সাত কলেজ নিয়ে স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে

অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক
অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক  © টিডিসি ফটো

অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক একজন শিক্ষাবিদ। তিনি ২০০৯–২০১৭ সালে পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার মেয়াদকালে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘসময়ের পরও যেসব লক্ষ্য–উদ্দেশ্য নিয়ে কলেজগুলোকে ঢাবি অধিভুক্ত করা হয়েছে– সেটি অর্জন সম্ভব হয়নি। তাই শিক্ষার্থীরা এখন অধিভুক্তি বাতিল চাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের এ দাবি ও সাত কলেজ নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের মুখোমুখি হয়েছেন ঢাবির সাবেক এই উপাচার্য। তার কথাগুলো শুনেছেন ইলিয়াস শান্ত—

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন, তখন রাজধানীর সাতটি কলেজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়ে ঢাবি অধিভুক্ত করা হয়। সেসময় কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল?

ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক: রাজধানী ঢাকার এ সাতটি কলেজ অনেক ঐতিহ্যবাহী। এ কলেজগুলোর গৌরবোজ্জ্বল অতীত রয়েছে। শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন, দক্ষ–স্মার্ট ও কর্মমুখী গ্র্যাজুয়েট তৈরির লক্ষ্যে তৎকালীন সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে এসব কলেজগুলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্তি করা হয়।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: অধিভুক্তির পর আপনি এ কলেজগুলোকে কোন পর্যায়ে দেখতে চেয়েছিলেন?

ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক: বিশ্বের অনেক দেশে টিচিং ইউনিভার্সিটির সঙ্গে অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যুক্ত থাকে। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, করাচি বিশ্ববিদ্যালয়সহ পৃথিবীর বহু দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। টিচিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে যদি এ কলেজগুলোর পাঠ্যক্রম ও প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় পরীক্ষা মূল্যায়ন যুক্ত করা যায়, তবে শিক্ষার্থীদেরই যে উপকারে আসে তা নানা দেশেই পরীক্ষিত। এমনকি আমাদের দেশেও যখন কলেজগুলো টিচিং ইউনিভার্সিটির সঙ্গে ছিল তখনও আমরা তা প্রত্যক্ষ করেছি। কলেজ শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিগত ৮ বছরে সে লক্ষ্য কী অর্জন করা সম্ভব হয়েছে?

ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক: যেহেতু কলেজগুলোর অধিভুক্তির কয়েক মাস পরই আমি প্রশাসন থেকে বিদায় নিয়েছি, তাই এ বিষয়ে সর্বশেষ পরিস্থিতি আমার জানা নেই। বিগত বছরগুলোতে যারা প্রশাসনিক দায়িত্বে ছিলেন, তারাই হয়তো এ বিষয়ে বলতে পারবেন। এ ছাড়া কলেজগুলোর শিক্ষক–শিক্ষার্থী যারা প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত আছেন তারাও বর্তমান সমস্যা ও সমাধানের কথা বলতে পারবেন। তবে আমরা জানি দেশের কলেজে পড়ালেখা করা শিক্ষার্থীর একটা বড় সংখ্যা রয়েছে। যাদের শিক্ষা স্বার্থ আমাদের জাতীয় শিক্ষা চিন্তায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান পাবে, এটি আমার একান্ত প্রত্যাশা।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এ কলেজগুলোতে বর্তমানে বেশ সংকট চলছে। বিভাগভিত্তিক মানসম্পন্ন শিক্ষকের অভাব, গবেষণার সুযোগের অপ্রতুলতা, অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারের অনুপস্থিতি, শ্রেণিকক্ষের তীব্র সংকট, আবাসন সমস্যা, পরিবহণ সংকট। এসব সংকট সমাধানে আপনার কী পরামর্শ থাকবে?

ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক: এমন সংকট জিইয়ে রেখে শিক্ষার গুণগত মান আশা করা যায় না। কলেজগুলোতে বর্তমানে যেসব সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেগুলো সমাধান করে নিরবচ্ছিন্ন পাঠদানের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: অনেকে বলেন, ২০১৭ সালে যখন অধিভুক্ত করা হয় তখন কোনো কিছু বিচার বিশ্লেষণ না করেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে...

ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক: আমার জানা মতে, কলেজগুলোর শিক্ষা ও পরিচালনা ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে কী করা যায় এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নেতৃত্বে বিভিন্ন সময় কমপক্ষে দুটো কমিটি গঠিত হয়েছিল। কমিটিগুলোর পর্যবেক্ষণ ও মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত এ অধিভুক্তির পেছনের কারণ। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল চাচ্ছেন। আপনি এ বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক: হ্যাঁ, সেটা হতে পারে। শিক্ষার্থীরা চাইলে নতুন যেকোনো কিছু হতে পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষকমণ্ডলি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় যৌথভাবে আলাপ–আলোচনার মাধ্যমে যদি একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তবে তা হবে যুক্তিযুক্ত।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence