাম। উনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কম্পিউটার সাইন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার তত্ত্বাবধানে কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগ অনেক ভাল করছে। এছাড়া আমাদের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক বিভাগও অনেক ভাল করছে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আমাদের দেশে ১০৩টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। অনেকে অভিযোগ করেন অধিকাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ভাল না। এই বিষয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কি?

অধ্যাপক নজরুল: আসলে কোন বিশ্ববিদ্যালয় তো চায়না তাদের শিক্ষার মান খারাপ হোক। কিন্তু বাস্তবে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় তাদের শিক্ষার মান হয়তো ধরে রাখতে পারে না। এর কারণ হিসেবে বলব সীমিত সুযোগের কথা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যথাযথ সুযোগ-সুবিধা পায় না তাই হয়তো কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মান কিছুটা কম। আরেকটি কারণ হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অভিজ্ঞ এবং আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষক পায়না, যার ফলে সে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মান তুলনামূলক-ভাবে কম। এছাড়া ১০৩ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় যে প্রথম শ্রেণীর হবে এমন কোন কথা নেই। আপনি উন্নত বিশ্বের মধ্যে গিয়ে দেখেন সে দেশের সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের মান কিন্তু এক না।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা না শিক্ষার মান কোনটি বেশি জরুরি বলে আপনি মনে করেন?

অধ্যাপক নজরুল: আসলে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে দু’টোই দরকার আছে। কেননা শিক্ষার্থী কম হলে আপনি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবেন না। আপনি অর্থসংকটে ভুগবেন। আপনি জানেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ভালো শিক্ষকের বেতন অনেক উচ্চ মানের হয়। তাদেরকে বেতন দিতে হলেও অন্তত পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি করানো প্রয়োজন।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অভিযোগ করেন, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের (বিওটি) হস্তক্ষেপে তারা মুক্তভাবে কাজ করতে পারেন না। আপনার অভিজ্ঞতা কি?

অধ্যাপক নজরুল: আসলে দেখেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজ কি চায়? তাদের উদ্দেশ্য কিন্তু একটিই। আর সেটি হল বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এত বড় যায়গায় ছোটখাটো দুই-একটি বিষয়ে ঝামেলা থাকতেই পারে। তার মানে এই না যে, সব বিষয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকে। আমি আপনার এই প্রশ্নের সাথে একমত হতে পারছিনা যারা বিওটির হস্তক্ষেপের বিষয়টি নিয়ে আসেন এটি তাদের ব্যর্থতা।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় কি ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে থাকে?

অধ্যাপক নজরুল: একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান অনেকাংশেই নির্ভর করে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর। আমরা শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অনেকগুলো ধাপ অনুসরণ করে থাকি। আমরা প্রথমে দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকি। এরপর যারা আবেদন করেন তাদের আমরা একটি লিখিত পরীক্ষা নেই। লিখিত পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হন তাদের আমরা মৌখিক পরীক্ষা নেই। মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের আমরা ডেমো ক্লাস নিতে বলি। ডেমো ক্লাসের মাধ্যমে আসলে সেই শিক্ষক কতটা পারদর্শী সেটি সামনে চলে আসে। এর পরে তাদেরকে নিয়োগ দিয়ে থাকি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: উচ্চশিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও তা পাঠদানের মাধ্যমে বিতরণ। যদিও অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ই পাঠদানে সীমাবদ্ধ। গবেষণায় আপনারা কেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন?

অধ্যাপক নজরুল: একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি গবেষণার সুযোগ কিংবা কালচার না থাকে তাহলে সেই বিশ্ববিদ্যালয় কখনোই নতুন জ্ঞান তৈরি করতে পারে না। নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করতে না পারলে শিক্ষার্থীদের নতুন কিছু শেখানো কোনভাবেই সম্ভব না। আমাদের এখানে যারা শিক্ষক হিসেবে আছেন তারা প্রত্যেকেই কোন না কোন গবেষণা কাজের সাথে সম্পৃক্ত এবং একজন শিক্ষকের একাধিক গবেষণা কাজ রয়েছে। আমাদের শিক্ষকদের গবেষণা নিয়মিত ছাপা হচ্ছে। আপনারা জানেন যে আমি নিজেও অসংখ্য আর্টিকেল লিখেছি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে যারা জানতে চায়, সেসব শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন...

অধ্যাপক নজরুল: সবাই এখন গ্লোবাল ভিলেজে বসবাস করি। এই গ্লোবাল ভিলেজে বসবাসের জন্য একজন শিক্ষার্থীকে কি কি করতে হবে তা আমরা শিক্ষা দিয়ে থাকি। আমরা শুধু তাত্ত্বিক লেখাপড়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ না আমরা ব্যবহারিক শিক্ষার উপরও সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আমি অভিভাবকদের বলব আপনাদের ছেলে-মেয়েকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করান। এখানে গবেষণা এবং লেখাপড়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। আমরা আপনার সন্তানকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে বদ্ধপরিকর।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এতক্ষণ মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।

অধ্যাপক নজরুল: আপনাকেও ধন্যবাদ।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence