আগে নাস্তিক্যবাদের আখড়া ছিল, এখন নারায়ে তাকবির ধ্বনি শোনা যায়: শাহবাগে সাঈদী পুত্র
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৭:১০ PM , আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৫:০৫ PM

জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মেজো ছেলে শামীম বিন সাঈদী বলেছেন, ‘একটা সময় ছিল, এই শাহবাগে নাস্তিক্যবাদের আখড়া ছিল। একটা সময় ছিল, নাস্তিকরা এখানে এসে স্লোগান দিতো। আর এখন আমরা এখানে শুনলাম, নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার। নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার সারা বাংলায় উঠবে। যারা এই স্লোগানের বিরুদ্ধে যায়, তারা বেশিদিনের জন্য এই দেশের মাটিতে থাকতে পারে না। এদেশ নাস্তিক্যবাদের দেশ নয়, যারা ধর্মকে ব্যবহার করে, ধর্মকে পুঁজি করে এসেছে তারাই বরঞ্চ থাকতে পারে নাই।’
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘হাসিনার ক্যাঙারু ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ২০১৩ সালে শাহবাগীদের চক্রান্ত থেকে জুলাই বিপ্লব পর্যন্ত ফ্যাসিস্টের হাতে শাহাদাত বরণ করা সব শহিদের রুহের মাগফিরাত কামনায়’ অনুষ্ঠিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ধর্মকে নিয়ে পুঁজি করি না, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করি না, স্পষ্ট কথা আমরা ধর্মের রাজনীতি করি। সাংবাদিক ভাইয়েরা কথাটি স্পষ্ট শুনে নেন, আমরা ধর্মের রাজনীতি করি, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করিন না। সময় আসলে আমরা মাথায় পট্টি লাগাই না, আর ভোটের সময় আসলে হাতে তসবীহ নেই না। আমরা টুপি মাথায় দেই, সবসময় দেই। নামাজের ওয়াক্তে মসজিদের যাই। আর বলি না, তাহাজ্জুদের ওয়াক্তে উঠি আর ফজরের নামাজের আগে কোরআন পড়ি।’
শামীম বিন সাঈদী বলেন, ‘যারা গণভবনে গিয়েছেন, তারা অনেকে জায়নামাজ খুঁজেছেন কিন্তু পায় নি। জায়নামাজের বদৌলতে বড় বড় কাচের বোতল পাওয়া গেছে। কাজেই এই বাংলাদেশ নব্বই ভাগ মুসলমানের দেশ, নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার হবেই এবং হতেই হবে। তবে এই বাংলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, হাজারো বছরের ঐতিহ্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে আমরা চলেছি। আমরা মাইনরিটি বলি না, আমরা খ্রিষ্টানকে মাইনরিটি বলি না, আমরা হিন্দুকে মাইনরিটি বলি না। আমরা বলি, আমরা সকলে বাংলাদেশি। আগামীতেও তারা আমাদের সাথে কাঁধে কাধ মিলিয়ে, কদমে কদম মিলিয়ে চলব ইনশা-আল্লাহ! বাংলাদেশি হিসেবে। তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের প্রয়োজন হবে না।
তিনি বলেন, ‘সময় আসতেছে, আমরা একসাথে কাজ করব। এদেশকে আমাদের মুরুব্বিরা সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য জীবন দিয়েছেন। আজকে ৫৩/৫৪ বছর ধরে সোনার বাংলা গড়তে পারেনি তারা। কিন্তু সময় আসবে, এই দেশেই সোনার বাংলা গড়ার মতন তরুণেরা, ছাত্র-জনতারা, বিশেষ করে মুরুব্বিয়ান যারা এই দেশকে প্রকৃত অর্থেই ভালোবাসে তারা এগিয়ে এসেছে। আর যারা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির কথা বলত, রাজাকারের তকমা লাগাতো তারা বাংলাদেশে থাকতে পারে নি, থাকতে পারবেও না, থাকার কোন সুযোগ নেই।’
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর উদ্ধৃতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের মনে আছে, আল্লামা সাঈদি বলেছিলেন, আমাদেরকে বলো মৌলবাদী, আমরা হলাম মূলবাদী। মূলবাদী কারা? যারা কোরআনের সাথে থাকে, ইসলামের সাথে থাকে, যারা দেশের স্বপক্ষে থাকে, তারাই মূলবাদী। আর তোমরা হইলা আগাবাদী, আগাবাদী কারা? যারা দেশের পক্ষে থাকে না, যারা সময়ে তসবীহ টিপে, আর মাথার উপরে পট্টি পড়ে, তারাই হলো আগাবাদী। বাংলাদেশে বেশি বাড়াবাড়ি করবা না, যদি বেশি বাড়াবাড়ি করো তাহলে ১২ কোটি মুসলমান গোড়া থেকে ঝাঁকি মারবে, যাবে কোথায়...।’
তিনি বলেন, ‘আল্লামা সাঈদীকে বলা হয়েছিল রাজাকার, তিনি (সাঈদী) বলেছিলেন, কোন বৈধ পিতার সন্তান আমাকে রাজাকার বলতে পারে না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, শেখের বেটি পালায় না। কিন্তু শেখের বেটি ঠিকই পালিয়েছে। প্রমাণ করেছেন, আল্লামা সাঈদী বলেছিলেন, যারা আমাকে রাজাকার বলে, তারা অবৈধ পিতার অবৈধ সন্তান। কাজেই প্রমাণ হয়ে গেছে, কোনটা বৈধ আর কোনটা অবৈধ। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র আমরা মেনে নেব না। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোন ধরনের চক্রান্ত আমরা মেনে নেব না। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ধর্মীয় কোন চক্রান্ত আমরা মেনে নেব না। এই শাহবাগ থেকেই আমরা জানাতে চাই, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে একটি ইনসাফভিত্তিক কল্যাণময় রাষ্ট্রগঠন করব ইনশা-আল্লাহ।’